HSC পরীক্ষায় বিভ্রাট, মানববন্ধনে পরীক্ষার্থীরা অভিযোগ তপন কুমারের দিকে

এইচএসসির পদার্থবিজ্ঞান (সৃজনশীল) প্রথম পত্র পরীক্ষায় নির্ধারিত সময়ের ১৫ মিনিট আগেই কিশোরগঞ্জে পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র কর্তব্যরত পরিদর্শকেরা টেনে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, সোমবার অনুষ্ঠিত পদার্থবিজ্ঞান (সৃজনশীল) প্রথম পত্রের ৫০ নম্বরের পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত সময় ছিল দুই ঘন্টা ৩৫ মিনিট। কিন্তু প্রশ্নপত্রে দুই ঘন্টা ২০ মিনিট লেখা থাকার অজুহাতে ১৫ মিনিট আগেই তাদের উত্তরপত্র টেনে নেয়া হয়েছে।

নির্ধারিত সময়ের আগে উত্তরপত্র নিয়ে যাওয়ায় উত্তর জানা থাকা সত্ত্বেও কোন পরীক্ষার্থীই নির্ধারিত পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর লিখতে পারেনি। উত্তর লিখতে না পেরে বাড়ি ফিরে তারা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। যে পরীক্ষার্থীরা এ প্লাস কিংবা ভাল ফলাফলের আশা করেছিল, তারাও এখন ফল বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার সকালে শহরের সরকারি গুরুদয়াল কলেজের সামনে মানববন্ধন করে এর প্রতিকার দাবি করেছে পরীক্ষার্থীরা। সকাল ১১টা থেকে শুরু হওয়া ঘন্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধন কর্মসূচীতে জেলা শহরের বিভিন্ন কলেজের কয়েকশ’ পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এ সময় পরীক্ষার্থীরা ‘১৫ মিনিটের বলির শিকার আমরা কেন?’, ‘কর্তৃপক্ষের দায় নিবে কে? নিবে কে?’, ‘যেখানে এ প্লাস সেখানে কাঁদবো কেন আমরা?’ ইত্যাদি নানা স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড বহন করে। তারা অভিযোগ করেন  শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকারকারের দিকে। তাছাড়া তার পদত্যাগও দাবি করা হয়।

পরীক্ষার খাতায় পুরো প্রশ্নের উত্তর না দিতে পারার কষ্ট জানাতে গিয়ে মানববন্ধনে অনেক পরীক্ষার্থীই কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। গুরুদয়াল কলেজের পরীক্ষার্থী  ‍মুহম্মদ রবিউল্লাহ কাঁদতে কাঁদতে বললো, ‘আমার এসএসসিতে জিপিএ-৫ ছিলো। এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পাওয়ার আশা করেছিলাম। সে রকমভাবে প্রস্তুতিও নিয়েছিলাম। কিন্তু প্রশ্নপত্রে লেখা ভুল সময় কেড়ে নিয়েছে আমার স্বপ্ন। ৫০ নম্বরের পরীক্ষার মধ্যে মাত্র ৩৫ নম্বরের উত্তর দিতে পেরেছি আমি।’

আর হতাশা নিয়ে মানববন্ধনে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছে উল্লেখ করে এসব পরীক্ষার্থীদের দাবি, তাদের এই হতাশা থেকে বাঁচাতে অবিলম্বে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। তারা জানিয়েছে, কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের সরকারি গুরুদয়াল কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, ওয়ালিনেওয়াজ খান কলেজ, পৌর মহিলা কলেজ ও মডেল কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের সহস্রাধিক পরীক্ষার্থীর একই অবস্থা।

এদিকে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত দেয়া এক বক্তব্যে বলেছেন, পদার্থবিজ্ঞানের পরীক্ষার সময় দুই ঘণ্টা ৩৫ মিনিট। কিন্তু প্রশ্নপত্রের মডারেটর বা সেটারের ভুলের কারণে সময়টা দুই ঘণ্টা ২০ মিনিট লেখা হয়েছে। বিষয়টি জানার পর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সব কেন্দ্র সচিবকে মুঠোফোনে বার্তা পাঠিয়ে দুই ঘণ্টা ৩৫ মিনিট পরীক্ষা নিতে বলা হয়।

তবে সরকারি গুরুদয়াল কলেজের কেন্দ্রসচিব ও অধ্যক্ষ রাম চন্দ্র রায় বোর্ড থেকে এ সংক্রান্ত কোন নির্দেশনা পাননি উল্লেখ করে মানবজমিনকে বলেন, কোন নির্দেশনা না পাওয়ায় প্রশ্নপত্রে উল্লেখিত সময়ের বাইরে যাওয়ার আমাদের কোন সুযোগ ছিল না।