নড়াইলে গাভী পালন করে সাইফুল্লাহ এখন স্বাবলম্বী

নিউজ নাইন২৪ডটকম, নড়াইল : শহর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার পথ উত্তর-পশ্চিমে এগিয়ে গেলেই দলজিৎপুর গ্রাম। নড়াইল-মাইজপাড়া সড়কের পাশেই গাড়–চোরা নামে পরিচিত বাজার এ খানেই গড়ে তোলা হয়েছে গাভীর খামার। এটি তৈরী করেছেন সাইফুল্লাহ ছোট্ট আকারে শুরু করলেও বর্তমানে এখানে প্রায় দেড় কোটি টাকার গাভী রয়েছে তার খামারে।

সাইফুল্লাহ জানান, ২০০৫ কেমিস্ট্রিতে এমএ পাস করে চাকরির জন্য কারো কাছে ধর্না না দিয়ে নিজেই স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য মাত্র ৫ লাখ টাকা নিয়ে শুরু করেন গরুর খামার। ২ লাখ টাকা খরচ করে গড়ে তোলেন গরু রাখার জন্য একটি টিন শেডের ঘর আর ৩ লাখ টাকা দিয়ে ক্রয় করে ৪ টি উন্নত জাতের গাভী। শুরু হল ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য পথচলা। এ বেশি দিনের আগের কথা নয় ২০০৬ সালের কথা। কথাগুলো বলছিলেন সফল গাভী খামারী নড়াইলের সাইফুল্লাহ। ৫ লাখ টাকা থেকে আজ দেড় কোটি টাকার গাভী রয়েছে তার খামারে। ৪টি গাভী থেকে আজ ছোট-বড় মিলে ৮৭ টি গাভী রয়েছে তার খামারে। গাভীর খাবারের জন্য চাষ করা হয় খাসেরও।

সাইফুল্লাহ ডেইরী ফার্মের মালিক আরো জানান, বর্তমানে তার খামারে প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩০০ লিটার দুধ উৎপাদন হচ্ছে যা জেলার চাহিদা মেটাতে গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এখানে ৮ জন কর্মচারী কাজ করে তাদের সংসার চালাচ্ছেন। জেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকেও সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

নড়াইলে দুধ বিক্রয় কেন্দ্র না থাকায় অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় জানিয়ে তিনি সরকারের নিকট জোর দাবি জানান একটি দুধ বিক্রয় কেন্দ্র গড়ে তোলার। যা আরো বেশি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে বলেও জানান তিনি।
ফার্মের কর্মচারি রঞ্জন কুমার হালদার বলেন, আমি প্রায় পাঁচ বছর যাবৎ এখানে কাজ করছি কাজ করে যে টাকা পাই তা দিয়ে আমিসহ আমার পরিবার ভালভাবে জীবন যাপন করছি।

নাছিমা বেগম বলেন, আমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনেই এখানে কাজ করি। যে টাকা পাই তা দিয়ে আমাদের সংসার ভালভাবে চলছে পাশাপাশি ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া করছে।

শেখ দিদার বলেন, আমি এ ফার্মে দীর্ঘ আট বছর যাবত কাজ করছি। আমি ১৮ হাজার টাকা বেতন পাই যা দিয়ে আমি সুখে শান্তিতে পরিবার নিয়ে জীবন যাপন করছি।

নাসিমা খানম বলেন, আমি এখানে কাজ করে সংসার ভালভাবে চলছে পাশাপাশি একটি মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি আর একটি মেয়ে এবার এসএসসি পীরক্ষা দিবে। মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে চাকরি করাব।

সাবেক কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম বলেন, সাইফুল্লাহ ডেইরী ফার্ম এখানে হওয়ায় আমরা যেমন খাটি গরুর দুধ খেতে পারছি, তেমনি এলাকারসহ বিভিন্ন স্থানের মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাছিমা খাতুন বলেন, সাইফুল্লাহর ডেইরী ফার্মের আমি পরিদর্শন করেছি আমার কাছে অনেক ভাল লেগেছে। আমি ওই খামারের দুধ খাই জানিয়ে তিনি আরো বলেন, বেকার যুবকেরা চাকুরীর পিছনে না ঘুরে তার মত খামার তৈরী করলে সরকারের পক্ষ থেকে ঋণসহ সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।