রাজধানীতে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র আসে কিভাবে : চেকপোষ্ট নিয়ে প্রশ্ন সাবেক সেনাপ্রধানের

ঢাকা: রাজধানীর উত্তরায় বৌদ্ধমন্দিরের পাশে একটা খাল থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। এটা একটা অস্ত্রের চালান হতে পারে। কিন্তু কত অস্ত্র এরই মধ্যে দেশে এসেছে, তা তো আমরা জানি না। তবে এটাও ভাবার কোনো কারণ নেই, এটাই একমাত্র অস্ত্র চালান। কিন্তু এটা তো বলাই যায়, বিপুল পরিমাণ এই অস্ত্র উদ্ধার রাষ্ট্রের জন্য খুবই উদ্বেগজনক- আমাদের সময় ডটকমকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন সাবেক সেনাপ্রধান ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক লে. জে. এম হারুন-অর রশিদ বীর প্রতীক (অব.)।

তিনি বলেন, এ ধরনের অস্ত্রের চালান একেবারে রাজধানী পর্যন্ত পৌঁছে গেছে, এটা একটা চিন্তার বিষয়। আমাদের অনেক চেক পোস্ট রয়েছে। এই চেকপোস্টের কাজ কী? এই চেক পোস্ট দিয়ে মানুষ হয়রানি ছাড়া তো কোনো কাজ হচ্ছে না। চেক পোস্টে ট্র্যাফিক জ্যাম বাঁধছে, কিন্তু অস্ত্র ধরা পরছে না। যাদের অস্ত্র আনা দরকার, তারা ঠিকই অস্ত্র আনছে। আনতে পারছে। যদি তাই না হবে তাহলে রাজধানী পর্যন্ত কিভাবে এসব অস্ত্র পৌঁছাল?

তিনি আরও বলেন, যে অস্ত্রগুলো ধরা পরেছে, তা কোনো ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে নয়, একটা লোক দেখেছে বলেই ধরা পরেছে। ধরা পরেনি এরকম আরও অস্ত্রের চালান থাকতে পারে বলেই আমার মনে হয়। বারো ট্রাক অস্ত্রের চালান এসেছিল দেশে, সেই মামলারও তো এখনো কোনো সুরাহা আমরা করতে পারিনি। ধরা পরা অস্ত্রগুলোই প্রমাণ করে কী ধরনের অস্ত্র দেশে আসছে। অত্যাধুনিক অস্ত্র আসছে। এসব অস্ত্র কোনো না কোনো পথ দিয়েই তো আসছে। কিন্তু সেসব পথ হয়তো শনাক্ত করতে পারিনি আমরা। বুঝতে পারিনি।

সাবেক এই সেনাপ্রধান আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে এটা বলা যায়, যে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দেশে রয়েছে, দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে, তাদের ব্যবহারের জন্যই এসব অস্ত্র আনা হচ্ছে। কিছু অস্ত্র ব্যবসায়ী রয়েছেন, যারা অস্ত্র ও ড্রাগের ব্যবসা করেন- এদেরই হতে পারে এসব অস্ত্র। তারাই এখন এসব অস্ত্র দেশে চালান দিচ্ছে বলে মনে হয়। আর এই সব কিছুর উদ্দেশ্যই হচ্ছে, ক্ষমতা ও অর্থ। যেখানে মনোপুতভাবে কিছু হবে না, সেখানে অস্ত্র ব্যবহার হবে। আর যেখানে সবকিছু মনোপুতভাবে হবে, সেখানে অন্যকিছু দিয়ে চালানো হবে।

স্থিতিশীল রাষ্ট্রের জন্য কী ধরনের পদক্ষেপ কার্যকর ফল বয়ে আনতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশকে এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি থেকে মুক্ত করতে হলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না হলে কিছুই হবে না। রাজনৈতিক ঐক্য বলে কিছু নেই। স্বচ্ছ রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হলে পরিস্থিতির পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও মনে করেন খ্যাতিমান এই বিশ্লেষক।