রিজার্ভ চুরিতে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তারা ‘শতভাগ জড়িত’ : অর্থমন্ত্রী

নিউজ নাইন২৪ডটকম, ডেস্ক: বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরিতে ব্যাংকটির কর্মকর্তারা ‘শতভাগ জড়িত’ বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

তিনি পদত্যাগী গভর্নর ড. আতিউর রহমানের নজিরবিহীন সমালোচনা করে বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকে তার অবদান প্রায় শূন্য। তিনি শুধু জনসংযোগে ব্যস্ত ছিলেন।

শুক্রবার দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত এক একান্ত সাক্ষাৎকারে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
রিজার্ভ চুরিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জড়িত কিনা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই। শতভাগ জড়িত। স্থানীয়দের ছাড়া এটা হতেই পারে না। ছয়জন লোকের হাতের ছাপ ও বায়োমেট্রিকস ফেডারেল রিজার্ভে আছে। নিয়ম হলো, প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়—এভাবে ষষ্ঠ ব্যক্তি পর্যন্ত নির্দিষ্ট প্লেটে হাত রাখার পর লেনদেনের আদেশ কার্যকর হবে।’
রিজার্ভ চুরির তথ্য গোপন করায় আতিউর রহমানের কড়া সমালোচনা করেন অর্থমন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কী বলব। তিনি সংকটটির গভীরতাই বুঝতে পারেননি। আমার মনে হয়, তিনি চিন্তাই করতে পারেননি যে এটা একটা বড় ঘটনা। খবর পেয়েও তিনি দেশের বাইরে বাইরে ঘুরেছেন।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকে তার (আতিউর রহমানের) অবদান প্রায় শূন্য (অলমোস্ট জিরো)। তিনি খালি পৃথিবী ঘুরে বেড়িয়েছেন আর লোকজনকে অনুরোধ করেছেন বক্তৃতা দেওয়ার জন্য তাকে সুযোগ দিতে ও দাওয়াত দিতে। এখন বেরোচ্ছে এগুলো।’

ঘটনার প্রায় এক মাসেও সরকারের শীর্ষ মহলে না জানানোর কারণ হিসেবে আতিউর রহমান নিজে বিভ্রান্ত (পাজল্ড) হয়ে পড়েছিলেন বলে ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এটাও ভুল। আমার নিয়োগ করা গভর্নর, অথচ তিনি সব সময়ই বলে এসেছেন, প্রধানমন্ত্রী তাকে নিয়োগ দিয়েছেন। এমনকি পদত্যাগপত্রও তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে দিয়েছেন। এটা তিনি পারেন না। তার পদত্যাগপত্রটিও হয়নি। আমাদের দেশে তো ওইভাবে নিয়মকানুন মানা হয় না, অন্য দেশ হলে তো আমার অনুমতি ছাড়া তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখাই করতে পারতেন না।’

তবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘যত দূর জানি, আতিউর আর্থিকভাবে সৎ ব্যক্তি।’
অর্থমন্ত্রী বর্তমান এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানেরও কড়া সমালোচনা করেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কিছুই করেন না তিনি। খালি বক্তৃতা দেন। তারও পুরো আচরণ হচ্ছে জনসংযোগ করা। করুক, আপত্তি নেই। কিন্তু নিজের কাজটা তো করতে হবে। এক বছর হয়ে গেছে, অথচ এনবিআরের চেয়ারম্যান জানেনই না যে এনবিআর কীভাবে চলে।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, এনবিআর চেয়ারম্যান ‘এত বক্তৃতা দেন যে তাকে আসলে তথ্যসচিব বানিয়ে দেওয়া উচিত। সাবেক স্পিকার হুমায়ুন রশিদ চৌধুরীর একান্ত সচিব ছিলেন তো, তারই প্রভাব পড়েছে এনবিআর চেয়ারম্যানের ওপর… তার সঙ্গে আছেন শক্তিশালী আমলা। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, তাকে নিয়ে কাজ করা মুশকিল। তিনি রাজনীতিবিদদের সঙ্গেও যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন।’