বাবা-মায়ের হাতে সন্তান হত্যার সংখ্যা বেড়েই চলেছে

ঢাকা: এক বছরের মধ্যে দেশে বাবা-মায়ের হাতে সন্তানের প্রাণ যাওয়ার সংখ্যা বেড়ে হয়েছে দেড় গুণ। ২০১৫ সালে যে সংখ্যা ছিল ৪০ তা ২০১৬ সালের শেষে এসে দাঁড়ায় ৬০ এ। শিশু অধিকার ফোরামের এই পরিসংখ্যানকে উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করে এজন্য পারিবারিক বন্ধন শিথিল হয়ে আসা, ভোগবাদী সংস্কৃতি, বিদেশিদের অনুকরণ ও সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়কে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।

একটি শিশুর কাছে সবচে বেশি নিরাপদ স্থান তার পরিবার, সুনির্দিষ্ট করে বললে মা-বাবার কোল। আশ্রয়ের সেই জায়গাটি কি কোন কোন শিশুর জন্য ভয়ংকর হয়ে উঠছে? সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা সামনে নিয়ে এসেছে এ প্রশ্ন । শুধু গণমাধ্যমে আসা সংবাদের ভিত্তিতে শিশু অধিকার ফোরাম মা-বাবার হাতে সন্তানের প্রাণ হারানোর যে চিত্র তুলে ধরেছে তা আঁতকে ওঠার মত। তাদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৪ সালে বাবা-মায়ের হাতে সন্তান হত্যার সংখ্যা ছিল ৪১ জন, ২০১৫ সালে তা ৪০ জন হলেও ২০১৬ সালে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ এ।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, সবচেয়ে পরম নিরাপদ জায়গা বাবা মায়ের কোল। ২০১৪ এবং ২০১৬ সাল বিবেচনা করলে বাবা মায়ের হাতে খুন হওয়ার ঘটনাটা বাড়ছে। আর এ ধরণের হত্যাকাণ্ডের পেছনে বাবা-মায়ের সাথে সন্তানদের সম্পর্ক শিথিল হয়ে আসার প্রবণতা, তাদের লাগামহীন চাহিদা, ভারতীয় ও বিদেশিদের অপসংস্কৃতির অনুকরণে পরকিয়া ও অনৈতিক সম্পর্ক, সন্তানের প্রতি অনাগ্রহ মনোভাব এবং ইসলামিক পরিবার কাঠামো ভেঙ্গে পড়াকে দায়ী করছেন সমাজবিদ ও মনোবিজ্ঞানীরা।

তারা বলেন, এখন একটা ভোগবাদী পুঁজিবাদী সমাজ যেখানে বিস্তর প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে চলতে হচ্ছে। আর্থিক ও সামাজিক এই প্রতিযোগিতার কারণে এক সময় মনে হয় আমি বেঁচে থেকে লাভ কি, সন্তান বেচে থেকে লাভ কি? তারা আরো বলেন, আমাদের সামাজিক শৃঙ্খলা দরকার। নৈতিক শক্তিগুলোকে আবার ঠিক করে নেয়া দরকার। সেক্ষেত্রে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার বিকল্প নেই।

এছাড়া এ ধরণের হত্যাকাণ্ড রোধে সন্তান, মা-বাবা সবাইকে নিয়ে সামাজিক সম্পর্ক জোরদার ও মূল্যবোধ উন্নয়নের বিষয়ে কাউন্সিলিং এর পাশাপাশি পাঠ্যপুস্তকে ধর্মীয় শিক্ষা অন্তর্ভুক্তির কথা বললেন বিশেষজ্ঞরা।