বিদ্যুতে খরচ বেড়েছে সাত পয়সা

বিদ্যুতে খরচ বেড়েছে সাত পয়সা

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ গড়ে ইউনিট প্রতি সাত পয়সা করে বেড়েছে। পিডিবি বলছে ২০১৯-২০ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরের হিসাব পযালোচনা করে এই বৃদ্ধি চিহ্নিত করা হয়েছে।

২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ ছিল ৫ টাকা ৯১ পয়সা। ২০২১-২২ এ বেড়ে হয়েছে ৬ টাকা ৬১ পয়সা। বছর ঘুরতেই বিদ্যুৎখাতে প্রায় ১০ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হয়েছে।

পিডিবি জানিয়েছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ ছিল ৪১ হাজার ১৯৮ কোটি টাকা। যা পরের অর্থবছরে বেড়ে হয়েছে ৫১ হাজার ৮৭৮ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। উৎপাদন বেড়ে যাওয়াতেই খরচ বেড়েছে বলে জানা গেছে।

পিডিবি সূত্র বলছে, আইপিপি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন খরচ প্রায় এক টাকা করে বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচে এই হেরফের হয়েছে। হিসাব পর্যালোচনা করে দেখা গেছে সরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বদলে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বেশি বিদ্যুৎ কেনায় উৎপাদন খরচ বেড়েছে।
পিডিবির এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সরকারের নিজস্ব বিদ্যুৎকেন্দ্র (পিডিবি)-এর উৎপাদন খরচ বছরের ব্যবধানে কমেছে ৯.৬৬ ভাগ। গত ২০১৯-২০ এ যেখানে ইউনিট প্রতি উৎপাদন ছিল ৪ টাকা ৪৭ পয়সা, সেখানে ২০২১-২২ অর্থবছরে কমে হয়েছে চার টাকা ৪৩ পয়সা। একই সঙ্গে কমেছে ভাড়ায়চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন খরচ।

জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে আইপিপি বিদ্যুৎকেন্দ্রর উৎপাদন ব্যয় ছিল প্রতি ইউনিট সাত টাকা। কিন্তু গেল অর্থবছরে তা বেড়ে হয়েছে ৮ টাকা শূন্য ২ পয়সা। একইভাবে রেন্টালে (ভাড়ায়চালিত) কেন্দ্রের উৎপাদন ব্যয় ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮ টাকা ৩৪ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৭ টাকা ৪৭ পয়সা।

সরকারি কোম্পানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের খরচ ৩ টাকা ৮৬ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪ টাকা ২৯ পয়সা। ভারতে বিদ্যুতের আমদানি ব্যয় ৬ টাকা ০১ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ৫ টাকা ৮০ পয়সা। এর বাইরে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রতি ইউনিটে ১৬ পয়সা এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন তহবিল থেকে ১৫ পয়সা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে।

সরকারের তরফ থেকে অনেক দিন ধরেই বলা হচ্ছিল বিদ্যুৎতের উৎপাদন খরচ নিয়ন্ত্রণ করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু উৎপাদন খরচ বেড়েই চলছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোন ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বেশি বিদ্যুৎ কিনলে উৎপাদন খরচ নিয়ন্ত্রণে থাকবে আগে সে বিষয়ে একটি পর্যালোচনা থাকা প্রয়োজন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ইজাজ হোসেন বলেন, বিশেষ আইনের কারণে অনেক কিছুরই দরদাম করা হয়নি। নিজেদের ইচ্ছেমতো দামে বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। সবার আগেই এই আইন বাতিল করা জরুরি। এ ছাড়া বিদ্যুৎখাতে স্বচ্ছতা আনা দরকার। তা না হলে খরচ বেশিই আসবে। নিজেদের জ্বালানির ব্যবহারও বাড়াতে হবে।

তিনি আরও বলেন, একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হয়েছে। কিন্তু চাহিদা না থাকায় সেগুলো বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে না। বসে বসে ক্যাপাসিটি চার্জ নিচ্ছে। এসব বন্ধ করতে হবে।