মোসাদের ষড়যন্ত্র: সরকার উৎখাতে জামায়াতের অর্থায়ন!

মোসাদ

নিউজ নাইন২৪, ডেস্ক: ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে আতাঁত করে জামায়াত সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছে বলে সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। যুগান্তরে প্রকাশিত এমন একটি প্রতিবেদনে বলা হয়-

ক্ষমতাসীন সরকারকে উৎখাতে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের ষড়যন্ত্রে এবার জামায়াতে ইসলামীর সংশ্লিষ্টতার তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ষড়যন্ত্র সফল করতে বিতর্কিত এই দলটির পক্ষ থেকে মোসাদের পেছনে এরই মধ্যে বিপুল অংকের তহবিল জোগান দেয়া হয়েছে। ষড়যন্ত্রের ফ্রন্টলাইনে আছেন জামায়াতের দেশী-বিদেশী শক্তি ছাড়াও বিএনপির কয়েকজন নেতাও।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোয়েন্দা সংস্থার নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এদের বিষয়ে সরকারের তরফ থেকে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত আছে। দীর্ঘ বৈঠক শেষে মঙ্গলবার দুপুরে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে এ সংক্রান্ত একটি গোপনীয় প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। যেখানে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-প্রমাণসহ টেলিফোনে কথোপকথনের রেকর্ডও আছে।

যুগান্তরে মোসাদএদিকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাতে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থার ষড়যন্ত্রের বিষয়টি ফাঁস হওয়ায় তা এখন টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। একইসঙ্গে এ বিষয়ে প্রতিদিনই নতুন নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে। এজন্য অনেকটা নড়েচড়ে বসেছে আইনশৃংখলা বাহিনীসহ সরকারের হাইপ্রোফাইল গোয়েন্দা সংস্থা। এ নিয়ে বিস্তারিত জানতে গোয়েন্দা সংস্থার একটি প্রতিনিধি দল এখন দিল্লিতে অবস্থান করছে। এ দলটি ঢাকায় এসে পৌঁছলে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য জানা যাবে। এমনটিই বলছেন সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।

সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে মোসাদের ষড়যন্ত্র নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশের পর আইনশৃংখলা বাহিনীর মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়। একপর্যায়ে প্রকাশিত সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পর বিষয়টি সরকারের নীতিনির্ধারক মহলকেও ভাবিয়ে তোলে। এরই মধ্যে গোয়েন্দারা প্রাপ্ত তথ্যের উপযুক্ত প্রমাণসহ একটি সারসংক্ষেপ (রিপোর্ট আকারে) প্রস্তুত করেছে, যা মঙ্গলবার সরকারের কাছে সরবরাহ করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে মোসাদ ষড়যন্ত্রের আদ্যোপান্তের বর্ণনা রয়েছে। গণমাধ্যমে যার সামান্য তথ্যই প্রকাশিত হয়েছে।

ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের ঊর্ধ্বতন এজেন্ট ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টির নেতা মেন্দি এন সাফাদির ফেসবুক পেজে গিয়ে দেখা যায়, এতে বাংলাদেশবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান ও প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা হচ্ছে। বিশেষ করে বেশ কয়েকজনের হাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নির্যাতনবিরোধী প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে। এসব প্ল্যাকার্ডের একটিতে সংখ্যালঘু নির্যাতন ও হত্যা বন্ধ করার স্লোগান রয়েছে (স্টপ ভায়োল্যান্স অ্যাগেইনস্ট হিন্দু)।

ইসরাইলি বার্তা সংস্থা জেরুজালেম ডটকমের বরাতে জানা যায়, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর কথিত নির্যাতনের বিষয়ে বিশ্ব বিবেককে সোচ্চার হতে বলছে ইসরাইল। দেশটির দাবি, বাংলাদেশে বর্তমান সরকারের পতন হলে পরবর্তী সরকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন বন্ধ ও তাদের সম্মানজনক পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবে।

এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশী সংখ্যালঘুদের নিয়ে ইসরাইলের মায়াকান্না বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে অনেকটাই হাসির খোরাক জুগিয়েছে। কারণ, ইসরাইল নিজেই দীর্ঘদিন থেকে মুসলিম অধ্যুষিত ফিলিস্তিনে ব্যাপক গণহত্যা চালিয়ে আসছে।

তবে মোসাদের সঙ্গে জামায়াতের সংশ্লিষ্টতা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ভাবিয়ে তুলেছে। এদের কয়েকজন যুগান্তরকে বলেন, মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধের দায়ে এরই মধ্যে দলটির বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতার ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। আরও কয়েকজন ফাঁসির দড়ির খুব কাছাকাছি অবস্থান করছেন। তাই এ মুহূর্তে কোনো কারণে সরকারের পতন হলে রাজনৈতিকভাবে তাদের লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এসব কারণ বিবেচনায় নিলে সরকার পতনে জামায়াতের মতো যুদ্ধাপরাধী দলের এ ধরনের ষড়যন্ত্রে শামিল হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে এ বিষয়ে বিএনপির সম্পৃক্ততা এবং দলটির যেসব নেতার নাম আসছে তা অনেকটা অস্বাভাবিক। আর যদি বাস্তবে সত্য এবং প্রমাণিত হয় তবে তা বিএনপির জন্য বড় ধরনের রাজনৈতিক ক্ষতি বয়ে আনবে।