রিজার্ভ চুরি নিয়ে নিউইয়র্কে মামলা আজ

নিউজ ডেস্ক:রিজার্ভ চুরির দায়ে রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশনের (আরসিবিসি) বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক আদালতে আজ বুধবার মামলা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির এ কথা জানান।

তিনি বলেন, রিজার্ভ চুরির এ মামলা ছাড়াও আগামী সপ্তাহে আরও একটি মামলা করা হবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।রিজার্ভের অর্থ ফেরত আনতে মামলার জন্য গত রোববার রাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রে গেছে।
এ বিষয়ে বিএফআইইউর প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসান বলেন, আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলার ক্ষেত্রে সব ধরনের সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক।তবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রচলিত রীতি অনুযায়ী, এ ধরনের ঘটনার পর তিন বছরের মধ্যে মামলা না করলে তার গুরুত্ব কমে যায়।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে মামলাটি করবে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়োগ দেয়া দুই ল’ ফার্ম। মামলার পর প্রয়োজনীয় সহায়তার জন্য বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে নিউইয়র্ক ফেডের প্রতিনিধিদল ফিলিপাইনে যাবে।

২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ভুয়া পেমেন্ট অর্ডারের বিপরীতে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়।এর মধ্যে শ্রীলংকায় যাওয়া দুই কোটি ডলার বিতরণ হওয়ার আগেই ফেরত পায় বাংলাদেশ।আর ফিলিপাইনে যাওয়া আট কোটি ১০ লাখ ডলারের মধ্যে দেশটির আদালতের নির্দেশে প্রায় দেড় কোটি ডলার ফেরত আসে।

এর পর থেকে পুরো অর্থ ফেরত পাওয়ার দাবি জোরালোভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখন বাকি ছয় কোটি ৬০ লাখ ডলার ফেরত পাওয়ার জন্য মামলা করা হচ্ছে।এসব অর্থের মধ্যে ১৪ মিলিয়ন ডলার ছাড়া বাকি অর্থের খোঁজ পাওয়া গেছে। যার বড় অংশই দেশটির আদালতের নির্দেশে ফ্রিজ হয়ে আছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় আরসিবিসির সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগুইতোকে সম্প্রতি ৩২ থেকে ৫৬ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ কোটি ৯০ লাখ ডলার জরিমানার আদেশ দিয়েছেন ফিলিপাইনের আদালত।এই সাজার মধ্য দিয়ে অর্থপাচারের ঘটনায় মায়া আইনগতভাবে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।এর আগেও ফিলিপাইনের বিভিন্ন আদালতে আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি উঠে এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের এক তদন্তে উঠে আসে—হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনা ঘটেছে।

চুরির সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের কারও যে সম্পৃক্ততা নেই, সেটিও পরিষ্কার হয়। এসব কারণে আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করে অর্থ ফেরত পাওয়া সহজ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।