সেলিম ওসমান ওই শিক্ষককে বিক্ষুব্ধ জনতার গণধোলাই থেকে বাঁচিয়েছেন
নিউজ নাইন২৪, না’গঞ্জ: প্রধান শিক্ষককে কান ধরিয়ে উঠ-বস করানো নিয়ে সমালোচনার মুখে থাকা সংসদ সদস্য এ কে এম সেলিম ওসমানের পক্ষে আজ বুধবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ জনগণ।
সম্মেলনে বক্তারা বলেছেন, ধর্ম অবমাননার অভিযোগে জনরোষের মুখে থাকা পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে গণধোলাই থেকে বাঁচাতেই সেখানে গিয়েছিলেন সাংসদ সেলিম ওসমান।
এই ঘটনাটি নিয়ে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এবং বিকেএমইএ সভাপতি সেলিম ওসমানের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চলছে তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন তারা ।
নারায়ণগঞ্জ ক্লাব কমিউনিটি সেন্টারে সেলিম ওসমানের পক্ষে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির উদ্যোগে এই সংবাদ সম্মেলনে ৮টি জাতীয় ও ৩৫টি জেলাভিত্তিক সংগঠনের নেতারা ছিলেন।
নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মঞ্জুরুল হক বলেন, “স্কুল শিক্ষার্থীকে মারধর ও ধর্ম নিয়ে কটূক্তির বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ার কারণে বিক্ষুব্ধ জনতা কয়েকদফা প্রধান শিক্ষককে এলোপাতাড়ি মারধর করে শার্ট ছাড়িয়ে ফেলে।
“কোনো কিছুতেই পরিস্থিতি পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে না পেরে উপস্থিতি নেতৃবৃন্দ স্থানীয় সাংসদকে ঘটনাস্থলে আসার অনুরোধ জানান। ওই সময় পরিস্থিতি এত ভয়াবহ ছিল যে, প্রধান শিক্ষক উন্মত্ত জনতার চরম আক্রোশের মুখোমুখি এবং ভয়াবহ বিপর্যয়ের সম্মুখীন।”
সেলিম ওসমান ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রধান শিক্ষককে ‘মিনতি করে’ দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে রক্ষার আহ্বান জানান।
সেলিম ওসমান তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে উত্তেজিত মানুষদের শান্ত করেন বলে মঞ্জুরুল জানান।
তিনি বলেন, “এরপর প্রধান শিক্ষক তার কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে কান ধরে উঠ-বস শুরু করতে থাকে। পরে এমপি সেলিম ওসমান উপস্থিত জনতাকে বলেন, প্রধান শিক্ষককে থানায় নিয়ে যাওয়া হবে। আপনারা রাস্তায় কোনো সমস্যা করবেন না।”
“সেলিম ওসমান ওই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত না হলে জনতার হাতে প্রধান শিক্ষকের কী ভয়াবহ পরিণতি হত, তা ভাবতেই গা শিউরে উঠে।”
সেলিম ওসমানের বিরুদ্ধে সমালোচনার প্রতিক্রিয়ায় মঞ্জুরুল বলেন, “জনরোষ থেকে প্রধান শিক্ষককে বাঁচাতে সেলিম ওসমান অসুস্থ শরীর নিয়েও সেখানে ছুটে গিয়েছিলেন।
“কিন্তু যারা বিষয়টি না জেনে এবং জেনেও একপেশেভাবে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন, তাদের কাছেও প্রশ্ন, ভবিষ্যতে যদি এমন ঘটনা ঘটে তবে জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসনের বা রাজনীতিক অথবা কোনো সচেতন মানুষ কি নিজ দায়িত্বে সেখানে যাবেন?”
সংবাদ সম্মেরনে এফবিসিআইর সাবেক সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী, পরিচালক প্রবীর কুমার সাহা, বিকেএমইএর সহ-সভাপতি মনসুর আহম্মেদ ও এ এইচ আসলাম সানি, বাংলাদেশ ইয়ার্ন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লিটন সাহা, বাংলাদেশ নিটিং ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবু তাহের শামীম, বাংলাদেশ হোসিয়ারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল আলম সজল উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ী ছাড়াও এলাকার নেতৃস্থানীয় প্রবীণ ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।