প্লাস্টিকের কৌটায় খাবার কি নিরাপদ!

নিউজ ডেস্ক: হোটেল-রেস্তোরাঁ থেকে প্লাস্টিকের কৌটায় বাড়িতে অথবা অফিসে আসছে বিরিয়ানি থেকে চাউমিন, মাটন চাপ থেকে চিকেন কাবাব। সঙ্গে প্লাস্টিকের চামচ অথবা কাঁটা চামচ। পাড়ার দোকানে বা বাজারে যেখানে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার না করা নিয়ে জোরদার সচেতনতার প্রচার চলছে, সেখানে হোম ডেলিভারিতে অবাধে ব্যবহার হচ্ছে ছোট-বড় এই প্লাস্টিকের কৌটা। যা স্বাস্থ্যের পক্ষে রীতিমতো ক্ষতিকারক বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন পরিবেশ কর্মী থেকে শুরু করে ফুড টেকনোলজির বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

উৎসবের মৌসুমে সাধারণত হোটেল-রেস্তোরাঁতে ভিড় উপচে পড়ে। তাই এমন অনেকেই আছেন, যারা ভিড় এড়াতে বাড়িতে বসেই খাবারের অর্ডার দেন। এর জন্য বর্তমানে শহরে বেশ কিছু হোম ডেলিভারি সংস্থা তৈরি হয়েছে, যারা হোটেল-রেস্তোরাঁ থেকে খাবার সংগ্রহ করে তা বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দিচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা পৌঁছাচ্ছে এই প্লাস্টিকের কৌটাতে, যা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড টেকনোলজি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক উত্পল রায় চৌধুরী জানাচ্ছেন, সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, বেশিরভাগ প্লাস্টিকের কৌটা যাতে খাবার নিয়ে যাওয়া হয়, তা আদৌ উপযুক্ত নয়। তার কথায়, ‘খাবারের মধ্যে যে ফ্যাট জাতীয় পদার্থ রয়েছে অথবা খাবারে রং আনার জন্য যে মসলা বা শস দেয়া হয়, সেগুলো প্লাস্টিকের সঙ্গে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে এবং খাবারের গুণগতমানের পরিবর্তন ঘটায়। যা অনেক সময়ই স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর।’

শুধু খাবারের মান পরিবর্তনই নয়। দূষণের জন্যও প্লাস্টিকের এই খাবারের কৌটাকে দায়ী করছেন পরিবেশ কর্মীরা। বিশিষ্ট পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘হোম ডেলিভারিতে আনা এসব প্লাস্টিকের কৌটা বাড়িতে অন্য খাবার রাখার কাজেও ব্যবহার করা হয়। যা একেবারেই উচিত নয়। ওই কৌটা বহুবার ব্যবহারের পরে যেখানে-সেখানে ফেলে দিলে পরিবেশও দূষিত হয়।’ আর এক পরিবেশ কর্মী নব দত্তের অভিযোগ, ‘প্লাস্টিকের গুণগতমান কী হবে, তা দেখার কোনো পরিকাঠামো শহরে নেই। এমনকি, হোম ডেলিভারিতে যে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিকের চামচ-কাঁটা চামচের ব্যবহার হচ্ছে, তাও পরিবেশের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক।’

প্রশ্ন উঠেছে, ‘ভাল মানের’ প্লাস্টিক আদৌ কতটা ভালো? প্লাস্টিকের কৌটার গুণমান নিয়ে এই বিতর্কের জেরে ইতিমধ্যেই দেশের অন্য বড় শহরগুলোতে হোম ডেলিভারির ক্ষেত্রে অনেকটাই ব্রাত্য হয়েছে এই প্লাস্টিকের কৌটা। আনন্দবাজার।