১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে এডিবি

দেশের পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন, নাগরিক সেবার মান বাড়ানো ও সুশাসন জোরদারে ২০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ দিচ্ছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)।  বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ হয় প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।

বুধবার এডিবির বাংলাদেশ অফিস থেকে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, ম্যানিলাভিত্তিক এ সংস্থাটির বোর্ড অব ডিরেক্টরস বাংলাদেশে এ ঋণ প্যাকেজ অনুমোদন করেছে।

এডিবির এই সহায়তার ফলে চলমান প্রকল্পের আওতায় ৬০০ কিলোমিটার সড়ক ও ৩০০ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ বা উন্নতি করা এবং পানি সরবরাহের জন্য ১৮০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া পৌরসভাগুলোতে করের হার বাড়ানো ও বিলিং সিস্টেমের কম্পিউটারাইজেশনে সম্পূর্ণতা আনবে। এতে করে দারিদ্র্য বিমোচন, লিঙ্গ বৈষম্য ঘাটতির উন্নয়ন, কমিউনিটি অংশগ্রহণ এবং পৌর আর্থিক ব্যবস্থাপনার উন্নতির জন্য সহায়ক হবে। প্রকল্পের জন্য বাস্তবায়ন সময়কাল ধরা হয়েছে চলতি বছর থেকে ২০২১ সালের আগস্ট পর্যন্ত।

এ বিষয়ে এডিবি নগর উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ আলেকজান্দ্রা ভোগাল বলেন, এখনও অবকাঠামোগত দিকে থেকে বাংলাদেশের শহুরে পরিবেশ তেমন উন্নতি হয়নি। বরং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশ আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে। এই অবস্থায় স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য আরো বেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন।

তিনি বলেন, তৃতীয় নগরায়ণ শাসন ও অবকাঠামো (সেক্টর) প্রকল্পের আওতায় এই অতিরিক্ত সহায়তা দিচ্ছে এডিবি। এ প্রকল্পের কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে।

এডিবি বলছে, ২০১৪ থেকে ২০১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৬ দশমিক ৬ হারে প্রবৃদ্ধি করেছে। কিন্তু দ্রুত নগরায়নের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে টেকসই ও ইনক্লুসিভ গ্রোথের বিষয়ে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন সরকার। উদাহরণস্বরূপ বলা হয়, ২০১৫ সালের হিসাবে অনুসারে শহুরে জনসংখ্যার মাত্র ৩২ শতাংশ জনগণের মাঝে পাইপলাইন পানি সরবরাহ করার ব্যবস্থা ছিল। আর মাত্র ৫৮ শতাংশ উন্নত স্যানিটেশনের সুবিধা পেত। এ ছাড়া অন্যান্য চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে শহরগুলোতে ড্রেনেজ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থাও খুবই নাজুক। এর পেছনে সুশাসন, সম্প্রদায়ের অংশীদারিত্বের অভাব এবং ক্ষমতার সীমাবদ্ধতাগুলো তীব্রভাবে দায়ী।

এতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হলো জলবায়ু পরিবর্তন। যেহেতু দেশ ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রায় মুখোমুখি। এ ছাড়া ঘন ও তীব্র বৃষ্টিপাত, ঝড় ও বন্যা এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ক্রমান্নয়ে বিপদ সীমায় উঠে আসছে। এজন্য এ চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করার জন্য পরিবেশ ও সেবা বজায় রাখতে পৌরসভাগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞানের উন্নতির প্রয়োজন।

এর আগে ২০০৩-২০০৭ সাল পর্যন্ত দেশের ২৭টি পৌরসভায় পারফরমেন্সের ভিত্তিতে ৬ কোটি ৫০ হাজার ডলার সমপরিমাণ সহায়তা দিয়েছে। এরপরও ২০০৮ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দেশে ৫১টি পৌরসভায় ৮ কোটি ৭০ হাজার ডলরের সহায়তা দিয়েছে। এর মধ্যে ২০১৪ সালে শহর অঞ্চলে অবকাঠামো ও শাসন ব্যবস্থার উন্নয়নে সাড়ে ১২ কোটি ডলারের সহায়তা দিয়েছে।