আমেরিকায় চলতি বছর বন্দুক হামলা ২৭হাজার, মৃত্যু ৭ হাজার

ডেস্ক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলার ঘটনায় চলতি বছর বন্দুক হামলার নাশকতার ঘটনা ঘটেছে ২৭ হাজার ৫শ’ পচাত্তর বার। দেশটিতে বন্দুক হামলা বা গুলাগুলির ঘটনা এতোটা ভয়াবহ যে প্রায় প্রতিদিনই গুলিতে নিহতের খবর পাওয়া যায় গণমাধ্যমে। এমনকি প্রতি ৭২ ঘন্টায় কয়টি বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটে এবং কতজন মারা যায় শুধু এই হিসাব করার জন্য আলাদা জরিপ সংস্থাও আছে আমেরিকায়।

দেশটির ওয়াশিংটন থেকে প্রকাশিত Gun Violence Archive নামক জরিপ সংস্থার তথ্যানুযায়ী চলতি বছরেই (১০ জুন ২০১৬ পর্যন্ত) গুলির যে ঘটনাগুলো ঘটেছে তার সংক্ষিপ্ত চিত্র এখানে তুলে ধরা হলো-
[list icon=”momizat-icon-radio-checked” icon_color=”#0c367a” icon_color_hover=”#23dbdb” icon_size=”13″ margin_top=”2″ margin_bottom=”2″ ]বন্দুক হামলা বা গুলাগুলির ঘটনা ঘটেছে ২৭৫৭৫টি,আবাসিক ভবনে বন্দুক হামলা ১১৬৫টি,গণসমাবেশে বন্দুক হামলা ১৭৯টি,এসব ঘটনায় মারা গেছে ৭১৮৭ জন,আহত হয়েছে ১৪৮১৩ জন,বন্দুকের গুলিতে ১১ বছরের নিচে শিশু হত্যা হয়েছে ৩১৯টি,সন্ত্রাসীর গুলিতে পুলিশ অফিসার নিহত ১৭২জন,পুলিশের গুলিতে সন্ত্রাসী নিহত ৯৬৫জন[/list]

Gun Violence Archive (GVA)-এর ওয়েবসাইটে উল্লেখিত রয়েছে শতভাগ গুলি হামলার ঘটনা এখানে নেই অর্থাৎ এর বাইরেও অনেক ঘটনা ঘটছে।

এছাড়াও বিবিসি’র প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, ২০১৫ সালে বড় ধরণের বন্দুক হামলার ঘটনা (Mass Shooting) ঘটে ৩৭২টি। ওই বছর গুলিতে মৃত্যু হয় ৪৭৫ জনের, আহত হয় ১৮৭০ জন। স্কুলে বন্দুক হামলা হয় ৬৪ বার। আমেরিকায় ২০১৫ সালে আগ্নেয়াস্ত্রের গুলিতে নিহতের সংখ্যা ১৩,২৮৬ জন।

গত ১২ জুন (২০১৬) যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা রাজ্যের অরল্যান্ডোয় সমকামীদের একটি নাইট ক্লাবে হামলায় ৫০ জন নিহত হয়েছে। এটি মার্কিন ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ম্যাস শুটিং (বন্দুকের মাধ্যমে গণহত্যা) বলা হয়। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সান জিদ্রোতে ১৯৮৪ সালে ২১ জন, টেক্সাসের কিল্লেনে ১৯৯১ সালে ৩২ জন, ২০০৭ সালে ভার্জিনিয়া টেকে ২৩ জন, ২০১২ সালে নিউটাউনের কনে ২৭ জন নিহত হয়েছে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর বন্দুক সহিংসতায় মারা যায় ৩৩ হাজার মানুষ।

উল্লেখ্য, গত বছর (২০১৫) যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগণ অঙ্গরাজ্যে উম্পকুয়া কমিউনিটি কলেজে বন্দুকধারীর গুলিতে ৯ শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জাতির উদ্দেশ্যে এক ভাষণে অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেছেন, “কিছুদিন পর পরই গুলিতে গণহত্যার ঘটনা ‘নৈমিত্তিক’ হয়ে গেছে। কিন্তু তা রোধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারিনি আমরা।”

ওবামা তার ভাষণে অপারগতা স্বীকার করে বলেছেন, “বন্দুকধারীর গুলিতে গণহত্যা এড়াতে আমি ব্যর্থ হয়েছি। দুই দুই বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় থাকার পরও আমি অস্ত্র আইন সংশোধন করতে পারিনি। কংগ্রেসে রিপাবলিকান এমনকি ডেমোক্রেটদেরও এ ব্যাপারে বিরোধিতা রয়েছে, যে কারণে আইন সংশোধনের উদ্যোগ বার বার ভেস্তে গেছে। এখন এ জন্য জনগণকে জাগতে বলছেন তিনি।”

সূত্র: Gun Violence Archive, বিবিসি (ইউএস-কানাডা)