বিদেশে ‘সেকেন্ড হোম’ কেনার হিড়িক পড়েছে -মাহবুবুর

নিউজ নাইন২৪ডটকম, ঢাকা: বাংলাদেশের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের বিদেশে ‘সেকেন্ড হোম’ কেনার হিড়িক পড়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘গত ৪৪ বছরে বাংলাদেশ থেকে ৯ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। ধনাঢ্য ব্যক্তিরা দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগে সবকিছু পাচার করছেন।’ শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দল আয়োজিত ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও আমাদের সংস্কৃতি’-শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন জেনারেল মাহবুব।

চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন প্রসঙ্গে মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনের নামে দেশে রক্তের হোলিখেলা চলছে। সারাদেশে রক্তগঙ্গা বয়ে যাচ্ছে। অথচ তৃণমূলে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করার জন্যই এ নির্বাচন। কিন্তু ভিন্ন দল কিংবা ভিন্ন মতের কেউ এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তাদের গুম-খুন করা হচ্ছে, নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। উপজেলা, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের নির্বাচনেও আমরা একই পরিস্থিতি দেখেছি। এ ধরনের সহিংসতাপূর্ণ নির্বাচন দেশবাসী চায় না।’

তিনি বলেন, ‘রাজনীতির সঙ্কট আজকে দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা। এখানে ভালো কিছু নেই। আছে হিংসা-বিদ্বেষ, প্রতিহিংসা। এসবের মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে কখনো সুষ্ঠু ধারা চলতে পারে না। এর থেকে আমাদেরকে বের হয়ে আসতে হবে।’ বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘আমরা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে চলছি। দুর্নীতি আকাশচুম্বী রূপ পরিগ্রহ করেছে, যা মানুষ আগে কখনো দেখেনি। ব্যাংক লুট হয়ে যাচ্ছে। অভিনব কায়দায় লোপাট হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভও। পৃথিবীতে এ ধরনের অভিনব লুট আমরা আগে দেখেনি।’

জেনারেল মাহবুব অভিযোগ করে বলেন, ‘আজকে আমাদের দেশ থেকে বিদেশী ব্যাংকে টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। গত ৪৪ বছরে গোটা দেশ থেকে ৯ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। ধনাঢ্য ব্যক্তিরা আজকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, মালয়েশিয়া, মরিশাসসহ বিভিন্ন দেশে ‘সেকেন্ড হোম’ কিনছে। ‘সেকেন্ড হোম’ কেনার হিড়িক পড়ে গেছে। এই একটি ট্রেন্ড (প্রথা) চালু হয়ে গেছে। তাদের একাধিক (বাংলাদেশ ও অন্য দেশ) নাগরিকত্বও রয়েছে। এই সুযোগে তারা দেশ থেকে সবকিছু পাচার করছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ব্যাংকগুলোতে আজ লুটপাট চলছে। এই লুটপাটের কারণে ব্যাংকগুলো আজ ফোকলা হয়ে যাচ্ছে। অর্থমন্ত্রী ভালো মানুষ। তিনি বলছেন, অর্থ চুরির ঘটনায় আমরা জড়িতদের (চোর) ধরতে পারছি না। অর্থমন্ত্রী যখন এই রকম একটা অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন, তখন বুঝতে হবে- দেশের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। বলা হচ্ছে, ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে। কিন্তু এভাবে ব্যাংক লুট ও বিদেশে অর্থ পাচারের ঘটনা অব্যাহত থাকলে আমাদের পক্ষে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়া কষ্টকর হয়ে যেতে পারে।’