লকডাউনের দুই মাসে ২ শতাধিক সিঁধেল চুরি

লকডাউনের দুই মাসে ২ শতাধিক সিঁধেল চুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সারাদেশে লকডাউন পরিস্থিতির মধ্যে এপ্রিল ও মে মাসে সিঁধেল চুরির ঘটনা ঘটেছে ২২৯টি। আর চুরির ঘটনা ঘটেছে ৬৮৮টি। তবে এসব অপরাধের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এসব অপরাধের পাশাপাশি ছিনতাইয়ের ঘটনা রয়েছে অসংখ্য। সঙ্গে রয়েছে টানা পার্টির দৌরাত্ম্য।

মেট্রোপলিটন এলাকায় বিশেষ করে রাজধানীতে গ্রিল কেটে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা বেশি ঘটছে বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন থানার দায়িত্বশীলরা। এসব অপরাধ বেড়ে যাওয়ার পেছনে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর কম নজরদারিকে দায়ী করছেন ভুক্তভোগীরা।

তাদের হিসেব অনুযায়ী, এপ্রিল মাসে সারাদেশে ডাকাতির ঘটনা ১০টি, দস্যুতা ৩২টি, দ্রুত বিচার আইনে অপরাধ ৩৭টি, সিঁধেল চুরি ৯৩টি, চুরি ২৯৩টি অপরাধসহ মোট মামলা হয়েছে ৯ হাজার ৯৮টি। মে মাসে এসব অপরাধের সংখ্যা বেড়েছে। ডাকাতি ১১টি, দস্যুতা ৫৯, দ্রুত বিচার আইনে অপরাধ ৪৪টি, সিঁধেল চুরি ১৩৬, চুরি ৩৯৫টিসহ মোট মামলা হয়েছে সাড়ে ১১ হাজার।
চুরি, ছিনতাই বা সিধেঁল চুরির মতো অনেক ঘটনা সংশ্লিষ্ট থানা পর্যন্ত যায় না। গত ১৯ জুন কুমিল্লার লাকসামের গোবিন্দপুর গ্রামে একরাতে ১১টি বাডিতে সিঁধেল চুরির ঘটনা ঘটেছে। সবগুলো বাড়িতে চোরেরা সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে চুরি করেছে। নিয়ে গেছে, মোবাইল ফোন, নগদ টাকাসহ অন্যান্য জিনিস।

লকডাউন পরিস্থিতিতে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় সেসব প্রতিষ্ঠানেও চুরির ঘটনা ঘটছে। গত ৭ জুন খুলনার সরকারি মডেল মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের জানালার গ্রিল কেটে ২১টি ল্যাপটপসহ অন্যান্য জিনিস চুরির ঘটনা ঘটেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেন শেখ বলেন, দুই জায়গায় গ্রিল কেটে চোর ভিতরে ঢুকেছিল। কম্পিউটার ল্যাবের ২১টি ল্যাপটপ নিয়ে গেছে। আমরা থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। এখনও কাউকে গ্রেফতার বা ল্যাপটপগুলো উদ্ধারের কোনও খবর জানায়নি পুলিশ।

চলমান পরিস্থিতিতে ঢাকা ছেড়েছেন অনেকে। এতে ফাঁকা পড়ে আছে বাসা বাড়ি। আর এই সুযোগটি নিচ্ছে গ্রিলকাটা চোর চক্র। নগরীর প্রায় প্রতিটি এলাকাতেই এই সময়ের মধ্যে গ্রিল কেটে চুরির ঘটনা ঘটেছে। গত ১৩ জুন ফ্ল্যাটের গ্রিল কেটে ভেতরে ঢুকে বাসায় কেউ নেই দেখে সেই বাসাতেই তিনদিন থাকে এক চোর। তিনদিন পর বাসার মালিক বিদেশে থাকা অবস্থায় চোরের হদিছ পায়। পরে পুলিশ ১৩ জুন গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের ওই বাসা থেকে চোরকে গ্রেফতার করে।

রাজধানীর সড়কগুলোতে সাধারণ মানুষের চলাচল অন্যান্য সময়ের তুলনায় কম থাকে। এই নির্জনতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে তৎপর রয়েছে ছিনতাইকারী ও টানা পার্টির সদস্যরা। মোটরসাইকেল ও প্রাইভেকারে চড়ে এসব চক্রের সদস্যরা নগরীর বিভিন্নস্থানে অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। মুখে মাস্ক পড়ে এসব ছিনতাইয়ের ঘটনায় অংশ নেওয়া অপরাধীদের শনাক্তে বেগ পেতে হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের।