বৈঠকে বসছে হাসিনা-মোদি
ডেস্ক: বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করতে আগামী মাসেই ভারত যাচ্ছে। ভারতের পর্যটন নগরী গোয়ায় অনুষ্ঠেয় ব্রিকস-বিমসটেক আউটরিচে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক হবে। এতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে সন্ত্রাস দমন। আগামী ১৫ ও ১৬ অক্টোবর গোয়ায় অর্থনৈতিকভাবে উদীয়মান ও বিশ্ব রাজনীতিতে ক্রমবর্ধমান প্রভাব বিস্তারকারী দেশগুলোর জোট ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে যোগ দেবে রাশিয়া, চীন, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতের সরকারপ্রধানরা। সম্মেলন শেষে অবকাশকালে যোগ দেবে বিসমটেক নেতারা। এতে যোগ দেয়ার জন্য বাংলাদেশ, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, নেপাল, ভুটান ও শ্রীলঙ্কার সরকারপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে মোদি।
বাংলাদেশসহ বিমসটেক নেতারা এতে যোগ দেয়ার বিষয়টি ইতোমধ্যে নিশ্চিত করেছে। অর্থাৎ ব্রিকস-বিমসটেক মিলে ১১টি দেশের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ গোয়ায় মিলিত হচ্ছে। এবার দিবস শীর্ষ সম্মেলনে অর্থনৈতিক ইস্যুর পাশাপাশি সন্ত্রাস দমন বিশেষ গুরুত্ব পাবে। আর বিসমটেক নেতাদের সাথে আলোচনায়ও নরেন্দ্র মোদি সন্ত্রাস দমনে সহযোগিতার উপর গুরুত্বারোপ করবে। কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তান এবং ভারতের মধ্যে চলমান যুদ্ধাবস্থার মধ্যে এই বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই গুরুত্ব পাবে।
ভারত দখলকৃত কাশ্মীরের উরির সেনা ঘাঁটিতে স্বাধীনতাকামীদের হামলায় ১৮ জন হানাদার সেনা নিহত হওয়ার পর দিল্লি ও ইসলামাবাদের মধ্যে উত্তেজনা চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। হানাদার ভারত এজন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করেছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক আগ্রাসন চালানোর জন্য হানাদার ভারতের অভ্যন্তরে থেকে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়। তবে ভারত সরকার সরাসরি সামরিক আগ্রাসন চালানোর চেয়ে কূটনৈতিকভাবে পাকিস্তানকে কোণঠাসা করার নীতি নিয়েছে। জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে পাকিস্তান ও ভারত পরস্পরকে কঠোর ভাষায় আক্রমণ করেছে।
গত শনিবার বিজেপি’র জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে বিশ্বসন্ত্রাসী নেতা মোদি বলেছে, পাকিস্তানের জন্য গোটা এশিয়ায় রক্ত ঝরছে। এশিয়ায় সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটলেই সবাই একটি দেশের দিকেই আঙুল তুলছে। ওসামা বিন লাদেনের মতো সন্ত্রাসবাদীকেও আশ্রয় দিয়েছিল এই দেশটি। বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানও পাকিস্তানের সন্ত্রাসী তৎপরতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না।
পাকিস্তানের সঙ্গে সার্কের দুই সদস্য রাষ্ট্র বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের সম্পর্ক এখন বেশ নাজুক অবস্থায় রয়েছে। এই অবস্থায় ভারত দুই দেশকে সঙ্গে নিয়ে ইসলামাবাদে নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় সার্ক শীর্ষ সম্মেলন বয়কটের মাধ্যমে পাকিস্তানকে একটি জবাব দিতে পারে। উরির ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতের পাশে থাকার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই ধরনের মনোভাব পোষণ করেছে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি।
ব্রিকস-বিমসটেক আউটরিচে নরেন্দ্র মোদির সাথে বৈঠকের পর সার্ক সম্মেলনে যোগ দেয়া বা না দেয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোয়াজ্জেম আলী সম্প্রতি ভারতের গণমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের বিষয়ে এক সাক্ষাৎকারে এই তথ্য জানিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকে সার্ক নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে জানান তিনি।