সীমান্ত দিয়ে অবাধে আসছে ভারতীয় রোগাক্রান্ত গরু

কুড়িগ্রাম: করিডোর হাটের ছদ্মাবরণে কুড়িগ্রামের যাত্রাপুর ও ভুরুঙ্গামারী সীমান্ত দিয়ে অবাধে প্রবেশ করছে ভারতীয় রোগাক্রান্ত গরু ও মহিষ। সীমান্তের বিট (প্রবেশ দ্বার) এলাকায় রোগাক্রান্ত গরু-মহিষ সনাক্তের ব্যবস্থা না থাকায় সুস্থ গবাদি পশু সাজিয়ে তা চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন কুরবানীর হাটে।

ঈদকে সামনে রেখে করিডোর হাটে ভারতীয় গরু-মহিষের মজুদ বাড়লেও ক্রেতাদের চাহিদা দেশীয় গরুতে। এবারের ঈদে কুড়িগ্রামের কলির আলগা, নারানপুর, নুনখাওয়া, দই খাওয়াসহ কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিনই প্রবেশ করছে ভারতীয় রোগাক্রান্ত শত শত গরু-মহিষ। এসব গবাদি পশুকে সরকারি রাজস্বের আওতায় আনা হলেও সনাক্ত করা হচ্ছে না তাদের শরীরে থাকা বিভিন্ন রোগ।

ফুট এন্ড মাউথ ও খুরা রোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ভারতীয় এসব পশুর যথাযথ চিকিৎসা হচ্ছে না করিডোর হাটে। সদর উপজেলার যাত্রাপুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, রোগাক্রান্ত গরু-মহিষকে গ্রাম্য চিকিৎসক দিয়ে কোনো রকমে সুস্থ করে তা অন্যান্য গবাদি পশুর সাথে ট্রাক বোঝাই করে নিয়ে যাচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, না’গঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। যাত্রাপুর হাটের গরু ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ও নদীপথে ভারতীয় গরু যাত্রাপুর হাটে আসে। কিন্তু এর মধ্যে কিছু গরু অসুস্থ থাকে। এসব অসুস্থ গরুকে গ্রাম্য পশু চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করিয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামে পাঠানো হয়।

হাটের ইজারাদার আব্দুল গফুর জানান, এবারের ঈদে করিডোর হাটে ভারতীয় গরুর দাম চড়া হওয়ায় কুরবানীতে দেশী জাতের গরুর চাহিদাই বেশি। করিডোর হাট যাত্রাপুরে দেড় হাজারেরও বেশি ভারতীয় গরু জমা হয়ে থাকলেও বিক্রি হচ্ছে সামান্যই।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা দীপক রঞ্জন জানায়, সীমান্তের বিট (প্রবেশ দ্বার) এলাকাগুলোতে ভারতীয় গবাদি পশুর রোগ সনাক্তের ব্যবস্থা না থাকলেও করিডোর হাটগুলোতে নিয়মিত মনিটরিংয়ের মাধ্যমে চিকিৎসা করানো হচ্ছে। সরকারিভাবে রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় গবাদি পশুর পরীক্ষা-নিরীক্ষার দাবি ব্যবসায়ীদের। অন্যদিকে দেশী জাতের খামারে সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বাড়লে দেশীয় গবাদী পশু দিয়েই ঈদের চাহিদা পূরণ হবে। আর এতে করে ভারত থেকে চোরাইপথে গরু আনতে হবে না। বিএসএফর গুলিতে প্রাণহানিও ঘটবে না কোনো গরু ব্যবসায়ীর।