পবিত্র ধর্মকে হেয় করলে বরদাশত করব না: ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মাধ্যমে পবিত্র ধর্ম ইসলামকে হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে। পবিত্র ধর্মকে কেউ হেয় করবে এটা আমরা কখনও বরদাশত করব না।

তিনি জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস মোকাবিলায় কমিউনিটি পুলিশিং ও জেলা, উপজেলাসহ বিভিন্ন পর্যায়ে জঙ্গিবাদ বিরোধী কমিটিকে সক্রিয় থাকার পরামর্শ দেন। আজ দুপুরে গণভবন থেকে এক ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা গতকাল গণভবন থেকে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলতে তার উদ্যোগের অংশ হিসেবে ঢাকা ও ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ৩২ জেলার সরকারি কর্মকর্তা, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষকদের সঙ্গে এক ভিডিও কনফারেন্সে এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, যদি জঙ্গি কর্মকা- অব্যাহত থাকে তবে জাতিকে এর জন্য মূল্য দিতে হবে। জঙ্গি কর্মকা- আমাদের অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংস করবে এবং প্রতিদিনের জীবনযাত্রা হুমকির মধ্যে ফেলবে। তিনি আরো বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চাই। এখানে জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই। এই দুষ্টচক্রকে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মোকাবিলা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ইসলামের বদনাম করছে, এমন অশুভ শক্তির চক্রান্ত প্রতিহত করতে দেশের মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, তার সরকার বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের বীজ অঙ্কুরিত হতে দেবে না। একই সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্তানদের বিষয়ে মা-বাবাকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ছেলেমেয়েরা কোথায় যায়, কার সঙ্গে মেশে, তার খোঁজখবর নেবেন। তাদের প্রতি খেয়াল রাখবেন। জেলা প্রশাসকদেরও এ বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখার নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রতিককালের গুলশানের একটি রেস্তোরাঁয় এবং শোলাকিয়ার ঈদ জামাতে জঙ্গি হামলার কথা উল্লেখ করে বলেন, ইসলাম কখনও এ ধরনের বর্বর কর্মকা-কে সমর্থন করে না। ধর্মকে বিনষ্টের জন্য এটা তাদের ষড়যন্ত্র, কেননা ইসলাম সর্বদা শান্তি ও সৌহার্দ্যরে শিক্ষা দেয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ দেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ, কিন্তু ধর্মান্ধ নয়। কোনো জঙ্গির স্থান, সন্ত্রাসের স্থান বাংলাদেশে হবে না। তাই কেউ বিপথে পাঠাতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন প্রধানমন্ত্রী। এই অপশক্তির বিরুদ্ধে সমাজের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজ নিজ অবস্থান থেকে সবাইকে দেশ ও সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাবারও আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের জনগণ ধর্মভীরু, তাই বলে তারা উগ্রবাদী নয়। সুতরাং একটি ইংরেজি মাধ্যমে পড়–য়া বালক কী করে এ ধরনের উগ্রবাদের পক্ষে পা বাড়ায়?

শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন দেখে অনেকে ঈর্ষান্বিত হয়ে উঠেছে। দেশের এই অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করাও জঙ্গি হামলার একটা কারণ হতে পারে।