২১ অগাস্টের ঘটনা ইতিহাসের কলঙ্ক -ফখরুল

ঢাকা:একুশ অগাস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনাকে ‘রাজনৈতিক ইতিহাসের কলঙ্কময় ঘটনা’ বলে অভিহিত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোবাবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “এদিনে আমি স্মরণ করতে চাই, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে, আজকে সেই ২১ অগাস্ট। “যে ২১ অগাস্টে একটা বর্বরতম হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল এবং একটি রাজনৈতিক দলের ২২ জন নেতাকর্মী সেদিন নিহত হয়েছিলেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটা কলঙ্কময় ঘটনা ঘটেছিল।”

ওই ঘটনায় নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, “আজকের এই দিনে আমি নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। তার মধ্যে আমাদের সাবেক রাষ্ট্রপতি জিলøুর রহমান সাহেবের স্ত্রী আইভি রহমানও ছিলেন। আমি তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি এবং রুহের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।” ২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় দলটির তৎকালীন মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিলøুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত এবং কয়েকশ’ আহত হন। বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে মামলাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টার পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে অভিযোগপত্র দিয়ে বিচার শুরু হয়।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর অধিকতর তদন্ত হয়। এতে আসামির তালিকায় যোগ হন খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানসহ ৩০ জন।

রাজধানীর সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির চেয়ারম্যান শফিকুল গানি স্বপনের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। মির্জা ফখরুল বলেন, “আজকে দেশে একটি ভিন্নমুখী রাজনীতি চলছে। সেই ভিন্নমুখী রাজনীতি হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিপন্নের রাজনীতি। বাংলাদেশের মানুষকে আজকে জঙ্গিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করবার চক্রান্ত, অকার্য্কর রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে চিহ্নিত করবার চক্রান্ত- যেটা আজকে বাংলাদেশে চলছে।”

জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় খালেদা জিয়ার ‘জাতীয় ঐক্যে’র আহবান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই আহবান বিএনপির পক্ষ থেকেও ছিল না, ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকেও ছিল না, তিনি একজন জাতীয় নেতা হিসেবে, দেশপ্রেমিক নেতা হিসেবে তার দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ থেকে এই ডাক দিয়েছিলেন।” খালেদার এই আহ্বানের ‘অপব্যাখ্যা’ দেয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন ফখরুল।

“জাতীয় ঐক্যের বিষয়ে দেশনেত্রী কাউকে চিঠি দেননি। যারা তার আহবানে সাড়া দিয়েছেন, তারা যোগাযোগ করছেন, তাদের সঙ্গে তিনি কথা বলছেন। এখনও তিনি বলছেন। আমরা আশা করি অল্প কিছু দিনের মধ্যেই এই ঐক্যটাকে আমরা একটা জায়গায় নিয়ে যেতে পারব।”

জঙ্গিবাদের কথা বলে সরকার বিরোধীদল নির্মূল করার কাজ করছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।

ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই হঠাৎ করে মধ্যবর্তী নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে বলে মনে করেন মির্জা ফখরুল। “ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে জাতীয়তাবাদী শক্তি, দেশপ্রেমিক শক্তি ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে আবার পেছনে ফেলে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

“সরকারকে বাধ্য করতে হবে- অতি দ্রুত একটি নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে জনগণের একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করবার জন্য আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে।” রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনার সমালোচনাও করেন ফখরুল।

তিনি বলেন, এই রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র কোনোদিনই হতো না, যদি দেশে একটা জনগণের নির্বাচিত সরকার থাকত। কারণ তাদের জনগণের কাছে জবাবদিহিতা থাকত। এই রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র যদি আমার সুন্দরবনকে ধ্বংস করে দেয়, আমার পরিবেশকে ধ্বংস করে দেয়, আমার ভবিষ্যতকে ধ্বংস করে দেয়, তাহলে এই বিদ্যুৎ দিয়ে আমার কি হবে? এটা বেসিক প্রশ্ন।”