রোহিঙ্গা প্রশ্নে জাতিসংঘে সোচ্চার বাংলাদেশ

রোহিঙ্গা প্রশ্নে জাতিসংঘে সোচ্চার অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশ। নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে রাখাইনের সহিংসতায় ‘বাংলাদেশি সন্ত্রাসী’দের দায়ী করার ঘটনাকে মিয়ানমার সরকারের মিথ্যে প্রচারণা আখ্যা দিয়েছেন জাতিসংঘে  বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন।  অবিলম্বে এই প্রচারণা বন্ধের তাগিদ দিয়েছেন তিনি। বৈঠকে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধ ও জাতিগত নিধনের অভিযোগ তোলা হয়েছে। পাশাপাশি জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে মিয়ানমারের সঙ্গে সমন্বিত সেনা পদক্ষেপ নিতে মিয়ানমারকে প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ।

 

নিরাপত্তা পরিষদের ওই বৈঠকে বাংলাদেশের জাতিসংঘ প্রতিনিধি মোমেন রাখাইনের সাম্প্রতিক ঘটনাকে জাতিসংঘের ধারাবাহিকতায় জাতিগত নিধন ও মানবতাবিরোধী অপরাধ আখ্যা দেন। তিনি জানান, সাম্প্রতিক রাখাইন সহিংসতা কিংবা মানবতাবিরোধী অপরাধ ও জাতিগত নিধন থেকে বাঁচতে এরইমধ্যে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা ৫ লাখ ছাড়িয়েছে। এদের মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ। সহায়তা দিতে এগিয়ে আসায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ধন্যবাদও জানানো হয়েছে ঢাকার পক্ষ থেকে।

https://i1.wp.com/img1.etsystatic.com/148/1/12322959/il_fullxfull.1151440495_3mk6.jpg?w=840&ssl=1

বাংলাদেশের স্থায়ী জাতিসংঘ-প্রতিনিধি মোমেন নিরাপত্তা পরিষদকে বলেন, ধর্ষণ-নিপীড়ন-পুড়িয়ে দেওয়া কিংবা মানুষের জমি কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে, যা ভয়াবহ নিপীড়নকেই সামনে নিয়ে আসে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সেনাঅভিযানের সমালোচনা করা হয়েছে। প্রশ্ন তোলা হয়েছে, সেনা অভিযানের এই ধরণ শান্তির পক্ষে সহায়ক কিনা। এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপও দাবি করেছে এশিয়ার এই ক্ষুদ্র দেশটি।  সেনা অভিযান শান্তির পক্ষে হুমকি কিনা নিরাপত্তা পরিষকে তা ভেবে দেখার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।

বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সংকট সমাধানের কিছু সুপারিশ হাজির করা হয়। সেগুলো হলো: সহিংসতা বন্ধ ও মানবিক সহায়তা, মিয়নামার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে রাখাইন কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো, রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নেওয়ার ১৯৯২ সালের মিয়ানমার-বাংলাদেশ চুক্তি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উপস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের জন্য মর্যাদা, স্থিতিশীলতা ও সুরক্ষা ফিরিয়ে দেওয়া।