২৮ কেজির মাছ বিক্রি হলো ২ লাখে!

কক্সবাজার সংবাদদাতা: কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপে এক জেলের বড়শিতে ধরা পড়েছে ২৮ কেজি ওজনের একটি রুপালি পোয়া মাছ। দ্বীপের পশ্চিমপাড়া সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের তীরে গত ৬ ডিসেম্বর, গত রোববার মাছটি ধরেন দ্বীপের ডাঙ্গর পাড়ার বাসিন্দা মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে মুজিব উল্লাহ।

স্থানীয় ভাষায় কালা পোয়া নামে পরিচিত মাছটি লম্বায় ছিল প্রায় সাড়ে তিন ফুট। পোয়া মাছটি বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ৯১ হাজার টাকায়। মাছটিতে এমন কি রয়েছে যা এতো দামে বিক্রি হলো। ক্রেতা-বিক্রেতা কেউই এ ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা দিতে না পারলেও সবাই বলছেন, মাছটির ফুসফুসের কারণেই এর এতো দাম।

জেলে মুজিব উল্লাহ জানান, গত রোববার নৌকা নিয়ে তিনিসহ তিনজন শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিমপাড়া সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের মাছ শিকারে যান। ওই সময় তারা একসঙ্গে ১০টি বড়শি সাগরের নিক্ষেপ করে নৌকায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। এসময় বড়শিতে ৭ কেজি ওজনের একটি পোয়া মাছ ধরা পড়ে। এতে করে তার মন ভরেনি। তিনি বলেন, আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে থাকি। এরমধ্যে একটি বড়শিতে বারেবারে টান লাগছিল। মনের মধ্যে ধারনা হলো বড় কিছু বড়শিতে লেগেছে। পরে তারা বড়শি টেনে কাছে আনতে আনতে বড় মাছ দেখে তিনিসহ অন্য জেলেরা আনন্দে দিশেহারা হয়ে পড়েন।

পরে তারা নৌকা নিয়ে তীরে ফিরে আসেন। তীরে আসার সঙ্গে সঙ্গে বড়শিতে বড় মাছ ধরা পড়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে পশ্চিমপাড়া মৎস্য ঘাটে উৎসুক জনতা মাছটি দেখতে ভিড় জমান। পরে বড়শির মালিকের কাছ থেকে ১ লাখ ৯১ হাজার টাকায় শাহপরীর দ্বীপ কোনারপাড়া মোহাম্মদ আমিনের ছেলে মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইসমাইল মাছটি কিনে নেন।

মাছ ক্রেতা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, মাছটি ভালোভাবে বরফ দিয়ে কক্সবাজার ফিশারি ঘাটে পাঠানো হয়েছে। এ মাছের ফদানার (ফুসফুস) দাম অনেক বেশি হওয়ায় চট্টগ্রাম নেওয়া যায় কিনা সেখানকার ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, মাছটি হংকংয়ে রপ্তানি হবে। আর মাছটির ফুসফুস দিয়ে বিশেষ ধরনের স্যুপ ও এয়ার ব্লাডার দিয়ে বিশেষ ধরনের অপারেশনাল সুতো তৈরি হয়। তাই মাছটির এতো দাম।

তবে তিনি জানান, ঝুঁকি নিয়ে মাছটি কিনেছেন তিনি। চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী পিকের কাছে তিনি মাছটি বিক্রি করার আশা করছেন, যে বিদেশে মাছ ও মাছের ফদানা রপ্তানি করে থাকেন। যদি ফদানা বা ফুসফুসটির ওজন ৯০০ থেকে ৯৫০ গ্রাম হয় তবে এটি বিক্রি করে লাভ হবে। আর ওজন কম হলে লোকসান গুনতে হবে বলেও জানান তিনি।

টেকনাফ উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, বঙ্গোপসাগরে ২৮ কেজি ওজনের বড় পোয়া মাছটি ধরা পড়ার খবরটি শুনেছি। সাধারণত এতো বড় পোয়া মাছ সহজে ধরা পড়ে না। তিনি আরো বলেন, পোয়া মাছের বায়ুতলী বা এয়ার ব্লাডারের কারণে মাছটির অত্যাধিক মূল্য। এয়ার ব্লাডার দিয়ে বিশেষ ধরনের অপারেশনাল সুতো তৈরি হয় বলে মাছটির এতো দাম বলে তিনি শুনেছেন। তবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি তিনি।