কিংবদন্তী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৬তম জন্মদিন আজ
নিউজ নাইন২৪ডটকম, ঢাকা: আজ ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৬তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত এই নেতা ১৯২০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় এই বয়সী অনেক রাজনৈতিক এবং বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিত্ব এখনও স্ব-স্ব কমর্কান্ডে নিয়োজিত থাকার নজির থাকলেও আমাদের বঙ্গবন্ধুকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মাত্র ৫৫ বছর বয়সে ঘাতকদের হাতে প্রাণ দিতে হয়েছিল।
জাতি যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আগামীকাল দিবসটি উদযাপন করবে। দিনটিতে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ১৮ মার্চ বিকেল ৩টায় বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সন্মেলনে কেন্দ্রে আলোচনা সভা। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪০ সালে সর্বভারতীয় মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে যোগদানের মাধ্যমে তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ১৯৪৬ সালে তিনি কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ (বর্তমানে মওলানা আজাদ কলেজ) ছাত্র ইউনিয়নের (ছাত্র সংসদ) সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
বঙ্গবন্ধু ১৯৪৯ সালে তৎকালীন আওয়ামী মুসলিম লীগের পূর্ব পাকিস্তান শাখার যুগ্ম-সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৩ সালে তিনি পার্টির সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের টিকেটে ইস্ট বেঙ্গল লেজিসলেটিভ এসেম্বলীর সদস্য নির্বাচিত হন। ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আজীবন সোচ্চার এই অবিসংবাদিত নেতাকে রাজনৈতিক জীবনে বহুবার কারাবরণ করতে হয়।
তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮ সালের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬-দফা ও পরবর্তীতে ১১ দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানসহ প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন এই অবিসংবিদত নেতা এবং বঙ্গবন্ধু উপাধি লাভ করেন।
তাঁর সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ধাপে ধাপে স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে থাকে। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জিত হলেও তৎকালীন পাকিস্তানের সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করে বাঙালি জাতির ওপর নানা নির্যাতন শুরু করে। বঙ্গবন্ধু একাত্তরের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। ২৫ মার্চ মধ্যরাতে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং তাঁর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙ্গালীর বহু আকাক্সিক্ষত বিজয় ও স্বাধীনতা অর্জিত হয়।
বিংশ শতাব্দীতে নির্যাতিত, নিপীড়িত ও শোষিত মানুষের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করে যারা বিশ্বনন্দিত নেতা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাদের অন্যতম।
সাম্য, মৈত্রী, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিরামহীন সংগ্রামে অবদান রাখার জন্য তিনি বিশ্বশান্তি পরিষদের জুলিও কুরি পদকে ভূষিত হন।
বিশ্ব গণমাধ্যমের চোখে বঙ্গবন্ধু ক্ষণজন্মা পুরুষ। অনন্য সাধারণ এই নেতাকে ‘স্বাধীনতার প্রতীক’ বা ‘রাজনীতির ছন্দকার’ খেতাবেও আখ্যা দেয়া হয়। বিদেশী ভক্ত, কট্টর সমালোচক এমনকি শত্রুরাও তাদের নিজ নিজ ভাষায় তাঁর উচ্চকিত প্রশংসা করেন।
বিগত বিংশ শতাব্দীর কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রো বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হিমালয়ের সঙ্গে তুলনা করে।
ক্যাস্ট্রো বলেছে, ‘আমি হিমালয় দেখেনি, তবে শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্ব ও সাহসে এই মানুষটি ছিলেন হিমালয় সমান। সুতরাং হিমালয় দেখার অভিজ্ঞতা আমি লাভ করেছি। ১৯৭৩ সালে আলজেরিয়ায় জোটনিরপেক্ষ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ক্যাস্ট্রোর সাক্ষাত ঘটে। এ সময় সে বঙ্গবন্ধু সর্ম্পকে এ মন্তব্য করে।
শ্রীলংকার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী লক্ষ্মণ কাদির গামা বাংলাদেশের এই মহান নেতা সম্পর্কে মূল্যায়ন করতে গিয়ে বলেছিলো, ‘দক্ষিণ এশিয়া গত কয়েক শতকে বিশ্বকে অনেক শিক্ষক, দার্শনিক, দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক, রাজনৈতিক নেতা ও যোদ্ধা উপহার দিয়েছে। কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমান সবকিছুকে ছাপিয়ে যান, তাঁর স্থান নির্ধারিত হয়ে আছে সর্বকালের সর্বোচ্চ আসনে।’
১৯৭২ এর ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন এবং বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। পরবর্তীকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা ভিত্তি করে সংবিধান প্রণয়ন এবং সে অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট একদল ঘাতক সামরিক কর্মকর্তা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে নিজ বাসভবনে নির্মমভাবে হত্যা করে।
• ১৯৪৪ – মার্কিন বিমান বাহিনী ভিয়েনায় বোমাবর্ষণ করে।
• ১৯৪৮ – ব্রিটেন, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, হল্যান্ড ও লুক্সেমবার্গের প্রতিনিধিরা বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে একটি ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষর করে।
জন্ম
• ১০৭৮ – মুসলিম ধর্মপ্রচারক আব্দুল কাদের জিলানী। ইসলামের অন্যতম প্রচারক হিসাবে নিবেদিত ছিলেন। সেকারণে তাকে গাউস-উল-আজম হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। আধ্যাত্মিকতায় উচ্চমার্গের জন্য বড়পীর, ইরাকের অন্তর্গত জিলান নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করায় জিলানী, সম্মানিত হিসেবে আবু মোহাম্মদ মুহিউদ্দীন ইত্যাদি নাম ও উপাধিতে তাকে সম্বোধন করা হয়।
• ১৫০৮ – মুঘল সম্রাট নাসিরুদ্দীন মোহাম্মাদ হুমায়ুন।
• ১৯০১ – আমেরিকান কম্পোজার আলফ্রেড নিউম্যান।
মৃত্যু
• ১৮৪৬ – জার্মান জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং গণিতবিদ ফ্রিডরিশ ভিলহেল্ম বেসেল।
• ২০১৫ – ইংরেজ ক্রিকেটার বব এপলইয়ার্ড।
বিবিসি’র এক জরিপে তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী নির্বাচিত হন। যুদ্ধ বিধ্বস্ত স্বাধীন বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু যখন বিভিন্নমুখী কার্যক্রম গ্রহণ করতে শুরু করেন ঠিক সেই মুহূর্তে স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত শক্তি ও কায়েমী স্বার্থান্বেষী মহল তাঁর বিরুদ্ধে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র শুরু করে এবং ওই ষড়যন্ত্রেরই অংশ হিসেবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তিনি তাঁর ধানমন্ডির বাসভবনে কতিপয় বিপথগামী সেনা কর্মকর্তার হাতে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নিহত হন।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।