বাংলাদেশের সিলেবাসে হিন্দুত্ববাদ নিয়ে বিতর্ক কলকাতায়

নিউজ নাইন২৪ডটকম, ডেস্ক: বাংলাদেশে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রণীত পাঠ্য বইতে হিন্দু ও নাস্তিক্যবাদ প্রাধান্য  দিয়ে যে সিলেবাস তৈরি করেছে তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক ও বিশেষজ্ঞ মহলে। অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে এ নিয়ে সমালোচনা আরো তুঙ্গে। সম্প্রতি কলকাতার অনলাইন নিউজ পোর্টালেও এনিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। নিউজ নাইনের পাঠকদের জন্য তা হুবহু তলে ধরা হলো-

প্রাথমিক এবং উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তকের সিলেবাস থেকে বাদ পড়েছে ইসলাম। তার বদলে যুক্ত হয়েছে হিন্দুত্ববাদ। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশে সিলেবাস থেকে ইসলামিক বিষয় বর্জন করে হিন্দুত্ববাদ প্রবেশ করানো নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। যদিও এই বিষয়ে সরকার পক্ষের যুক্তি দেশে সেকুলার শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করার জন্যেই এহেন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চলতি মাসের তিন তারিখে বাংলাদেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে বয়া হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার শিক্ষানীতি-২০১০ এর সুপারিশের আলোকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক শিক্ষা আইন, ২০১৬ প্রণয়ন করা হয়েছে। জমত যাচাইয়ের জন্য খসড়াটি মন্ত্রণালয়ের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। সরকারের তরফে চলতি মাসের আগামী দশ তারিখের মধ্যে দেশবাসীর থেকে মতামত নেওয়া হবে ইমেল মারফত।

Bangladesh

 

দেখে নিন কোন বিষয়গুলো বাদ পড়েছে আর কোন বিষয়গুলো যুক্ত হয়েছে:

পাঠ্যপুস্তকে বাংলা বই থেকে বাদ দেওয়া হলো-

১) দ্বিতীয় শ্রেণী: ‘সবাই মিলে করি কাজ’ – শিরোনামে মুসলমানদের শেষ নবীর সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত।
২) তৃতীয় শ্রেণী: ‘খলিফা হযরত আবু বকর’ শিরোনামে একটি সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত।
৩) চতুর্থ শ্রেণী: খলিফা হযরত ওমর এর সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত।
৪) পঞ্চম শ্রেণী: ‘বিদায় হজ্জ’ নামক শেষ নবীর সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত।
৫) পঞ্চম শ্রেণী: বাদ দেওয়া হয়েছে কাজী কাদের নেওয়াজের লিখিত‘শিক্ষা গুরুর মর্যাদা’ নামক একটি কবিতা। যা বাদশাহ আলমগীর মহত্ব বর্ণনা উঠে এসেছে। এবং শিক্ষক ও ছাত্রের মধ্যে আদব কেমন হওয়া উচিত তা বর্ণনা করা হয়েছিলো।
৬) পঞ্চম শ্রেণী: শহীদ তিতুমীর নামক একটি জীবন চরিত। এ প্রবন্ধটিতে শহীদ তিতুমীরের ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘটনা উল্লেখ ছিলো।
৭) ষষ্ঠ শ্রেণী: ড. মুহম্মদ শহীদু্ল্লাহ লিখিত ‘সততার পুরষ্কার’ নামক একটি ধর্মীয় শিক্ষনীয় ঘটনা।
৮) ষষ্ঠ শ্রেণী: মুসলিম দেশ ভ্রমণ কাহিনী- ‘নীলনদ আর পিরামিডের দেশ’।
৯) ষষ্ঠ শ্রেণী: মুসলিম সাহিত্যিক কায়কোবাদের লেখা ‘প্রার্থনা’ নামক কবিতাটি।
১০) সপ্তম শ্রেণী: বাদ দেয়া হয়েছে মরু ভাষ্কর নামক শেষ নবীর সংক্ষিপ্ত জীবন চরিত।
১১) অষ্টম শ্রেণী: বাদ দেওয়া হয়েছে‘বাবরের মহত্ত্ব’ নামক কবিতাটি।
১২) নবম-দশম শ্রেণী: সর্ব প্রথম বাদ দেওয়া হয়েছে মধ্যযুগের বাংলা কবি শাহ মুহম্মদ সগীরের লেখা ‘বন্দনা’ নামক ধর্মভিত্তিক কবিতাটি।
১৩) নবম-দশম শ্রেণী: এরপর বাদ দেওয়া হয়েছে মধ্যযুগের মুসলিম কবি‘আলাওল’ এর ধর্মভিত্তিক ‘হামদ’ নামক কবিতাটি।
১৪) অষ্টম শ্রেণী থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বেগম সুফিয়া কামালের লেখা “প্রার্থনা” কবিতা।
১৫) নবম-দশম শ্রেণী: বাদ দেওয়া হয়েছে মধ্যযুগের মুসলিম কবি আব্দুল হাকিমের লেখা বঙ্গবাণী কবিতাটি।
১৬) নবম-দশম শ্রেণী: গোলাম শিক্ষণীয় লেখা জীবন বিনিময় কবিতাটি। কবিতাটিতে মোঘল বাদশাহ বাবর ও তার পুত্র হুমায়ুনকে নিয়ে লেখা।
১৭) নবম-দশম শ্রেণী: কাজী নজরুল ইসলামের লেখা বিখ্যাত ‘উমর ফারুক’কবিতা।

এর বদলে বাংলা বইয়ে প্রবেশ করেছে-
১) পঞ্চম শ্রেণী: স্বঘোষিত নাস্তিক হুমায়ুন আজাদ লিখিত ‘বই’ নামক একটি কবিতা, যা মূলত মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কোরআন বিরোধী কবিতা।
২) ষষ্ঠ শ্রেণী: প্রবেশ করানো হয়েছে ‘বাংলাদেশের হৃদয়’ নামক একটি কবিতা। যেখানে রয়েছে হিন্দুদের দেবী দূর্গার প্রশংসা।
৩) ষষ্ঠ শ্রেণী: সংযুক্ত হয়েছে ‘লাল গরুটা’ নামক একটি ছোটগল্প। যা দিয়ে মুসলিম শিক্ষার্থীদের শেখানো হচ্ছে গরু হচ্ছে মায়ের মত, অর্থাৎ হিন্দুত্ববাদ।
৪) ষষ্ঠ শ্রেণী: অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ভারতের হিন্দুদের তীর্থস্থান রাঁচি’র ভ্রমণ কাহিনী।
৫) সপ্তম শ্রেণী: `লালু’ নামক গল্পে বাচ্চাদের শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে পাঁঠাবলির নিয়ম কানুন।
৬) অষ্টম শ্রেণী: পড়ানো হচ্ছে হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ ‘রামায়ণ’ এর সংক্ষিপ্তরূপ।
৭) নবম-দশম শ্রেণী: প্রবেশে করেছে‘আমার সন্তান’ নামক একটি কবিতা। কবিতাটি হিন্দুদের ধর্ম সম্পর্কিত‘মঙ্গলকাব্যের অন্তর্ভুক্ত, যা দেবী অন্নপূর্ণার প্রশংসা ও তার কাছে প্রার্থনাসূচক কবিতা।
৮) নবম-দশম শ্রেণী: অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ভারতের পর্যটন স্পট ‘পালমৌ’ এর ভ্রমণ কাহিনী।
৯) নবম-দশম শ্রেণী: পড়ানো হচ্ছে ‘সময় গেলে সাধন হবে না’ শিরোনামে বাউলদের বিকৃত যৌনাচার।
১০) নবম-দশম শ্রেণী: ‘সাকোটা দুলছে’ শিরোনামের কবিতা দিয়ে ৪৭ এর দেশভাগকে হেয় করা হচ্ছে, যা দিয়ে কৌশলে ‘দুই বাংলা এক করে দেওয়া’ অর্থাৎ বাংলাদেশকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হতে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে।
১১) প্রাথমিক ও উচ্চবিদ্যালয় গুলোতে দেওয়া হয়েছে (নিজেকে জানুন) নামক যৌন শিক্ষার বই।
১২) নবম-দশম শ্রেণী: প্রবেশ করেছে ‘সুখের লাগিয়া’ নামক একটি কবিতা, যা হিন্দুদের রাধা-কৃষ্ণের লীলাকৃর্তণ।