সেলিম ওসমানের কাছে ১ কোটি টাকা চেয়ে শ্যামল কান্তির ফোন (অডিও)

নিউজ নাইন২৪, ডেস্ক: ইসলাম নিয়ে কটুক্তিকারী নারায়ণগঞ্জের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের কাছে নগদ ১ কোটি টাকা দাবির অভিযোগ সংক্রান্ত একটি অডিও রেকর্ড গণমাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। গতকাল গণমাধ্যমে এই রেকর্ড সরবরাহ করেন সেলিম ওসমানের প্রেস সচিব বিশ্বজিত্ দাস।  কান ধরে উঠবোসের ঘটনাটি ‘মীমাংসা’র জন্য সেলিম ওসমানের প্রেস সচিব বিশ্বজিৎ দাসের কাছে মুঠোফোনে ওই টাকা চান তিনি।

সেলিম ওসমানের প্রেস সচিব বলেন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে চিকিত্সাধীন অবস্থায় গত ২১ মে শ্যামল কান্তি (০১৭১২০৮০৫৮২ নম্বর) তাকে সকাল ৮টা ৫৪ মিনিটে ফোন করেন।

বিশ্বজিৎ দাসকে করা ওই ফোনালাপটির সার অংশ নিম্নরূপ-

শ্যামল কান্তি : কি বলব বাবা আমি তো ফ্যাসাদ ফোসাদ গণ্ডগোল মণ্ডগোল চাই না। স্যারে কি করবে কি করবে না আমি জানি না। স্যারের সঙ্গে একটি আলাপ করে দেখতে পারেন।

বিশ্বজিৎ : কি আলাপ করব স্যার।

শ্যামল কান্তি : উনি তো আমাকে সহানুভূতি জানিয়ে ছিলেন যে, তিনটি মেয়ে একটি প্রতিবন্ধী। তিনটি মেয়েই তো বিবাহযোগ্য। আমাদের হিন্দুদের মধ্যে বিয়ে দিতে গেলে তো ত্রিশের (৩০) নিচে হয় না। তো তিন ত্রিশে ৯০ আর ওর চিকিৎসার জন্য ১০। এডা হিসাব কইরা আমি চাচ্ছিলাম। আমি তখন বুঝাইয়া বলতে পারি নাই। এখন স্যারকে যদি বুঝাইয়া বলতে পারেন। আর যদি মনে করে ওই শালা আমাকে ব্লেম করতেছে তাহলে তো আর আমার কিছু করার নাই। আমি খুব নিডি মানুষ এখন ফয়সালা করে দিতে বলেন একেবারে।

বিশ্বজিৎ : মানে ৩ মেয়ের বিয়ের জন্য ৩ ত্রিশে ৯০ লাখ আর চিকিৎসার জন্য ১০ লাখ এ ১ কোটি টাকার কথাই তো আগে বলে ছিলেন।

শ্যামল কান্তি : হ্যাঁ, হ্যাঁ

বিশ্বজিৎ : ও স্যার আপনিও আগে বুঝাইয়া বলতে পারেন নাই। আমিও বুঝি নাই।

এদিকে ফোনালাপের স্পষ্ট রেকর্ড প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শ্যামল কান্তি ভক্ত সম্পূর্ণ অস্বীকার করে বলেন, ‘বিশ্বজিৎ দাস নামের কোনো ব্যক্তিকে আমি চিনি না। এটা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।’

এর কিছুদিন আগে সেলিম ওসমানের সঙ্গে শ্যামল কান্তি ও তার স্ত্রীর কথোপকথনের অডিও-ও ছড়ানো হয়। এতে শোনা গেছে- শিক্ষক শ্যামল কান্তি দাবি করেছেন, ‘আপনাকে যেভাবে পাপী বলা হয়েছে সেভাবে আমার মুখ থেকে একবারও এক সেকেন্ডের জন্য এ কথা বেরোয়নি। এখন পর্যন্ত কেউ বের করাতে পারে নাই।’

আর ভিডিওটি তদন্ত কমিটির কাছে এক শিক্ষার্থীর দেয়া বক্তব্য নিয়ে। তাতে ওই শিক্ষার্থী স্বীকারোক্তি দিয়েছে যে, শ্যামল কান্তি আল্লাহকে নিয়ে কটূক্তি করেছেন।

এসব বিষয়ে সেলিম ওসমান বলেন, ‘যে সব তথ্য-প্রমাণ আছে তাতে পুরো বিষয়টিই তো পরিষ্কার হয়ে যায়। কিন্তু তদন্ত কমিটির তদন্ত আর রিপোর্টের মধ্যে যে আকাশ-পাতাল ফারাক সেটি কেন? আমার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ অথচ আমার সঙ্গেই কোনো তদন্ত টিম কথা বলেনি। তারপরও বলছি, আরও উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হোক। আমার অপরাধ প্রমাণ হলে যে কোনো শাস্তি মাথা পেতে নেব।

আর যদি প্রমাণ হয় উনি ইসলাম নিয়ে কটূক্তি করেছেন, নিজেই নিজের শাস্তি নিয়েছিলেন, তবে দেশের সব মুসল্লিদের কাছে আহ্বান, ইসলাম ক্ষমা ও শান্তির ধর্ম। সামনে পবিত্র সংযমের মাস। এ সংযমকে সামনে রেখে আল্লাহর ওয়াস্তে তাকে ক্ষমা করে দিন।

আমি মনে করি, সে তার শাস্তি পেয়ে গেছে।’

শিক্ষক শ্যামল কান্তির ইসলাম নিয়ে কটুক্তি করায় দেশজুড়ে গণমানুষের মুধ্যে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় বয়ে চলছে। শিক্ষক থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ শ্যামল কান্তির শাস্তির দাবি জানিয়ে আসছেন।

সেলিম ওসমানের প্রেস সচিব বিশ্বজিৎ দাসের সাথে শ্যামল কান্তির ফোনালাপের রেকর্ড: