ননী-তাহেরের রায় পড়া শুরু

Tribunal high court

ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার নেত্রকোণার মো. ওবায়দুল হক ওরফে আবু তাহের ও আতাউর রহমান ননীর মামলার রায় পড়া শুরু হয়েছে। এর আগে সকাল সারে ৯ টায় তাদের কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়। বেলা সারে ১০ টায় তাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়।

বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় ঘোষণা করবেন। অপর দুই সদস্য হচ্ছেন বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ সোহরাওয়ার্দী। এর আগে গতকাল সোমবার রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়। উভয়পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষ হলে গত ১০ জানুয়ারি মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখেন ট্রাইব্যুনাল।

এ মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল ও সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নী। আর আসামি পক্ষে ছিলেন আব্দুস সোবাহান তরফদার ও গাজি এম এইচ তামিম। ২০১৩ সালের ৬ জুন এ দুই আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে তদন্ত সংস্থা। প্রসিকিউশনের আবেদনে আদালত পরোয়ানা জারি করলে ২০১৪ সালের ১২ আগস্ট তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। আর ওই বছরের ৫ নভেম্বর দেওয়া হয় তদন্ত প্রতিবেদন। যা ১১ ডিসেম্বর আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। এরপর গতবছর ২ মার্চ অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে দুই আসামির বিচার শুরু হয়।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় দুই আসামির বিরুদ্ধে মোট ছয়টি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে-

প্রথম অভিযোগ বলা হয়- ১৯৭১ সালের ১৭ আগস্ট তাহের ও ননীর নেতৃত্বে রাজাকাররা নেত্রকোণার বারহাট্টা থানার বাউসী বাজার থেকে ফজলুল রহমান তালুকদারকে অপহরণ করে জেলা পরিষদ ডাকবাংলোয় নির্যাতনের পর ত্রিমোহনি ব্রিজে হত্যা করে। একই সঙ্গে ৪০০ থেকে ৪৫০টি দোকানের মালামাল লুটপাট শেষে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়- ৪ অক্টোবর বারহাট্টা রোডের শ্রী শ্রী জিউর আখড়ার সামনে থেকে তাহের ও ননী ফুটবলার দবির হোসেনকে অপহরণ করে। পরে নির্যাতন শেষে মোক্তারপাড়া ব্রিজে গুলি করে হত্যা করা হয় তাকে।

তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়- ১৯ অক্টোবর তাহের ও ননীর নেতৃত্বে বারহাট্টা থানার লাউফা গ্রাম থেকে মশরফ আলী তালুকদারসহ ১০ জনকে অপহরণ করে ঠাকুরাকোনা ব্রিজে নিয়ে ৭ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
চতুর্থ অভিযোগে বলা হয়- ননী ও তাহের মিলে মলয় বিশ্বাস ও অ্যাডভোকেট শীষ চন্দ্র সরকারের বাড়ি দখল করে নির্যাতনের মাধ্যমে পরিবারসহ তাদের দেশত্যাগে বাধ্য করে।

পঞ্চম অভিযোগে বলা হয়- ১৫ নভেম্বর তাহের ও ননী বিরামপুর বাজার থেকে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বদিউজ্জামান মুক্তসহ ৬ জনকে অপহরণ করে লক্ষীগঞ্জ খেয়াঘাট ও মোক্তারপাড়া ব্রিজে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে।
ষষ্ঠ অভিযোগে বলা হয়- তাহের ও ননী চন্দ্রনাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক কামিনী চন্দ্র চক্রবর্তীসহ ২৭ জনকে নেত্রকোণা জেলগেট থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে।