সাড়ে ৪০০ বছরের পুরনো মসজিদ ইলশা বখশী হামিদ মসজিদ

সাড়ে ৪০০ বছরের পুরনো মসজিদ ইলশা বখশী হামিদ মসজিদ

চট্টগ্রাম সংবাদদাতা: আরব সাগর পাড়ি দিয়ে মুঘল আমলে দ্বীন প্রচারকগণ এসেছিলেন সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার শাশ্বত বাণী মুবারক প্রচারের লক্ষ্যে। চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চলে তারা প্রথমে বসতি স্থাপন করেন। সেজন্য এসব এলাকায় রয়েছে বহু প্রাচীন মসজিদ এবং মাদ্রাসাসহ ইসলামিক নিদর্শন। বাঁশখালীর মধ্য ইলশা বখশী হামিদ মসজিদও তেমনি একটি ঐতিহ্যবাহী মসজিদ। মসজিদটি অন্যতম প্রাচীন ইসলামিক নিদর্শন।

সাড়ে ৪০০ বছরের পুরনো মসজিদটি নির্মিত হয়েছে ইট, পাথর ও সুরকির ব্যবহারে। ইসলাম ধর্মের প্রচার-প্রসারের ক্ষেত্রে এটি একটি মাইলফলক হিসেবে সমাদৃত। ইসলামী সভ্যতা-সংস্কৃতির বিকাশে এই মসজিদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মুসলিম শিক্ষা-সংস্কৃতির ভিত রচনা করে এই মসজিদ। এটি নির্মিত হয় সেই বাদশাহর যুগে যাকে উপাধি দেওয়া হয় দ্বীন এবং মিল্লাতের সুলতানুল মুয়াজ্জম তথা-মহান সম্রাট। তিনি হলেন সুলাইমান কররানি। শিলালিপির বক্তব্য মতে, এটি সুলাইমান কররানি কর্তৃক প্রতিষ্ঠা করার কথা থাকলেও লোকমুখে বখশী হামিদের নির্মিত মসজিদ বলে পরিচিত।

স্থানীয় প্রবীণ মুসলমানরা বলেন, বখশী হামিদের পুরো নাম মুহাম্মদ আবদুল হামিদ। বখশী তাঁর উপাধি। বখশী ফার্সি শব্দ। এর অর্থ কালেক্টর বা করগ্রহীতা। তৎকালীন সময়ে বখশী হামিদ এ অঞ্চলের কালেক্টর বা প্রশাসক ছিলেন। তিনি এলাকার শিক্ষা, সভ্যতা, সংস্কৃতির ব্যাপক উন্নতি করেন। জনশ্রুতি আছে, তৎকালীন এ এলাকায় প্যারাবন ছিল। ঝোপঝাড়ে জনবসতি ছিল না। ইউসুফ ও কুতুব নামে গৌড়ের দুজন আমির শাহ আবদুল করিম নামক জনৈক বুজুর্গ ব্যক্তির সঙ্গে উপযুক্ত বাসস্থানের সন্ধানে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে বাঁশখালীর এই জায়গায় আসেন। তারা উপকরণ নিয়ে বাঁশখালীর ইলশার দরগাহ বাড়ির স্থানে পৌঁছলে শাহ সাহেব ইল্লাল্লাহ শব্দ মুবারক উচ্চারণ করে তার ছড়ি পুঁতে রাখেন। সেখানে বসবাসের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। এ সময় থেকে স্থানটি ইল্লাল্লাহ শাহের স্থান এবং পরে ইলশায় রূপান্তরিত হয়। বখশী আবদুল হামিদ ওই শাহের অধস্তন বংশধর। কেউ কেউ মনে করেন, গৌড় থেকে আগত আউলিয়া ক্বিরামদের মধ্যে একজন ছিলেন সুলাইমান। তিনি নেতৃস্থানীয় ও বুজুর্গ ব্যক্তি ছিলেন। জ্ঞানে-গুণে অসাধারণ বিচক্ষণ ও প্রভাবশালী ছিলেন। সবাই তাকে সুলতান বলে ডাকত।