সরকারী বিধিনিষেধের দুর্ভোগ: মানুষের পকেট খালি, দোকানে ভিড় কম

সরকারী বিধিনিষেধের দুর্ভোগ: মানুষের পকেট খালি, দোকানে ভিড় কম

নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ লকডাউন আর বিধিনিষেধের খপ্পরে পড়ে পকেটশূন্য হয়ে পড়েছে মানুষের। দোকান-পাট খুললেও তাই ক্রেতাদের দেখা পাচ্ছে না ব্যবসায়ীরা।

আর মাত্র কয়েকদিন পরেই দেশে পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। তবে ঈদ দুয়ারে কড়া নাড়লেও পোশাকের মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের আনাগোনা খুবই কম। ফলে দিনের বেশিরভাগ সময় বিক্রেতাদের অলস সময় পার করতে হচ্ছে।

বিক্রেতারা বলছেন, নতুন পোশাক সব থেকে বেশি বিক্রি হয় রোজার ঈদে। কোরবানির ঈদে পোশাকের বিক্রি খুব একটা হয় না। যে কারণে ব্যবসায়ীরাও কোরবানির ঈদ উপলক্ষে নতুন নতুন কালেকশন কম আনেন। আর এবার সরকারী বিধিনিষেধে মানুষের পকেট খালি থাকায় ক্রেতা আরও কম।

শুক্রবার (১৬ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ মার্কেট প্রায় ক্রেতা শূন্য। হাতেগোনা কয়েকজন ক্রেতা মার্কেটে এসেছেন। পোশাকের দোকানের মতো প্রায় ফাঁকা দেখা গেছে জুতা ও ইমিটেশন জুয়েলারির দোকানগুলো। ফলে মার্কেটের বেশিরভাগ দোকানের বিক্রয় কর্মীরা অলস সময় পার করছেন।

রাজধানী সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী জুয়েল হাসান বলেন, আমরা আগেই ধরে নিয়েছি, এই ঈদ খুব একটা বিক্রি হবে না। তাই ঈদ উপলক্ষে তেমন নতুন কালেকশন নিয়ে আসিনি। রোজার ঈদে যে মাল তোলা হয়েছিল, তার বেশিরভাগই রয়ে গেছে।’

মার্কেটটির জুতার ব্যবসায়ী সালাম বলেন, আমাদের বড় ক্ষতি করে দিয়ে গেছে। রোজার ঈদে অনেক নতুন মাল তুলেছিলাম। কিন্তু বিক্রি খুব একটা হয়নি। কোন রকমে আসল টাকা উঠাতে পেরেছিলাম। আর কোরবানির ঈদে বিক্রি কম হবে এটাই স্বাভাবিক। তারপরও যে টুকু বিক্রি হওয়ার কথা তাও হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, আমরা ধরেই নিয়েছিলাম, এবার ঈদের আগে আর দোকান খোলা হবে না। যাই হোক শেষ মুহূর্তে দোকান খোলার সুযোগ পেয়েছি। এখন যা বিক্রি করতে পারি তাতেই খুশি। কোনো রকমে দোকান ভাড়া ও অন্যান্য খরচের টাকা উঠলেই আমরা খুশি।’

তালতলা সিটি করপোরেশন মার্কেটের একটি দোকানের বিক্রয় কর্মী মিলন বলেন, সকাল থেকে পাঁচটি পোশাক বিক্রি হয়েছে। ক্রেতারা খুব কম আসছেন। শুধু আমাদের না, মার্কেটের সবারই একই অবস্থা। আসলে কোরবানির ঈদে মানুষ খুব একটা নতুন পোশাক কেনেন না। যাদের একেবারে না কিনলেই নয়, তারাই আসছেন।’

মার্কেটটির ইমিটেশন জুয়েলারি বিক্রেতা হৃদয় বলেন, মানুষ পোশাকই কিনতে আসছে না, জুয়েলারি কিনবে কিভাবে। তারপরও ঈদের আগের দিন পর্যন্ত টুকটাক বিক্রি হবে এই আশায় আছি। পোশাক কিনতে আসলে আমাদেরও টুকটাক বিক্রি হবে।’

মৌচাক মার্কেটের ব্যবসায়ী সোহেল বলেন, রোজার ঈদে যে মাল তুলেছিলাম তার অর্ধেকই বিক্রি করতে পারিনি। আর এবার নতুন মাল তোলার তো সুযোগই পাইনি। যখন নতুন মাল দোকানে তোলার কথা, তখনই লকডাউন শুরু হয়ে গেছে। রোজার ঈদে যে মাল তোলা ছিল, তা দিয়েই কোনো রকমে চালিয়ে যাচ্ছি। মাঝে মধ্যে দুই-একজন ক্রেতা আসছেন। এতে কোনো রকমে ঈদের খরচ উঠবে বলে মনে হচ্ছে।’