ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর অর্ধশত কোটি টাকার বেশি কর ফাঁকি

ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর অর্ধশত কোটি টাকার বেশি কর ফাঁকি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিক্রয় কম দেখিয়ে প্রায় ৫৭ কোটি টাকার কর ফাঁকি দিয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড (বিএটিবি)। এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কর মামলা নিষ্পত্তির করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ। একই সঙ্গে কর মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করে ফাঁকি দেয়া টাকা আদায়ের ব্যবস্থা নিতে জোর দেয়ার বলা হয়েছে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদনে। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএটিবি প্রকৃত বিক্রয় কম দেখিয়ে তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে আয় নির্ধারণ করে। এতে বিক্রয়ের পরিমাণ অনুযায়ী ২০১৬-১৭ করবর্ষে কোম্পানিটির যে আয়কর দেয়ার কথা, তার চেয়ে ৫৬ কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার ৭৩৯ টাকা কম কর দেয়া হয়েছে। এজন্য কর মামলা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহৎ করদাতা ইউনিট (আয়কর) এক্ষেত্রে আয়কর আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার কারণে সরকারি কোষাগারে আয়কর কম জমা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, করদাতা কোম্পানি বিএটিবি তাদের আয়কর রিটার্নের সঙ্গে দাখিল করা বার্ষিক প্রতিবেদনে স্থানীয় গ্রস বিক্রি দেখিয়েছে ১৪ হাজার ১৬৩ কোটি ৮৫ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। গ্রস বিক্রি থেকে সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট বাবদ ১০ হাজার ৩৬১ কোটি ৪২ লাখ ১৬ হাজার টাকা বাদ দিয়ে স্থানীয় নিট বিক্রি দেখানো হয়েছে তিন হাজার ৮০২ কোটি ৪৩ লাখ ৭৭ হাজার টাকা।

বিএবিটি মূল্য সংযোজন কর বিধিমালা ১৯৯১-এর বিধি ২৪ (১) অনুযায়ী মূসক-১৯ এ বিক্রির বিপরীতে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক দেখিয়েছে ১০ হাজার ৯১ কোটি ৮৮ লাখ ৯২ হাজার ৩৫৭ টাকা। এতে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাবদ বিক্রি থেকে অতিরিক্ত কমানো হয়েছে ২৬৯ কোটি ৫৩ লাখ ২৩ হাজার ৬৪৩ টাকা। বিক্রি থেকে অতিরিক্ত বিয়োজন করে আয় কম দেখানোর কারণে গ্রস প্রফিট (জিপি) ১২৬ কোটি ১৯ লাখ ৫০ হাজার ৫৩০ টাকা নিট লাভ কম দেখানো হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিষয়টি চিঠি দিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানটিকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। বিএবিটির বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগসহ কর মামলাটি নিরীক্ষার জন্য এনবিআর থেকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। অভিযোগের বিষয়গুলো আইনানুগ বিবেচনা করে কর মামলা নিষ্পত্তি করা হবে।

প্রায় ৫৭ কোটি টাকার কর ফাঁকির বিষয়ে বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হয় বিএবিটির হেড অব পাবলিক অ্যাফেয়ারস্ অ্যান্ড কোম্পানি সেক্রেটারি মো. আজিজুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, যোগাযোগের জন্য এই প্রতিবেদকের সেল নাম্বার কোম্পানির সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল ব্যবস্থাপক বরাবর পাঠানো হয়েছে। কিন্তু দু’দিন অপেক্ষা করেও সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপকের কাছ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।