মসজিদের অভাবে গ্যারেজ, জিম ও দোকানে নামায পড়েন ইতালির মুসলমানরা

nicoló degiorgis hidden islam এর চিত্র ফলাফল

ডেস্ক: ইতালি রাজনৈতিকভাবে কথিত উদার গণতান্ত্রিক একটি দেশ। ইউরোপের সবচেয়ে বেশি অভিবাসীর বসবাস ইতালিতে। তাদের অধিকাংশ এশিয়ান-আফ্রিকান মুসলিম। খ্রিস্ট ধর্মের সূতিকাগারখ্যাত ভ্যাটিকান সিটিও অবস্থিত ইতালির রোম শহরে।

ইতালিতে প্রচুর মুসলমানের বসবাস। কিন্ত সেখানে কোনো মসজিদ না থাকায় আশির দশকে সউদী বাদশার উদ্যোগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, লিবিয়া, কাতার, ইন্দোনেশিয়াসহ বেশ কয়েকটি মুসলিম দেশের সম্মিলিত অর্থায়নে নির্মাণ করা হয় ইউরোপের সর্ববৃহৎ দৃষ্টিনন্দন রোম কেন্দ্রীয় মসজিদ কমপ্লেক্স। ১৯৯৫ সালে সর্বসাধারণের জন্য এটি উন্মুক্ত করা হয়।

নব্বই দশকের শেষ নাগাদ ইতালিতে রেকর্ডসংখ্যক মুসলমান জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ফলে মুসলিম জনবহুল এলাকায় সময়ের প্রয়োজনেই সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে কিছু নামাযের জায়গা প্রতিষ্ঠিত হয়। এগুলো মুসুল্লিদের দানে পরিচালিত হয়ে থাকে। কিন্তু নামাজের জন্য এসব স্থান যথেষ্ট নয়।

ইতালিতে বসবাসরত মুসলমানদের নামায আদায়ের জন্য উপযুক্ত জায়গা খুঁজে পেতে কেমন অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়, তা উঠে এসেছে দেশটির এক আলোকচিত্রীর ক্যামেরায়। প্রকাশিত এসব ছবিতে দেখা গেছে, সেখানকার মুসলমানদের একটি বড় অংশ নামায আদায়ের জন্য গ্যারেজ, শরীরচর্চা কেন্দ্র (জিম) এবং দোকানকে বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

ইতালির নিকোলো ডেজিয়রজির পুরস্কারজয়ী গ্রন্থ ‘হিডেন ইসলাম’-এর ভূমিকায় মার্টিন পার লিখেছে, ‘ইতালির সংবিধানে বৈষম্য ছাড়া ধর্মপালনের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। দেশটিতে ১৩ লাখ ৫০ হাজার মুসলমান রয়েছেন। অথচ দেশটিতে সরকার অনুমোদিত মসজিদ মাত্র ৮টি।’

সে আরো জানায়, এখানে মুসলিমরা নামাযের জন্য অনেক অস্থায়ী জায়গা গড়ে তুলেছেন। এসব জায়গার মধ্যে গ্যারেজ, দোকান, গুদামঘর এবং পুরাতন কারখানাও রয়েছে। ‘হিডেন ইসলাম’ বইয়ে ইতালিতে ইবাদতের শান্তি ও রাজনীতির উত্তেজনার মধ্যে বৈপরিত্য ফুটিয়ে তুলেছে ডেজিয়রজি। পহ দেখিয়েছে, একটি ধর্মের সাড়ে ১৩ লাখ অনুসারীর প্রার্থনা করার জন্য সরকারিভাবে অনুমোদিত মসজিদ মাত্র আটটি। যেহেতু বিভিন্ন কারণে ইতালিতে মসজিদ প্রতিষ্ঠা করা কঠিন। তাই বিকল্প হিসেবে গ্যারেজ, ভবনের নিচতলা কিংবা গুদামকে নামাযের জন্য ব্যবহার করেন ইতালির মুসলিমরা। এসব স্থানকে বলা হয় মুসাল্লা।

এছাড়া দেশটিতে মুসলিমদের বেশকিছু ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র রয়েছে। সেগুলোও নামাজের জন্য ব্যবহার করা হয়। গোটা ইতালিতে এমন ৮০০ ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও মুসাল্লা রয়েছে। সূত্র: ইসলাম অনলাইন