প্রসঙ্গ দ্বাদশ নির্বাচন: এমন কোনো চাপ নেই যেটা শেখ হাসিনাকে দিতে পারে

নিউজ ডেস্ক: জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক কোনো চাপ আছে কি না- এমন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এমন কোনো চাপ নেই যেটা শেখ হাসিনাকে দিতে পারে। এটা মাথায় রাখতে হবে। আমার শক্তি একমাত্র আমার জনগণ।

তিনি বলেছেন, অতীতেও এরকম বহু চাপ ছিল, তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না। উপরে আল্লাহ আছে এবং আমার বাবার আশীর্বাদের হাত আমার মাথায় আছে। কাজেই কে কী চাপ দিলো না দিলো এতে আমাদের কিছু আসে যায় না। জনগণের স্বার্থে যেটা করার আমরা সেটাই করবো। জনগণের কল্যাণে যে কাজ করার সেটাই করবো।

সদ্য সমাপ্ত কাতার সফরের সারসংক্ষেপ নিয়ে সোমবার (১৩ মার্চ) বিকেলে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ে মানুষের যেন কষ্ট না হয় সেজন্য সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন আর পরনির্ভরশীল নই। আমরা নিজেরাই এখন উৎপাদন করছি। আমাদের পর্যাপ্ত খাদ্য মজুত আছে। আশা করি রমজানে কোনো অসুবিধা হবে না।

তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব সরকারের একার নয়, সবার। সবাইকে সে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে সাংবাদিকদেরও দায়িত্ব আছে। সত্যের জয় হয়। এটা কেউ ঢাকতে পারে না। এটা আমি বিশ্বাস করি।

বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে সরকারপ্রধান বলেন, যে দল বেশি লাফায় সে দলের দুই নেতাই হচ্ছেন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা না পারবে ইলেকশন করতে, না পারবে ক্ষমতায় আসতে।

তিনি বলেন, বিএনপি নিজের গঠনতন্ত্র নিজেরা ভঙ্গ করছে। কারণ, তাদের গঠনতন্ত্রে আছে সাজাপ্রাপ্ত আসামি দলের নেতা হতে পারে না। এখন সেই সাজাপ্রাপ্ত আসামিকেই দলের নেতা বানিয়ে রেখেছে। এখন এই দলের কাছে কী আশা করবেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আগামী নির্বাচনেও জনগণ যেন স্বাধীনভাবে ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারে সেই প্রস্তুতি আছে। দলীয় সরকারের অধীনেও যে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে পারে সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোই এর প্রমাণ।

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, আসলে ওদের (বিএনপির) জন্মই হয়েছে অস্ত্র হাতে নিয়ে, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী একজন সেনা…। সেই সেনা সে হলো সেনাবাহিনীর প্রধান, আবার সেই অবস্থায় থেকে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়েছে, অস্ত্র হাতে নিয়ে। নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়ে ক্ষমতায় বসেছে। আর সেই ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে তৈরি করা দল হলো বিএনপি। কাজেই এদের কাছ থেকে জনগণ আর বেশি কী আশা করবে।

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করার কোনো প্রস্তুতি আছে কি না, এমন প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, সংলাপ কার সঙ্গে করবো। ২০১৮ এর নির্বাচনে আমি সংলাপ করেছি, তার রেজাল্টটা কী। নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করা ছাড়া আর কিছুই করেনি। ৩০০ সিটে ৭০০ নমিনেশন দিয়ে টাকা খেয়ে নিজেরাই নিজেদের নির্বাচন থেকে সরিয়ে তারপর নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

তিনি বলেন, এদের (বিএনপির) সঙ্গে কীসের কথা বলবো, কীসের বৈঠক করবো। তারপরও অসুস্থ ও বয়োবৃদ্ধ হওয়ায় পরিবারের আকুতিতে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে বাসায় থাকার এবং চিকিৎসার সুযোগটা করে দিয়েছি। এটুকু যে করেছি সেটাই যথেষ্ট। এটুকু সহানুভূতি যে পাচ্ছে সেটা আমার কারণে। ওদের সঙ্গে আবার কীসের বৈঠক আর কীসের কী।