দ্বৈত নাগরিক হওয়ার সুযোগ বাড়ছে

Dual Citizenship দ্বৈত নাগরিকত্ব

ঢাকা: বাংলাদেশীদের জন্য দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ বিস্তৃত করে আইন করার প্রস্তাবে সায় দিয়েছে সরকার; নাগরিক হতে মিথ্যা তথ্য দিলে রাখা হয়েছে পাঁচ বছরের কারাদ-ের বিধান। সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন, ২০১৬’ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মুহম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, নতুন আইনে দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণের সুযোগ অনেক সম্প্রসারিত হচ্ছে। আগে বাংলাদেশীদের জন্য কেবল আমেরিকা ও যুক্তরাজ্যের দ্বৈত নাগরিক হওয়ার আইনি সুযোগ ছিল। নতুন আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, কোনো বাংলাদেশী সার্কভুক্ত দেশ বা মিয়ানমারের দ্বৈত নাগরিকত্ব নিতে পারবে না।

কেউ বিয়ের সূত্রে এসব দেশের কোনোটির নাগরিক হলে তাদের এক দেশের নাগরিকত্ব ছাড়তে হবে। এছাড়া সরকার গেজেট জারি করে যেসব দেশকে নাগরিকত্ব গ্রহণের ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, সেসব দেশেরও দ্বৈত নাগরিক হওয়া চলবে না। এর বাইরে বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে এমন যে কোন রাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিকত্ব বাংলাদেশীরা এই আইনের ফলে নিতে পারবেন বলে জানান সচিব।

তবে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক, জাতীয় সংসদের সদস্য, সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তি, সশস্ত্র বাহিনী বা প্রজাতন্ত্রের কোনো বেসামরিক পদে নিয়োজিতরা দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে পারবেন না।

খসড়ায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের কোনো ব্যক্তি দ্বৈত নাগরিকত্ব ছাড়া বিদেশী রাষ্ট্রের প্রতি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ আনুগত্য প্রকাশ করলে; বিদেশী রাষ্ট্রের কোনো বাহিনীতে যোগ দিলে বা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বা ওই বাহিনীকে সহায়তা করে থাকলে তার নাগরিকত্ব বাতিল হয়ে যাবে। কেউ মিথ্যা তথ্য দিয়ে নাগরিক হলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদ- অথবা এক লাখ টাকা জরিমানা, অথবা উভয় দ-ের বিধান রাখা হয়েছে বলে জানান সচিব। তিনি বলেন, কেউ ইচ্ছে করলে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করতেও পারবেন। সেক্ষেত্রে তার নাবালক সন্তানের বিষয়েও তা প্রযোজ্য হবে।

বিয়ে সূত্রে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেতে হলেও বিদেশী নাগরিকদের কমপক্ষে পাঁচ বছর এ দেশে বসবাস করতে হবে। আগের আইনে এক্ষেত্রে চার বছরের বাধ্যবাধকতা ছিল। সরকার চাইলে বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য কাউকে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দিতে পারবে।

“এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়া ব্যক্তিরা স্থানীয় সরকার নির্বাচন, সংসদ নির্বাচন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনসহ যে কোনো পদের নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। সুপ্রিম কোর্টের বিচারকসহ প্রজাতন্ত্রের কোনো কর্মে নিয়োগ পাবেন না। কোনো রাজনৈতিক সংগঠনও করতে পারবেন না।”
শফিউল আলম বলেন, ‘দি সিটিজেনশিপ অ্যাক্ট, ১৯৫১’ এবং ‘দি বাংলাদেশ সিটিজেনশিপ টেম্পোরারি প্রভিশন্স অর্ডার- ১৯৭২’ এক করেই নতুন এ আইন করা হচ্ছে। “ওই দুই আইনে অনেক অসম্পূর্ণতা আছে, অনেক ব্যাকডেটেড ইস্যুজ আছে। সেগুলো পুনর্বিন্যস্ত করে নতুন এই আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।” নতুন আইনে ছয়টি অধ্যায় ও ২৮টি ধারা থাকছে বলে জানান সচিব।