যান চলাচল বন্ধ করে স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগ ডে পালন

নিউজ নাইন২৪ডটকম, ঢাকা: যান চলাচল প্রায় বন্ধ করে রাজধানীর ব্যস্ততম ধানমন্ডির একটি প্রধান সড়কে উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে, ঘোড়ার গাড়িসহ র‌্যালির মাধ্যমে ‘র‌্যাগ ডে’ উদযাপন করল স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ব্যাচের গুটিকতেক শিক্ষার্থী। শনিবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর প্রায় দেড়টা পর্যন্ত এই র‌্যালির স্থায়িত্ব ছিল। এর আয়োজক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ প্রোগ্রামের ৫০তম ব্যাচ।

দেখা যায়, সকাল সাড়ে ১১টা থেকে ধানমন্ডি সাতমসজিদ রোডে, মোহাম্মদপুরমুখী লেনে অবস্থিত স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস থেকে দুটি ঘোড়ার গাড়ি ও পিকআপ ভ্যানে করে বড় বড় সাউন্ড বক্সসহ র‌্যালিটি বের হয়। পুরো লেন ব্লক করে র‌্যালিটি যায় ধানমন্ডি ২৭ নং পর্যন্ত। এরপর ঝিগাতলা লেন মুখী হয়ে চলতে শুরু করে র‌্যালিটি। এ লেনটিও ব্লক অবস্থায় চলতে দেখা গেছে র‌্যালিটিকে। এভাবে ঝিগাতলা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত গিয়ে বিপরীত লেন ধরে র‌্যালিটি ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে পৌঁঁছায় দুপুর প্রায় দেড়টার দিকে।

সরেজমিনে আরও দেখা গেছে, র‌্যালিটি দুই লেন অতিক্রম করার সময় বিপুল সংখ্যক যানবাহন আটকা পড়ে এর পেছনে। বিকট শব্দে হর্নসহ বাস হেল্পারদের চিৎকার দেয়া অনুরোধ কাজে আসেনি। আশপাশে ট্রাফিক পুলিশ, সার্জেন্ট দাঁড়ানো থাকলেও তারা ছিলেন নিরব দর্শক। যানবাহনে থাকা যাত্রীরা পড়েন অসহনীয় দুর্ভোগে। আটকা পড়তে দেখা গেছে, ধানমন্ডি থানার একটি গাড়ি ও কিছু অ্যাম্বুলেন্সকেও।

যানজটে পড়ে কেয়ারি প্লাজার এখানে নেমে যান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং বিভাগের কর্মী আফজাল হোসেন। তিনি হাতঘড়ি বারবার দেখছিলেন আর বলছিলেন, এটা কোন ধরণের আনন্দ! আমরা সময় মত কাজে না যেতে পেরে মরছি, তারা এসবের কী বুঝবে। দেখেন, আশেপাশে ট্রাফিক দাঁড়িয়ে শুধু তামাশা দেখেই যাচ্ছে। জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবদুল মতিন দোষ দেন পুলিশের উপর। তিনি বলেন, এই আয়োজন অফিসিয়ালি নয়। শিক্ষার্থীদের কারণে যদি পথে কোনো দুর্ভোগ হয়, সেটা দেখার দায়িত্ব বা সে সম্পর্কে আমাদের অবহিত করার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। সড়ক এভাবে অবরুদ্ধ করে এ ধরণের কাজকে নিরুৎসাহিত করেন রেজিস্ট্রার আবদুল মতিন।

বর্তমান কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সিভিক সেন্সলেস (সামাজিক জ্ঞ্যানশূণ্য) বলে মন্তব্য করলেন পেশায় শিক্ষক মুহম্মদ আব্দুল আলী। এজন্য বর্তমান সিলেবাস ও শিক্ষা ব্যবস্থাকে দায়ি করে তিনি বলেন বর্তমান সিলেবাসে, পাঠ্যপুস্তকে তো শিক্ষণীয় কোন বিষয়ই নেই। ছাত্ররা কি শিখবে? বড়দের শ্রদ্ধা করতে হয়, প্রতিবেশীদের সাথে ভালো ব্যবহার করতে হয় এসব বেসিক নৈতিকতা-মূল্যবোধ সে সিলেবাসে নেই সেটা পড়ে আমাদের প্রজন্ম কি শিখবে? তিনি শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা ও সামাজিক মূল্যবোধহীনতার কারণে শুধু অর্থের পেছনে ছুটে চলা অভিভাবকদেরও দায়ি করেন।