তিনতলা চাষাবাদে কৃষকের মুখে হাসি

তিনতলা চাষাবাদে কৃষকের মুখে হাসি

খুলনা  সংবাদদাতা: একই জমিতে ধান চাষ হচ্ছে, আবার সে ধানের পানিতে চাষ হচ্ছে নানা প্রজাতির মাছ। সঙ্গে জমির আইলে সামান্য পরিমাণ জায়গায় চাষ হচ্ছে গ্রীষ্মকালীন টমেটো, তরমুজ, শিম, কদুসহ নানা জাতের সবজি।

সরেজমিনে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার চাঁদগড় গ্রামে গিয়ে এমনই দৃশ্য দেখা যায়। সেখানকার প্রায় প্রত্যেকটি জমিতে এখন এই তিনতলা কৃষি পদ্ধতিতে চাষ হচ্ছে।

এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করছেন এমন একজন কৃষক জানান, চার বিঘা জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করা হচ্ছে। সঙ্গে মাছ ও তরমুজের আবাদ করেছি। তিনি বলেন, আগে জমিতে শুধু ধান চাষ করতাম। এখন একই জমিতে অনেক কিছু একসঙ্গে চাষ করছি। ফলে একই সময় তিন ধরনের ফসল ঘরে তুলতে পারছি, যা বিক্রি করে তিনগুণ লাভ হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, জমির পানিতে চিংড়ি, রুই, কাতলা, মৃগেল চাষ করছি। এরই মধ্যে ২ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করা হয়েছে। আরও যা আছে, তা ২ লাখ টাকায় বিক্রি করা যাবে। এছাড়া সবজি চাষের জন্য ২৫ হাজার টাকা খরচ করে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার টাকার বিক্রি হয়েছে। একই গ্রামের বাসিন্দা রফিক শেখ বলেন, ছয় বিঘা ঘেরে গলদা চিংড়িসহ নানা ধরনের কার্পজাতীয় মাছ চাষ করছি। রয়েছে ধানও। আর ঘেরের পাড়ে গ্রীষ্মকালীন শিম, টমেটোসহ হরেক রকম সবজিও চাষ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আগে একই জমিতে চাষাবাদ করে যে টাকা আয় করতাম, এর তুলনায় এখন চারগুণ বেশি টাকা আয় হয়। আমাদের দেখাদেখি অনেক কৃষক এই পদ্ধতিতে চাষাবাদে ঝুঁকছেন। গ্রামের আরও একজন বলেন, এই তিন তলা কৃষিতে অনেক লাভবান হয়েছি। সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে ধানের সঙ্গে মাছ ও শিম চাষ করছি। এরই মধ্যে ৫০ হাজার টাকার শিম বিক্রি হয়েছে। আরও ৮০-৯০ হাজার টাকার শিম মাঠে আছে। এছাড়া মাছ বিক্রি হয়েছে ২ লাখ টাকার।

খুলনার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, খুলনা জেলায় মোট ৬৬ হাজার ৫৫৬টি ঘের রয়েছে। ঘেরে মোট জমি ৫৫ হাজার ৩৭৫ হেক্টর। তবে ঘেরের সামান্য পরিমাণ জমি অর্থাৎ পাড়ের অংশটুকু ব্যবহার হচ্ছে সবজি আবাদে, যা আগে পতিত থাকত। এখন পাড়ের জমি আর পতিত নেই। কেউ ঘের চুক্তি নিয়ে কেউ আবার নিজের জমিতেই চাষাবাদ করছেন।