রিহ্যাব ধাক্কা খেলে বাধাগ্রস্ত হবে আবাসনের স্বপ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের আবাসন ব্যবসায় কোনো ধাক্কা লাগলে অন্য সব লিংকেজ ব্যবসায়ও এর ধাক্কা লাগবে। যা বাধা হবে সাধারণ মানুষের আবাসনের স্বপ্ন পূরণে।

বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পাঁচ দিনব্যাপী রিহ্যাবের আবাসন মেলা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

তিনি বলেন, মানুষের স্বপ্ন পূরণে কাজ করছে রিহ্যাব। তবে সম্প্রতি বেশ কিছু সমস্যায় আছে তারা। এসব সমস্যা মানে সাধারণ মানুষের আবাসনের স্বপ্ন পূরণে বাধাগ্রস্ত হওয়া। আশা করি আলোচনার মাধ্যমে ড্যাপের বিষয়সহ সব সমস্যার সমাধান হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা উন্নত, অসাম্প্রদায়িক ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে। পরিবেশসহ সব কিছু দেখেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। তাহলে যে বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী কাজ করছে সে লক্ষ পূরণ হবে। এমন কোনো সেক্টর নাই যেখানে আমরা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত এগিয়ে নেই।

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব শহিদুল্লাহ খন্দকার বলেন, ড্যাপ নিয়ে ভয়-ভীতির কিছু নেই। এখনও আলোচনার সুযোগ রয়েছে। বস্তি উচ্ছেদ করা হয় না বরং সেখানেও বিল্ডিং করা হয়, যাতে তারা ভালো জীবন-যাপন করতে পারে। রিহ্যাবও এগিয়ে আসতে পারে এসব বস্তিগুলোতে নতুন আবাসনের ব্যবস্থা করতে, আমাদের সহযোগিতা থাকবে।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, এফবিসিসিআইকে ড্যাপের খসরা দিলে আমরা আলোচনার মাধ্যমে সেটা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারি। প্রধানমন্ত্রীর যে ভিশন সে লক্ষে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। আজ কৃষিসহ সব কিছু ওপরের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যেখানে বাগানসহ অনেক কিছু হচ্ছে। উন্নত বিশ্বে এমনটা হচ্ছে তাদের বিল্ডিং এর ওপরে সবজি চাষও হচ্ছে। দেশের ১০০ ইকনোমিক জোনে শিল্পের পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হচ্ছে, সেখানেও রিহ্যাবের কাজ করার সুযোগ আছে।

রাজউক চেয়ারম্যান এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী বলেন, আবাসনের সিংহভাগ পূরণ করছে রিহ্যাব। ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয় এমন কিছু সরকার করবে না, ড্যাপ নিয়ে ৩০০ সভা-সেমিনার হয়েছে। ড্যাপ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে আমাদের পরিকল্পিত-দূষণমুক্ত একটি শহর চাই। নিয়ম মেনে বিল্ডিং নির্মাণ করুণ যাতে পরিকল্পিত নগর সবাই পায়। আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি। সব অভাব-অভিযোগ-আপত্তি থাকলে আমাদের জানান আমরা সমাধান করবো। যৌক্তিক দিক অবশ্যই পূরণ করবো, আগামী এক সপ্তাহ আমাদের সেবা সপ্তাহ আছে, আসুন আপনাদের সেবায় আমরা প্রস্তুত।

রিহ্যাব সভাপতি আলমগির শামসুল আলামিন কাজল বলেন, আজ আবাসন ব্যবসায়ীরা অশনিসংকেত ও আতঙ্কিত ড্যাপ নিয়ে। আমরা ড্যাপের বিরোধী না তবে এমন কিছু করবেন না যাতে আবাসন ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। যারা আবাসনে ২৬৯ সাব সেক্টর কাজ করে, ৫০ লাখ মানুষের রুজি জড়িত। তাই এমন ড্যাপ বাস্তবায়ন করবেন যাতে আমরা স্বাগত জানাতে পারি।

রিহ্যাবের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ইন্তেখাবুল হামিদ বলেন, মানুষের অন্যতম মৌলিক চাহিদা আবাসন। তবে জমির তুলনায় বাসস্থান কম। এ সমস্যা সমাধানে কাজ করে যাচ্ছে রিহ্যাব। এ খাতের নতুন উদ্যোক্তা আসছে, বেকারত্ব দূর করার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে এ খাত।

কামাল মাহমুদ বলেন, রড-সিমেন্টের দাম যা ছিলো এখন ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এটা নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। আমরা আবাসন ব্যবসা নিয়ে আছি, যেখানে সব মানুষের আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করতে চাই। ড্যাপ বাস্তবায়ন সবার উপস্থিতিতে যেন করা হয়।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত রিহ্যাব মেলায় থাকছে ২২০টি স্টল। প্রায় ১৫০টি আবাসন প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে এতে। মেলা চলবে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। মেলায় ১৫টি নির্মাণ সামগ্রী এবং ৩০টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে।

মেলার সিঙ্গেল এন্ট্রি ফি ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর মাল্টিপল এন্ট্রির ফি ১০০ টাকা। সিঙ্গেল টিকিটে একবার ও মাল্টিপল টিকিটে পাঁচবার মেলায় প্রবেশ করা যাবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ক্রেতা দর্শনার্থীরা মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন। মেলা উপলক্ষে এন্ট্রি টিকিটের ওপর র্যাফেল ড্রতে থাকছে পুরস্কার।