হুন্ডিতে রেমিট্যান্স আসায় ২৩০ হিসাব জব্দ

হুন্ডিতে রেমিট্যান্স আসায় ২৩০ হিসাব জব্দ

নিউজ ডেস্ক: অবৈধ হুন্ডিতে রেমিট্যান্স পাঠানোর দায়ে বিকাশ, রকেট ও নগদের ২৩০টি হিসাব জব্দ করেছে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে গঠিত আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

এসব হিসাবে গ্রাহক লেনদেন করতে পারবে না। তবে ভবিষ্যতে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাবে এমন প্রতিশ্রুতি দিলে হিসাবগুলো খুলে দেওয়া হবে। হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স প্রতিরোধে এ নতুন কৌশল নিয়েছে বিএফআইইউ। সংস্থাটির পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার বিকাশ, রকেট ও নগদসহ সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি এমএফএস প্রতিষ্ঠানকে এ সংক্রান্ত চিঠি দেয় বিএফআইইউ। এসময় বেশ কয়েকটি এমএফএস এজেন্টসহ ২৩০ হিসাব জব্দ করা হয়।

বিএফআইইউর সংশ্লিষ্টরা জানান, হুন্ডি ও ডিজিটাল হুন্ডি ব্যাপক বিস্তার রোধে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে বিএফআইইউ ও বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ। এ বিষয়ে বিএফআইইউ এর গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ ৫টি মামলাসহ এ প্রক্রিয়ায় জড়িত একাধিক ব্যক্তিকে আটক করে। এছাড়া বিএফআইইউ সকল ব্যাংক ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে একযোগে কাজ করে হুন্ডির লেনদেন শনাক্ত ও তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে। অপরদিকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের সহযোগিতায় হুন্ডি চক্র ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ চলমান রয়েছে।

এ পর্যায়ে হুন্ডি প্রতিরোধের নতুন কৌশল হিসেবে হুন্ডির মাধ্যমে প্রেরিত বেনিফিশিয়ারিদের মাধ্যমে প্রবাসী রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের উদ্বুদ্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছে বিএফআইইউ। ইতোমধ্যেই হুন্ডির মাধ্যমে প্রেরিত রেম্যিট্যান্সের ২৩০ জন বেনিফিশিয়ারির হিসাবে সাময়িকভাবে উত্তোলন স্থগিত রাখা হয়েছে। তারা তাদের বিদেশে অবস্থানরত আত্মীয় স্বজনরা যাতে ভবিষ্যতে বৈধ পথে দেশে রেমিট্যান্স পাঠান এ বিষয়ে তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করবেন এমন শর্তে পুনরায় হিসাবগুলো সচল করে দেওয়া হবে।

এর আগে বুধবার (১৬ নভেম্বর) বিএফআইইউ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রবাসী বাংলাদেশিদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে (হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে) প্রেরণ করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ এবং এতে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

আপনাদের অর্জিত মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে না পাঠিয়ে বৈধ পথে বা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে প্রেরণ করুন, দেশ গড়ায় মূল্যবান অবদান রাখুন এবং আপনার প্রিয়জনকে ঝুঁকি মুক্ত ও নিরাপদ রাখুন।

অবৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে প্রমাণ সাপেক্ষে প্রচলিত আইনে বিএফআইইউ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এদিকে নানা উদ্যোগ নিয়েও রেমিট্যান্স বাড়াতে পারছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি ২০২২-২৪ অর্থবছরের চতুর্থ মাস অক্টোবরে ১৫২ কোটি ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এই অংক গত ৮ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশে ১৪৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল।