যে ষড়যন্ত্র ফাঁস করে প্রশংসায় ভাসছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
ঢাকা : গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার দেশের একটি অংশকে খ্রিস্টান রাষ্ট্র বানানোর ষড়যন্ত্র প্রকাশ করলেন। প্রধানমন্ত্রীর এমন একটি বক্তব্য দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রসংশিত হয়।
অনেকেই শেখ হাসিনার এই বক্তব্যটি শেয়ার করে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সেই সাথে তারা এবিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে অতিদ্রুত কঠোর পদক্ষেপ কামনা করেছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে সরকারী বাসভবন গণভবনে ১৪ দলের বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের একটা অংশ নিয়ে খ্রিস্টান রাষ্ট্র বানানোর চক্রান্ত চলছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,
‘ফিলিস্তিনের মতো বাংলাদেশের একটা অংশ চট্টগ্রাম, মিয়ানমার নিয়ে খ্রিস্টান স্টেট (রাষ্ট্র) বানাবে। বে অফ বেঙ্গলে (বঙ্গপোসাগরে) একটা ঘাঁটি করবে। তাঁর কারণ হচ্ছে বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরে প্রাচীন কাল থেকেই ব্যবসা বাণিজ্য চলে, আর এই জায়াগটাতে কোনো কন্ট্রোভার্সি নাই, কারও কোনো দ্বন্দ্ব নাই। বঙ্গোপসাগর ভারত মহাসাগরের ভেতরেই একটি উপসাগর, এটা প্রাচীন কাল থেকেই ব্যবহার হচ্ছে। এই জায়গাটার ওপর অনেকের নজর।এটা আমি হতে দিচ্ছি না, এটাও আমার একটা অপরাধ।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যদিও একটা দেশকে দেখানো হয়, কিন্তু আমিতো জানি তারা কোথায় কোথায় হামলা চালাবে, সেটা তো আমি জানি। সে কারণে আমাদের কিছু সমস্যায় পড়তে হচ্ছে, পড়তে হবে জানি, কিন্তু আমি সেটা পাত্তা দেই না। দেশের মানুষ আমার শক্তি, মানুষ যদি ঠিক থাকে তাহলে আমরা আছি।
জৈষ্ঠ্য সাংবাদিক, কলামিস্ট ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে সাধুবাদ জানিয়ে নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘‘আজকে যে ক্রিস্টিয়ান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা প্রধানমন্ত্রী বললেন, সেই ১৯৯৬ সাল থেকে আমি অবিরত লিখে আসছি এবং বলে আসছি এবং দেশবাসীকে সতর্ক করে আসছি। আমার আগেও অনেকে বিচ্ছিন্নভাবে এ কথা বলেছেন। তাদের লেখালেখি থেকেই এগুলো আমি পেয়েছি। কিন্তু আমার মত করে এভাবে ধারাবাহিক টানা ২৮ বছর কেউ এ বিষয়ে কাজ করেছে কিনা আমার জানা নেই। এটা আমার কোন কৃতিত্ব নয়, বড় মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া ও কৃতজ্ঞতা যে তিনি আমাকে এই কাজের জন্য নির্বাচন করেছেন এবং তৌফিক দিয়েছেন। তিনি চাইলে অন্য যে কাউকে নির্বাচন করতে পারতেন। আমি সৌভাগ্যবান যে তিনি আমাকে নির্বাচন করেছেন এবং এজন্য আমি শুকরিয়া জানাই।
আজকে আমি অত্যন্ত খুশি এজন্য যে, এই দেশের শীর্ষ পর্যায় থেকে এ বিষয়ে বক্তব্য এসেছে। যে কথা আমি দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে লিখে ও বলে আসছি আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুখ থেকে সে কথা প্রতিধ্বনিত হয়েছে। রাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায় থেকে এই বক্তব্য আসায় এখন এই দৃষ্টিভঙ্গি রাষ্ট্রের সকল পর্যায়ে পৌঁছে যাবে। সমগ্র মানুষ বিষয়টি জানতে পারবে। ফলে সারাদেশে এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি হবে। ধীরে ধীরে অন্যান্য রাজনৈতিক দলও এ বিষয়ে মুখ খুলবে এমনটা আমার প্রত্যাশা। মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা যে তিনি এই সচেতনতা তৈরীর যে অবিশ্রান্ত লড়াই তার কিঞ্চিত সাফল্যের ভাগীদার আমাকে করেছেন। এখন এই দায়িত্ব সমগ্র দেশবাসীর। কারণ তারা সবাই বিষয়টি এখন জানেন। দেশপ্রেমিক মানুষ হিসেবে রাষ্ট্রের অখণ্ডতা রক্ষার এই লড়াই তাদেরও। মুসলিম হিসেবে খ্রিস্টবাদী চক্রান্ত রুখে দেয়ার ঈমানী দায়িত্ব তাদেরও। শুধু মুসলিম নয়, এ দায়িত্ব হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানদেরও। দেশ প্রেমিক হিসেবে এই রাষ্ট্রের অখণ্ডতা রক্ষা দেশের ১৮ কোটি মানুষের নৈতিক ও জাতীয় দায়িত্ব।’’
ধন্যবাদ জানিয়ে নেজামুল ইসলাম লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী আপনি এই কথা বোঝার কারণে আপনাকে ধন্যবাদ। যেভাবে সম্ভব চট্টগ্রামে ব্যাপকভাবে দাওয়াহর কাজ করার সুযোগ দিন। সেনাবাহিনীকে তাদের পাশে থেকে সমর্থন জানানোর সুযোগ দিন, এবং সেনাবাহিনীর ব্যাপক হারে সেখানে ক্যাম্প নির্মাণ করুন। ইনশাআল্লাহ খৃষ্টান মিশনারীরা সেখান থেকে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হবে।
আতিকুর রহমান কামালি লিখেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী দেশের সর্বোচ্চ ব্যক্তি। গতকাল থেকে তার একটি বক্তব্য আমরা দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে ঘুরে বেড়াতে দেখছি। তিনি বলেছেন, চক্রান্ত এখনও আছে। পার্বত্য চট্রগ্রাম এবং মিয়ানমারের একটি অংশ নিয়ে খ্রিস্টান দেশ বানাতে চাচ্ছে একদল!
একথা আসলে নতুন কিছু না। বাংলাদেশপ্রেমী আলেমগণ অনেক আগ থেকেই এ কথা বলে আসছেন। বেশি দূর যাওয়ার দরকার নেই। ১১ বছর আগে হেফাজতে ইসলাম যে ১৩ দফা কর্মসূচি দিয়েছিল, তার মধ্যে ১০ তম দফা ছিল, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত এনজিও এবং খ্রিস্টান মিশনারিগুলোর ধর্মান্তকরণসহ সব অপতৎপরতা বন্ধ করা।বাংলাদেশের আলেমগণ ৯০ এর দশকে এন,জি,ও বিরোধী আন্দোলন করেছেন। মানুষদের সতর্ক করেছেন।
আলেমদের পশ্চাদপদ ভেবে অনেকে কথাগুলো শুনতে চায় নি। অথচ আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও একই কথা বললেন।
পাহাড়ে দাওয়াতি কাজ বেগমান করা দরকার। নানাভাবে সরল সহজ মুসলমানদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। সরকারের উচিত সেবার নামে আসা এন,জি,ওদের লাগাম এখনই টেনে ধরা। সময় চলে গেলে পার্বত্য চট্রগ্রাম নিয়ে আফসোসের শেষ থাকবে না।’’