ছিনতাই, অজ্ঞানপার্টি, প্রতারণা ঠেকাতে ডিএমপির ‘খাবার দোকান’ কৌশল!

ঢাকা: ছিনতাই, অজ্ঞান-মলমপার্টি, প্রতারণা ঠেকাতে রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে খাবারের দোকান বসাচ্ছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। পরীক্ষামূলকভাবে জাতীয় চিড়িয়াখানা প্রাঙ্গণ ও হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গোলচক্কর এলাকায় বসানো হয়েছে দুটি দোকান। এসব খোলা থাকে ২৪ ঘণ্টাই।

ডিএমপির যুগ্ম-কমিশনার ইমতিয়াজ আহমেদ বুধবার বলেন, ‘ব্যবসা করা পুলিশের কাজ নয়। নিরাপত্তার খাতিরে এ কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। আমাদের ধারণা, এর মাধ্যমে প্রথমত দূর-দূরান্ত থেকে আগতরা নিরাপদ খাবার পাবে, এতে অজ্ঞান পার্টি ও ভেজাল ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য কমবে। দ্বিতীয়ত চিড়িয়াখানা, বিমানবন্দর, বাস-লঞ্চ টার্মিনাল এসব স্থানে খাবারের মূল্য নিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা কমবে। তৃতীয়ত পুলিশি প্রহরাও থাকবে দোকানকে কেন্দ্র করে’। মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা চিড়িয়াখানা প্রাঙ্গণে দেখা গেছে, ‘ডিএমপির মেট্রো বেকারস্ নামের দোকানটি। এ নামের নিচে লিখা- ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃক পরিচালিত’। এখানে বিক্রি করা হয় ফাস্ট ফুডজাতীয় খাবার, কোমল পানীয়, আইসক্রিম, বিস্কুট। এরমধ্যে বেকারি আইটেমগুলো পুলিশের নিজস্ব বেকারিতে তৈরি বলে জানান বিক্রেতা পুলিশ কনস্টেবল লিটন। আরও দেখা গেছে, মোটা লোহার পাইপ দিয়ে খুঁটি বসানো চারকোণায়, উপর-নিচের চারপাশেও এ পাইপ বসানো। পেছন ও উপরের দিকে মোটা সাদা কাপড় দিয়ে ছাউনি তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে দোকানটিতে একটি চার তাকের শোকেইস, দুটি ফ্রিজ রয়েছে।

চিড়িয়াখানার দোকানটি বসানো হয়েছে প্রায় ৫ দিনের মতো হয়েছে বলে জানান ডিএমপির যুগ্ম-কমিশনার ইমতিয়াজ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে দোকান বসানো হয়েছে। এক-দেড়মাস পর্যবেক্ষণ করা হবে। যদি দেখা যায়, আমাদের লক্ষ্য পূরণ হয়েছে বা সম্ভব, তখন আমরা এসব স্থায়ী করতে ঢাকা সিটি করপোরেশন বা বিএসটিআইর কাছে সুপারিশ করব। তখন শুধু এ দুটো স্পটেই নয়, এ ধরনের যত স্পট আছে, সব জায়গাতেই দোকান বসানোর পরিকল্পনা আছে’। চিড়িয়াখানার দোকানটি আরেকজন বিক্রয়কর্মী ডিএমপির সিভিল স্টাফ ঝর্ণা জানান, ‘দৈনিক বিক্রির পরিমাণ পাঁচ থেকে সাত হাজার টাকা। শুক্রবার বিক্রি বেশি হয়’।

অজ্ঞানপার্টির প্রসঙ্গে যুগ্ম-কমিশনার ইমতিয়াজ আহমেদ আরও বলেন, ‘বিভিন্ন স্পটে পুলিশ সারাবছরই প্রচার-প্রচারণা চালায় অজ্ঞান পার্টি থেকে সাবধান থাকতে, যেখান-সেখান থেকে কিছু না খেতে। লিফলেট দেয়া হয়, মাইকিং করা হয়, বড় করে ব্যানার টাঙানো হয়। কিন্তু বাধ্য হয়েই মানুষ যেখান-সেখান থেকে খাচ্ছে। চোখে দেখে তো বোঝার উপায় নেই যে, দোকানটি নিরাপদ কি-না, সেটার সঙ্গে অজ্ঞান পার্টি যুক্ত কি-না। আমরা দেখেছি, নিরাপদ খাবার প্রাপ্তিস্থান নিশ্চিত করা গেলে অজ্ঞান পার্টি ঠেকানো সম্ভব’।