বিদ্যুতে অতিরিক্ত বিল করার পক্ষে প্রতিমন্ত্রীর সাফাই

বিদ্যুতে অতিরিক্ত বিল করার পক্ষে প্রতিমন্ত্রীর সাফাই

নিজস্ব প্রতিবেদক: পূর্বের মাস গুলোর চেয়ে লকডাউনকালীন মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বিদ্যুৎ বিল নিয়ে চরম দুশ্চিন্তা ও হয়রানিতে আছেন দেশের মানুষ। বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের এহেন কর্মকা-ে মানুষ চরমভাবে ক্ষুব্ধ।

এ নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে গ্রাহকদের বাড়তি বিলের পক্ষেই সাফাই করলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। বুধবার আয়োজিত ‘২০২০-২১ অর্থ বছরে বিদ্যুৎখাতের বাজেট: অগ্রাধিকার খাতে বরাদ্দ ও বিকল্প প্রস্তাব শীর্ষক’ এক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী একথা বলেন।

নসরুল হামিদ এমপি বলেন, তবে আমি এটা স্বীকার করি আমাদের ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিগুলো অনেক জায়গায় অতিরিক্ত বিল করেছে। সেটা আমরা দেখছি। কোনো সমস্যা নেই। মিটার তো দেওয়াই আছে। প্রয়োজন হলে আগের মাসের মিটার দেখে সমাধান দিতে পারি।

তিনি আরও বলেন, দেশে ৪ কোটি বিদ্যুৎ গ্রাহকের মধ্যে মাত্র ৩০ লাখ প্রিপেইড মিটার রয়েছে। এসময় সবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিল করতে গেলে অনেক মানুষ করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হতো। বিষয়টি বিবেচনা করে একটি বিল তৈরি করা হয়েছে। যাদের বিলে অসঙ্গতি রয়েছে তারা আগের মাসের বিল নিয়ে অফিসে গেলে সমন্বয় করে দেওয়া হচ্ছে।

‘বিষয়টি আমার নজরে এসেছে, কোনো সমস্যা নেই। নিজ নিজ এলাকার বিদ্যুৎ অফিসে গেলে ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে। চার কোটি গ্রাহকের মধ্যে আমরা ধরে নিয়েছি চার থেকে পাঁচ লাখ গ্রাহকের একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে। কিছু শহর এবং কিছু গ্রাম এলাকায়।’
তিনি বলেন, অনেকের প্রশ্ন থাকতে পারে এটা কেন হলো। এটা কিন্তু আপনার মাথায় রাখতে হবে, আপনি কিন্তু এখন বাসায় থাকছেন। এসি-ফ্যান বেশি ব্যবহার হচ্ছে। এটা কিন্তু আমরা কেউ চিন্তা করিনি। আমি বাসায় থাকলে আমার রুমের এসি-ফ্যানটা বন্ধ থাকতো। এনার্জি নিতো না।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনেকেই হয় তো মনে করতে পারেন আমি বাসায়ই তো ছিলাম। আমার কেন কম হবে না। আমাকে অনেকে ফোন করেছেন। বাসায় থাকলে আপনার কম হবে অফিসে থাকলে কম হবে না। আমি বুঝলাম না। তখন তাকে বোঝালাম আপনি বাসায় যে রুমে আছেন সেখানে তো এসি ছেড়ে আছেন। বললো হ্যাঁ আছি। দিনের বেলায় যখন অফিসে থাকতেন তখন বন্ধ থাকতো তাহলে বিদ্যুৎ বিল কম আসতো।

বৈঠকে অধ্যাপক রেহমান সোবহান ওই অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ নিয়ে তিনটি প্রশ্ন রাখেন। তিনি বলেন, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অনুসারে বিদ্যুতের চাহিদার কোনো প্রাক্কলন আছে কি না? ভাড়ায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর বাদ দেয়ার কোনো পরিকল্পনা আছে কি না? বিদ্যুৎ উৎপাদনের সঙ্গে ব্যবসায়িক চাহিদার কোনো সমন্বয় আছে কি?

এসব বিষয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ভাড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো আর রাখতে চাই না। গত বছর থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে কিছু সরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশাপাশি ভাড়ায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে অবসরে পাঠানো হবে। বিদ্যুৎ খাতে বিদেশি অর্থায়ন আনতে ‘বিদ্যুৎ বন্ড’ ছাড়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

এ সময় সাবেক বিদ্যুৎসচিব এম ফাওজুল কবির খান বলেন, সারা দুনিয়া ভাড়ায় বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে সরে আসছে।