নবীগঞ্জে ১০ টাকা কেজির চাল গায়েব!

নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ): হতদরিদ্রদের মাঝে ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রির চাল নবীগঞ্জের অধিকাংশ ডিলারগন তাদের ইচ্ছামতো বিক্রি করতে গিয়ে চরম হট্রগোলোর সৃষ্ঠি হচ্ছে।ডিলারগন চাল বিতরণে গড়িমসি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এখনো উপজেলার বেশিরভাগ ইউনিয়নে হতদরিদ্রদের মধ্যে চাল বিতরণ শুরু হয়নি।চাল না পেয়ে হতাশা বিরাজ করছে হত দরিদ্র লোকজনের মধ্যে। দেবপাড়া ইউনিয়নে চাল বিতরণ নিয়ে চরম হট্রগোলের খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে সর্বমহলে আলোচনা হচ্ছে। গতকাল করগাঁও ইউপিতে এক ডিলারের গুদাম পরিদর্শন করে ১৮ টন চালের মধ্যে পাওয়া গেছে ২ টন। বাকী চাল কোথায় এর সদোত্তর দিতে পারেননি সংশ্লিষ্ট ডিলার।

নবীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য গুদান কর্মকর্তা রূপালী দাস জানায়, সরকারের দেয়া কর্মসুচি বাস্তবায়নে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির জন্য প্রতি ইউনিয়নে ২ জন করে ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে। এবং প্রত্যেক ইউনিয়নে নির্দিষ্ট সংখ্যক লোকের মধ্যে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির জন্য সংশ্øিষ্ট ডিলারগণ গত ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গুদাম থেকে চাল উত্তোলন করেন। উত্তোলিত চাল নবীগঞ্জ উপজেলার ৩/৪টি ইউনিয়নের ডিলারগণ ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে চাল বিক্রি করলেও অন্যান্য ডিলারগণ চাল বিক্রি না করে গায়েব করে ফেলেছেন বলে অভিযোগ উঠে। ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে সাধারণ জনগণ। এমনই অভিযোগের ভিত্তিতে নবীগঞ্জ উপজেলার করগাও ইউনিয়নের হতদরিদ্রদের মধ্যে ১০ টাকা কেজি চাউল বিতরনের ডিলার কনক দাশের উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ডি নং ৫৩২৭৮০৭ এর মাধ্যমে ১৮ মেট্রিক টন চাউল উত্তোলন করেন। কিন্তু ডিলার করগাও ইউনিয়নের হত দরিদ্রদের মাঝে চাল বিক্রি করেন নি বলে অভিযোগ উঠে। ইউপি সদস্য সাইদুর রহমান সাংবাদিকদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। স্থানীয় মেম্বারগণের মৌখিক অভিযোগ করলে তাৎক্ষনিক উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রন ইন্সেপেক্টর শহিদুল ইসলাম গতকাল বিকেলে কনক দাশের দোকানে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পান। তিনি দেখতে পান গুদাম থেকে ১৮ মেট্রিক টন চাউল উত্তোলন করা হলেও ডিলারের গুদামে ২ মেট্রিক টন চাউল রয়েছে। বাকী চাউল কোথায় জানতে চাইলে সে কোন উত্তর না দিয়ে কনর একাধিক নেতার নিকট ফোন করে নিজেকে রক্ষা করার জন্য অকুতি জানায়। ইন্সপেক্টর ঘটনাস্থল থেকেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করেন।

এদিকে ১০নং দেবপাড়া ইউনিয়নের ডিলার তাজ উদ্দিন ও সুমন আহমদ চাল উত্তোলন করে নিজেদের গুদামে রেখে দিয়েছেন। তারা এখনো বিতরণ করছেন না। এনিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারদের সাথে ডিলারদের চরম দ্বন্দ্ব বিরাজ করছে। এনিয়ে কয়েকদফা সালিশ সভা হলেও কোন সমাধান হয়নি। তাই হতদরিদ্ররা এখনো চাল পাননি। এব্যাপারে মেম্বার মোহাম্মদ আলী বলেন, আমরা ডিলারদের সাথে একাধিক বৈঠক করে কোন সমাধান করতে পারছি না। ডিলারগন তারা তাদের মনগড়া ভাবে বিতরণ করতে চাইছেন।এব্যাপারে চেয়ারম্যান এড.জাবিদ আলী বলেন আমি বিষয়টি নিয়ে ডিলার ও এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিদের সাথে কথা বলেছি। কিন্তু তাজ উদ্দিন নামের একজন ডিলার তার মনগড়াভাবে চাল গুদামজাত করায় সমস্যা সৃষ্ঠি হয়েছে। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজিনা সারোয়ার বলেন বিষয়টি আমাদের কাছে জানানো হয়েছে। আমরা বিষয়টি দ্রুত নিস্পত্তি করার জন্য চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছি। তিনি বলেন চাল বিতরণ নিয়ে কোন অনিয়ম হলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে কনক দাশ জানান, তিনি ১৮ মেট্রিক টন চাউলের ৩৬০ বস্তা চাউল হয় এর মধ্যে তার গুদামে ১৫০ বস্তা চাউল আছে। বাকী ২১০ বস্তা চাউল আজ খাদ্য গুদাম থেকে নিয়ে বিক্রির উদ্বোধন করবেন। অসুস্থতার জন্য তিনি চাল বিক্রি করতে পারেননি।