নারী অপহরণ ও পাচারের মাধ্যমে যৌনপল্লীগুলো যেভাবে নারীকে পতিতা হতে বাধ্য করে -পর্ব-১

মুদ্রার নারী অপহরণ ও পাচার

সম্প্রতি রাজবাড়ির দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে একজন পতিতার জানাজা নামাজ পড়ানো নিয়ে মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল হৈ-চৈ ও আলোচনা-সমালোচনা চলছে। বিবিসিসহ বিভিন্ন বিদেশী মিডিয়া ও তাদের দেশীয় অনুগত মিডিয়া, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান যৌনপল্লী ও যৌনকর্মীদের ব্যাপারে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টি করবার জন্যে উঠে পড়ে লেগেছে। তারা চায় বাংলোদেশের জনগণ পতিতালয় ও পতিতাবৃত্তিকে ইতিবাচকভাবে দেখুক এবং এটাকে বৈধতা দিক। তাদের এই প্রচেষ্টা দীর্ঘ দিনের। কিন্তু এখনও তারা সেটা করতে সক্ষম হয়নি। তাদের এসব প্রচারণার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে  অনেক আধা শিক্ষিত লোক তাদের মত বক্তব্য-বিবৃতি দিতে শুরু করেছে। যৌনকর্মীদের অধিকারের নামে এসব মিডিয়া, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান যেসব প্রচারণা চালাচ্ছে সেগুলো যে নিছক প্রতারণা এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং এই প্রতারণা শুধু যে সাধারণ মানুষের সাথে তা নয়, যৌনকর্মীদের সাথেও। উল্লেখিত বিষয়সহ এর সাথে সংশ্লিষ্ট অনেক অজানা বিষয় উঠে আসবে নিচের এই লেখাটিতে।

যৌনপল্লী এমন একটা জায়গা যেখানকার প্রত্যেকটা মেয়েকেই তাদের অনিচ্ছায় এই পেশায় নিযুক্ত হতে বাধ্য করা হয়েছে। সমাজে যৌনপল্লীর অবস্থান থাকার কারণেই নিরীহ-নিরপরাধ সহজ-সরল অনকে ময়েরে জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। তাদের জীবনটা হয়ে যায় অভিশপ্ত। যেই অভিশপ্ত জগৎ থেকে তারা কোনো দিন আর ফিরে আসতে পারে না সভ্য সমাজে, আপন পরিবারে। জীবনের সকল স্বপ্ন-সাধ-আসা-আকাঙ্খা পরিবার-সংসার সবই শেষ হয়ে যায় এখানেই।

বিভিন্ন গবেষণা, জরিপ ও তথ্য-উপাত্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়-বিশ্বে নারী পাচার ও নারী অপহরণের প্রধান কারণ পতিতাবৃত্তি ও পতিতালয়।  কারণ, দেশে যত নারী অপহরণ ও পাচার হচ্ছে তাদেরকে দেশ-বিদেশের কোনো না কোনো যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দিচ্ছে নারী অপহরণকারী ও নারী পাচারকারী চক্ররা। যার ফলে অপহৃত প্রায় প্রত্যেকটা মেয়ের বাকী জীবনটা কাটে নিষিদ্ধ যৌনপল্লীর অন্ধকার জগতে। যদি এসব পতিতালয় বা যৌনপল্লী না থাকতো তাহলে নারী পাচার প্রায় বন্ধ হয়ে যেত। কারণ যেই লোভে পাচারচক্র মেয়েদের পাচার করে থাকে তাদের সেই লোভ মিটিয়ে থাকে যৌনপল্লীর মাসী-পিসীরা। তাহলে যৌনপল্লী-ই যদি না থাকে তাহলে মেয়েদের পাচার করে নিবে কোথায়? অর্থাৎ যৌনপল্লী নিষিদ্ধ করা হলে দেশের অনেকগুলো বড় বড় অপরাধ বন্ধ হয়ে যাবে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নারী পাচার।

দেশী-বিদেশী পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত যৌনকর্মীদের সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায় যে, তারা কোনো একটি চক্র কর্তৃক প্রতারিত হয়ে অথবা অপহৃত হয়ে যৌনপল্লীতে বিক্রি হয়ে থাকে। এরপর তাদের উপর শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন। কারণ মেয়েগুলো নিষিদ্ধ পল্লীর অন্ধকার জগত থেকে বের হতে চায়। কিন্তু ঐ পল্লির পরিচারিকা তাদের অন্ধকার জগত থেকে আর বের হওয়ার সুযোগ দেয় না। এভাবেই শুরু হয় তাদের অন্ধকার জগতের শুরুটা।

তাদের অধিকাংশরাই জানিয়েছে- তারা কখনও চিন্তাও করে নি যে, তাদের জীবনটা এমন অভিশপ্ত ও যন্ত্রনাদগ্ধ নিষিদ্ধ পল্লীতে কাটবে। তাদের জীবনের এমন কালো অধ্যায় শুরু হওয়ার পূর্বে তারাও স্বপ্ন দেখতো একজন ভাল মানুষ হওয়ার, ভাল কিছু করার।  কিন্তু  যৌনপল্লী নামক অভিশপ্ত ও অন্ধকার এই জগতটি তাদের জীবন ও স্বপ্ন সব কিছুই শেষ করে দেয়। কয়েকটা উদাহরণ দিলে বিষয়টি আরো পরিষ্কার হবে যে কীভাবে পাচারকারী ও যৌনপল্লী মেয়েদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে।

২০১৬ সালের ৮-ই ডিসেম্বর বিবিসি বাংলা পাচার হওয়া একটি মেয়ের সাক্ষাৎকার নিয়েছে। সাক্ষাৎকারটি নিম্নরূপ –

পাচারের শিকার হয়ে স্থায়ী যৌনকর্মী হয়ে যাওয়া একজন জানায়, পরীক্ষায় পাশ করে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ালেখা শুরুর যখন প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তখন এক মহিলা তাকে ফরিদপুরের একটি যৌন-পল্লীতে বিক্রি করে দেয়।

পরিচয় গোপন রাখার স্বার্থে ওই যৌনকর্মী বলে, নিজের ইচ্ছায় কেউ এ জায়গায় আসে না। সবাই পাচারের শিকার। তবে অন্য পল্লী থেকে কেউ কেউ স্বেচ্ছায় পাড়া বদল করে থাকে।

জানা যায়- দালালরা সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকায় মেয়েদের পতিতালয়ে সর্দারনীর কাছে বিক্রি হয়। পাচার হয়ে কেউ এ পাড়ায় ঢুকে গেলে মুক্তি পাওয়া প্রায় অসম্ভব। পাচার হয়ে আসার পর পালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়া ওই কর্মী বলে, “গোসল করতে গেলেও লোক দাঁড়ানো থাকবে সাথে, টয়লেটে গেলেও লোক থাকবে সাথে। পালানোর কোথাও কায়দাই নাই। রাত্রে আবার রুমে দিয়ে তালা লাগায় দেয় বাইরে থেইকা।” একটা পর্যায়ে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হলেও তার আর বাড়ি ফেরা হয়নি।”

এই পেশার মাধ্যমে কোনো যৌনকর্মীরই সংসার চলে না, বরং দালালরাই ফায়দা লুটে এরও অনেক প্রমাণ রয়েছে।

এ বিষয়ে ২০১৭ সালের জানুয়ারির ২৪ তারিখে জার্মানভত্তিকি নউিজর্পোটাল ‘ডয়চে ভেলে’ শাহনাজ বেগম নামক যৌনকর্মীদের নিয়ে কাজ করা একজন সাবেক যৌনকর্মীর সাক্ষাৎকার নিয়েছে। একটি প্রশ্নের জবাবে সাবেক ওই যৌনকর্মী  জানায়-

“…আসলে কেউই নিজের ইচ্ছায় এই পেশায় আসতে চায় না। বাংলাদেশ একটা ‘মুসলিম কান্ট্রি’। তাই ছোটবেলা থেকেই মেয়েরা শিক্ষা পায় নামাজ পড়ো, রোজা করো, সতীত্ব ধরে রাখো। কারণ তারা শেখে যে সতিত্বই সবচেয়ে বড় সম্বল। তাই টাকার বিনিময়ে কেউই এটা বিক্রি করতে চায় না। কিন্তু মেয়েদের ইচ্ছের বিরুদ্ধেই তাদের এখানে আসতে হয়। বেশির ভাগ মেয়েই অভাব-অনটন থেকে বা আঘাত পেয়েই এই পেশায় আসে। তারপর এখানে এসে ওরা যে টাকাটা আয় করে, সেটার একটা বড় ভাগ দালালরা নিয়ে যায়। সংসার চালাতে পারে শতকরা দু-একজন। এই পেশাটা তো বৈধ না, সে কারণে সবাই এদের ওপর মাতবরি করে। এমনকি রাস্তার টোকাইও সেক্স ওয়ার্কারদের মারধর করে তাদের টাকা কেড়ে নেয়।”

বাংলাদেশ ছাড়াও পার্শবর্তী ভারতের যৌনপল্লীগুলোও বাংলাদেশ থেকে নারী পাচার হওয়ার অন্যতম একটা কারণ।

দৈনিক যুগান্তরে ২০১৫ সালের ১১ জুলাই একটি রিপের্ট প্রকাশ করে। এতে ভারতের পতিতালয় থেকে উদ্ধার হয়ে ফিরে আসা ৭৪ জন তরুনীর দু’জনের লোমহর্ষক কাহিনী প্রকাশ করে। রিপোর্টে বলা হয়-

“… একপর্যায়ে সাহস জোগালে খুলনার তরুণী রুবিনা (ছদ্মনাম) বলে ওঠে, কাউকে ভাই ডাকতেও এখন ভয় লাগে। আমরা চার বোন। ভাই নেই, তাই রুবেলকে (দালাল) বিশ্বাস করে ভাই ডেকেছিলাম, সেই রুবেলই আমার সর্বনাশ করেছে। আমাকে ভারতে পতিতালয়ে বিক্রি করে দিল। এ কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন ওই তরুণী। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাইটস যশোর কার্যালয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

পরিবারের দুর্দশার বর্ণনা করে রুবিনা বলেন, চার বোন ও মাকে ফেলে রেখে বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে ঢাকায় সংসার করছেন। আমাদের কোনো খোঁজ নেন না। সেই ছোট্ট বেলা থেকে দেখছি মা মজুরের কাজ করে সংসার চালান। বড় মেয়ে হিসেবে আমি খুব কষ্ট পেতাম। মনে মনে চাকরি খুঁজছিলাম। একপর্যায়ে বান্ধবীর স্বামী রুবেলের সঙ্গে পরিচয় হয়। তাকে ভাই ডাকি। তাকেই বলেছিলাম ভাই সংসারে মেলা অভাব, একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। রুবেল বলেছিল, ভারতে ভালো চাকরি আছে। বাসাবাড়িতে কাজ করবি, বেতনও পাবি মেলা টাকা। রুবেলের কথায় বিশ্বাস করে চাকরির লোভে মাকে না জানিয়ে বাড়ি ছাড়ি। রুবেল আমাকে বেনাপোলের পুটখালি সীমান্ত দিয়ে ভারতে দিল্লি নিয়ে এক দেহ ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দেয়। এরপর ওই ব্যবসায়ী আরেকজনের কাছে আমাকে বিক্রি করে দেয়। এরপর দেখি একটা ছোট্ট ঘরের মধ্যে একগাদা মেয়ে। সেখানে আমাকে রাখা হয়। আমি খুব কেঁদেছিলাম। একটা মেয়ে এসে বলল কিছু করার নেই। তুই বিক্রি হয়ে গেছিস।

পতিতালয়ে নির্যাতনের লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে রুবিনা বলেন, দিল্লির একটা পতিতালয়ে ছিলাম ছয় মাস। সেখানে অমানুষিক নির্যাতন চালানো হতো। সেখানে এক খদ্দেরের (কলকাতার ছেলে) সঙ্গে ভাব জমিয়ে তুলি। তাকে বলেছিলাম আমাকে বাঁচান। আমি দেশে ফিরে যাব। ওই ছেলেটির কথামতো একদিন খুব সকালে পতিতালয় থেকে পালাই। ওই ছেলেটি আমাকে বোম্বের ট্রেনে তুলে দিয়েছিল। বোম্বে স্টেশনে আসার পর একটা মেয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়। সে আমাকে খুব আদর-যত্ন করে। কিন্তু আমি বুঝতে পারিনি ওই মেয়েটিও ছিল দালাল। ওই মেয়েটি আমাকে পুনে পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়। সেখানে ছয় মাস থাকার পর রেস্কি ফাউন্ডেশন আমাকে উদ্ধার করে। রেস্কি ফাউন্ডেশনে দুই বছর থেকেছি। ওই সংগঠনের কার্যালয়ে আমার মতো উদ্ধার হওয়া মেয়েদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। আমি বিউটি পার্লার আর সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ নিয়েছি। সব মিলিয়ে তিন বছর ভারতে দুর্বিষহ জীবনযাপন করে দেশে ফিরেছি।

রুবিনার মতো ঢাকার মেয়ে মাহীর (ছদ্মনাম) পাড়ার একটি মেসের এক ভাইয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়। মাহী জানান, পরিচয়ের সুবাধে ফরিদপুরের ওই ভাইয়ের কাছে পার্টটাইম চাকরি চেয়েছিলেন। ওই ভাই তাকে কম্পিউটার কম্পোজের চাকরি দিতে চেয়েছিল। চাকরির প্রলোভনে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসের কোনো একদিন দুপুরে পরিবারের কাউকে না জানিয়ে বাড়ি থেকে বের হই। ওই যুবক তাকে শ্যামলী নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বাসে তোলে। এরপর পানীয়ের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে বেনাপোলে নিয়ে যায়। এরপর পুটখালি সীমান্তে এক দালালের বাড়িতে রেখে ভারতে পাচার করে দেয়। এরপর পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁ শহরের একটি বাড়িতে রাখা হয় মাহীকে। সেখানে দুদিন রাখার পর বোম্বের পুনে পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়। সেখানে খদ্দের ও দালালদের নির্যাতনের শিকার হন মাহী। একপর্যায়ে ২০১৪ সালের ৬ জুলাই একটি এনজিও পতিতালয় থেকে তাকে উদ্ধার করে। উদ্ধারের পর এনজিও তাকে প্রশিক্ষণ দেয়। সর্বশেষ ৩ জুলাই পাচার হওয়া ৭৪ বাংলাদেশী দেশে ফিরে আসে।…”

শুধু রুবিনা কিংবা মাহী নয়, তাদের মতো শত শত তরুণী চাকরির প্রলোভনে ভারতে পাচার হচ্ছে প্রতিবেশী, বন্ধু ও স্বজনের মতো মুখোশধারীদের দ্বারা। বিক্রির পর তাদের পতিতালয়ে যৌন ব্যবসায় নিয়োজিত করা হচ্ছে| বাংলাদেশ ছাড়াও আফ্রিকা ও অন্যান্য দেশ থেকেও কাজের কথা বলে ভারতের পতিতালয়গুলোতে বিক্রী করা হয় নারীদের।

এ প্রসঙ্গে “বিবিসির অনুসন্ধান: আফ্রিকা থেকে ভারতে নারী পাচারের চক্র, বানানো হচ্ছে যৌনকর্মী” শিরোনামে বিবিসির একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এমন চিত্রই বের হয়ে এসেছে। উক্ত প্রতিবেদনের একটি প্যারা হচ্ছে- “কাজের প্রতিশ্রুতি পেয়ে দিল্লিতে আসা নারীরা নিজেরা যখন এই চক্রের কাছে অর্থের জন্য আটকে পড়েন, তখন তারা হয়ে ওঠেন যৌন কর্মী। ধীরে ধীরে এক পর্যায়ে তারাও হয়ে ওঠেন ম্যাডাম, যারা অন্য নারীদের যৌন কর্মী হিসেবে কাজে লাগান।” (বিস্তারিত দেখতে-  https://bbc.in/38UnXkz)

এমনকি ভারতরে দখোদখেি বাংলাদশেরেও কছিু ভারতরে প্রতি অনুগত ব্যক্তি টাকার লোভে এসব নিষিদ্ধ পল্লীতে তাদের স্ত্রীদের বিক্রি করে দিচ্ছে। পত্রিকায় প্রকাশিত- মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার কর্ণপাড়া এলাকার বাসিন্দা এক নারীকে এক বছর আগে ভারতের বিহারের একটি পতিতালয়ে ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয় তার স্বামী নিখিল। সেখানে তাকে দিয়ে জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তি, অশ্লীল ভিডিও এবং পর্নো ছবি তৈরি করা হতো। সুযোগ পেয়ে ছয় মাস পর ওই নারী সেখান থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসে। পরে র‌্যাব নীলকান্ত বেপারীর ছেলে ওই নিখিল বেপারীকে গ্রেপ্তার করে। (সূত্র: বার্তা বাজার, মে ১১,২০১৮)

এভাবে কত মেয়ে যে পাচার হয় এর নির্দিষ্ট কোনো হিসাব নেই। জাতিসংঘের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী- বিশ্বে পাচার হওয়া এই তরুণীদের ৩৪ শতাংশ নারী নিজ দেশেই পাচার হয়। আর ৩৭ শতাংশ আন্তঃ-সীমান্ত পাচারের শিকার। অন্যদিকে, সেইভ দ্য চিলড্রেনের ২০১৪ সালের এক রিপোর্ট অনুযায়ী- পূর্ববর্তী ৫ বছরে বাংলাদেশের ৫ লাখ নারী বিদেশে পাচার হয়েছে। যাদের গন্তব্য ভারত, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদিসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ। (সূত্র: বিবিসি বাংলা- ৮-ই ডিসেম্বর, ২০১৬)

এরকম বহু ঘটনা রয়েছে যা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। এখানে নারী পাচার হওয়ার মূল যে কারণ বরেয়িে আসছে সেটি হচ্ছে যৌনপল্লী এবং দেহ ব্যবসা। কারণ, নারী অপহরণ ও পাচার সম্পর্কিত উপরের প্রত্যেকটি ঘটনাই পতিতালয়রে সাথে যোগসাজসে হয়ছে।

 (চলবে)

মুহম্মদ জিয়াউল হক

ই-মেইল : ziadu7@gmail.com