বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছচাষে নতুন প্রযুক্তি

খুবি সংবাদদাতা: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) একদল গবেষক বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে কয়েকটি প্রজাতির মাছ চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন। বৃষ্টির পানির গুণাগুণ রক্ষা করে বিনা অপচয়ে ও পুনরায় ব্যবহার না করেই এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা যায়। এছাড়া গবেষকরা মাছের এমন একটি সাশ্রয়ী মূল্যের শর্করাপ্রধান খাদ্য উদ্ভাবন করেছেন যাতে মাছের প্রজাতিভিত্তিক স্বাদ, বর্ণ ও গন্ধ পাওয়া যায়।

প্রকল্পের প্রধান ইনভেস্টিগেটর ও সমন্বয়কারী ড. নাজমুল আহসান জানান, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে পানিবায়ুতে টেকসই খাদ্য নিরাপত্তার উন্নয়নে সলিডারেট এশিয়া ও ওয়ার্ল্ড ফিসের সহযোগিতায় খুবির ফিসারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি বিভাগ ও নেদারল্যান্ডের ওয়াগিনন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের যৌথ উদ্যোগে এ গবেষণা করা হচ্ছে।

তারা তেলাপিয়া, শিং, কৈ ও টেংরা মাছ নিয়ে কাজ করেছেন। এরমধ্যে টেংরা মাছ ছাড়াও অন্য তিনটি মাছের ক্ষেত্রে আশানুরূপ সাফল্য পেয়েছেন। বৃষ্টির পানিতে এ মাছ চাষ হওয়ায় ও পানির গুণাগুণ রক্ষায় মাছের প্রকৃত স্বাদ, গন্ধ ও বর্ণ পাওয়া যায়। এ প্রকল্পের অধীনে ২০২০ সালের শুরু থেকে পুকুরের পানিতে গলদার পোনা উৎপাদনের জন্য প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয় ও তা মৎস্যচাষিদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া হয়।

তিনি আরও জানান, তাদের তৈরি শর্করাবান্ধব প্রাকৃতিক খাবার ভালো কাজ করেছে। সাধারণত মাছের খাবার তৈরিতে আমিষজাত উপকরণ বেশি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু তারা মাছের যে নতুন খাবার তৈরি করেছেন, তাতে কোনো গ্রোথ হরমোন বা অজৈবিক উপকরণ ব্যবহার করা হয়নি। এছাড়া এতে একটি প্রাকৃতিক জৈবিক উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে, যা মাছের স্বাদ বাড়ায়।

এ গবেষণায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সম্পৃক্ত থাকায় তারা প্রায়োগিক গবেষণা সম্পর্কে হাতে-কলমে শিক্ষার সুযোগ পেয়েছে। যা তাদের বহুমুখী গবেষণায় কাজে আসবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এ বিষয়ে খুবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘এ গবেষণার ফল উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছালে তারা এটি ব্যবহার করে আর্থসামাজিকভাবে লাভবান হতে পারবে। ফলে দেশের মাছচাষে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।