মীর কাসেমের রায় বদলাতে লেনদেনও হয়েছিল -বিচারক শামসুদ্দিন

 

নিউজ নাইন২৪ডটকম, ঢাকা: জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর যুদ্ধাপরাধ মামলার আপিলের রায় বদলাতে আর্থিক লেনদেন হয়েছিলো বলে অভিযোগ করেছেন আপিল বিভাগের সাবেক বিচারক এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে মঙ্গলবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে তিনি এ অভিযোগ তোলেন। বিচারক শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, “ওই ঘটনার জন্যই মীর কাসেমের এই রায় এসেছে। না হলে রায় অন্যদিকে চলে যেত। কত টাকার যে লেনদেন হয়েছে।” সার্ব নেতা রাদোভান কারাদজিচের যুদ্ধাপরাধের বিচার এবং বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের বিচার নিয়ে এই আলোচনায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ছিলেন প্রধান অতিথি। সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। বিচারক শামসুদ্দিন চৌধুরী তার বক্তব্যে কুমিল্লার কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকান্ড নিয়ে প্রধান বিচারকের সাম্প্রতিক মন্তব্যেরও কঠোর সমালোচনা করেন।

তিনি বলেন- “তনু হত্যা সম্পর্কে চিফ জাস্টিস যা বলেছে, তা যদি রাস্তার কোনো লোক বলতো- মানা যেত। প্রধান বিচারক বলেছে- ‘বর্তমান আইনে তনু হত্যার বিচার করা সম্ভব নয়।- এটা কেমন কথা হতে পারে?” চলতি মাসের শুরুতে এক অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারক এসকে সিনহা বলেছিলেন, তনু হত্যার ঘটনা একটি আধুনিক অপরাধ। পুরনো ফৌজদারি আইন দিয়ে এর সুষ্ঠু তদন্ত কিংবা বিচার সম্ভব নয়।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে ২০১৫৫ সালে অবসরে যাওয়া বিচারক শামসুদ্দিন চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, “দেশের সর্বোচ্চ বিচারকের কাছ থেকে এই ধরনের কথা আসায় তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে। তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে এ ধরনের বক্তব্য কোনো বিচারকের কাছ থেকে আশা করা যায় না।”

“আইনপ্রণেতারা অজ্ঞ- প্রধান বিচারকর এই কথাটা সঠিক নয়” মন্তব্য করে বিচারক শামসুদ্দিন বলেন, “আমাদের সংসদে অনেকেই আছেন যারা বিশ্বমানের। সে কারণেই সিপিএ এবং আইপিইউতে বাংলাদেশ নেতৃত্ব দিচ্ছে। সংসদে কোনো আইন তৈরি হয় না। সংসদে আইন আসে খসড়া হিসাবে। এটা তৈরি করে আইন মন্ত্রণালয়ের ড্রাফটিং ইউনিটের বিশেষজ্ঞরা। তিনি আরো বলেন- “সংসদ সদস্যদের বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার নাই। উনি (প্রধান বিচারক) কীভাবে এটা বললেন! এটা বোঝার জন্য সংবিধানের বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার নাই।”

আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান বলেন, “গত এক দেড় মাস খুব যাতনায় ভুগেছি। দুজন মন্ত্রী দন্ডিত হয়েছেন। এই দন্ড আমাদের জন্য আশীর্বাদ। উনারা দন্ডিত, আমরা গর্বিত। আই ওউন ইট।”