রেডিও তেহরানের বিশ্লেষণ: ভারতে অভিনেত্রী প্রত্যুষার আত্মহত্যা ও দর্শকদের প্রতি ইঙ্গিত

ভারতে প্রত্যুষা আত্মহত্যা

নিউজ নাইন২৪ডটকম, অনলাইন প্রতিবেদক:  গত শুক্রবার (১৫ এপ্রিল. ২০১৬) আত্মহত্যা করেছে ভারতের টেলিভিশন চ্যানেলের ধারাবাহিক নাটক ‘বালিকা বধূ’র অভিনেত্রী প্রত্যুষা বন্দ্যোপাধ্যায় (২৪)। তার এই আত্মহত্যা থেকে ভক্ত বা টেলিভিশন দর্শকদের জন্য কি ইঙ্গিত রয়েছে তা নিয়ে বিশ্লেণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রেডিও তেহরান। প্রতিবেদনটি নিউজ নাইন২৪-এর পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

‘ভারতের বিনোদন জগতে আত্মহত্যার প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে। ঝলমলে ও বিপুল সম্পত্তির মাঝে থেকেও অভিনেতা-অভিনেত্রীরা আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন। বিনোদন জগতে অশ্লীলতা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এ প্রবণতা। গতকাল (শুক্রবার) আত্মহত্যা করেছে ভারতের টেলিভিশন চ্যানেলের ধারাবাহিক নাটক ‘বালিকা বধূ’র অভিনেত্রী প্রত্যুষা বন্দ্যোপাধ্যায় (২৪)।

মুম্বাই পুলিশের বরাত দিয়ে খবরটি নিশ্চিত করেছে ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যম। ধারাবাহিকটিতে প্রত্যুষা অভিনয় করতেন ‘আনন্দী’ চরিত্রে। ছোট পর্দায় অভিনয় করে দর্শক মহলে বেশ জনপ্রিয়তা কুঁড়িয়েছিলেন ২৪ বছর বয়সী প্রত্যুষা।

মুম্বাই পুলিশ জানিয়েছে,গতকাল শুক্রবার বিকেলে মুম্বাইয়ের বাড়ি থেকে গলায় ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় প্রত্যুষার। পরে তাঁকে আন্ধেরির কোকিলাবেন হাসপাতাল নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এ ব্যাপারে মুম্বাইয়ের বাঙ্গারনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তে এটিকে আত্মহত্যা বলেই ধারণা করছে মুম্বাই পুলিশ। তবে ঘটনার গভীরে যেতে তদন্ত চালিয়ে যাবে তারা। সুরতহালের পরই মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এক কর্মকর্তা।

এদিকে আরেক অভিনেতা রাহুল রাজ সিংয়ের সাথে বেশ কিছুদিন ধরেই প্রেম করছিলেন প্রত্যুষা। বিয়ের কথাও হচ্ছিল। তবে শেষ দিকে এসে নাকি টানাপড়নের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল তাঁদের সম্পর্ক। এ কারণেই প্রত্যুষার এই পদক্ষেপ কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন অনেকেই।

আর প্রত্যুষার মৃতদেহ নাকি হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন রাহুলই। এমন খবরই পাওয়া গেছে আরেক সূত্র থেকে। তবে রাহুলকে এখনো পর্যন্ত গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। এ ব্যাপারে মুম্বাই পুলিশ জানায়, তদন্তের স্বার্থে অবশ্যই রাহুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

ইসলামি বিধানে আত্মহত্যা নাজায়েজ। কোরানের আয়াত ও বিভিন্ন হাদিস অনুযায়ী আত্মহত্যার প্রতিফল হচ্ছে জাহান্নাম। যে ব্যক্তি আত্মহত্যা করে, সে শুধু তার নিজের ওপরই জুলুম করে না বরং এতে মা-বাবা, ভাইবোনসহ আত্মীয়-পরিজন সবাই খুব কষ্ট পায় এবং অত্যন্ত বিচলিতবোধ করে। যে পরিস্থিতিতেই হোক না কেন, ইসলামের দৃষ্টিতে এ এক বিরাট অন্যায়। কারণ, এর মাধ্যমে আল্লাহর বেঁধে দেওয়া নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়।

এর আগেও বাংলাদেশ ও ভারতের বিনোদন জগতের অনেক অভিনেত্রী ও অভিনেতা আত্মহত্যা করেছেন। অনেক দর্শকই তাদের প্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রীদেরকে স্বপ্নের পুরুষ বা নারী ভাবেন। নিজেকে সেভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। সেই অভিনেতা-অভিনেত্রীরাই অবশেষে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন। এ অবস্থায় এ প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে, বিনোদন জগত থেকে কী শিখছে আমাদের সমাজের মানুষেরা? এমন বিনোদন কি আমাদেরকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিচ্ছে না? এ কারণেই ধর্মে অশ্লীলতা-নির্ভর বিনোদন পরিহার করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।