দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বন্যার শঙ্কা

নিউজ ডেস্ক: আগামী কয়েকদিনে উজান অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ভারি বৃষ্টি হতে পারে। এতে করে দেশের উত্তরাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পার্বত্য এলাকায় বন্যার শঙ্কা রয়েছে।

রোববার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বন্যা সম্পর্কিত প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়।
এতে বলা হয়, দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি বেড়ে আগামী সাতদিনে সতর্কসীমায় পৌঁছবে। কোথাও কোথাও বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে। আগামী ২৪-৭২ ঘণ্টায় (২-৩ দিন) তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি কিছু স্থানে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে এবং অববাহিকাভুক্ত লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা:
পূর্বাভাস প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে বিপদসীমার নিচে অবস্থান করছে। বাংলাদেশ ও উজানের অববাহিকায় ভারতের অরুণাচল, আসাম, মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গে আগামী সাতদিনে অনেক স্থানে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এর প্রভাবে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষণীয় হতে পারে। এর ফলে এই সময়ে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদী অববাহিকার পানি বেড়ে সতর্কসীমায় পৌঁছতে পারে এবং কোথাও কোথাও বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে।

অপরদিকে আগামী ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টায়, হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা এবং ধরলা নদীর পানি সময় বিশেষে দ্রুত বাড়তে পারে। এর ফলে তিস্তা এবং ধরলা নদীর পানি সমতল কতিপয় স্থানে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে এবং অববাহিকাভুক্ত লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর এবং কুড়িগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

গঙ্গা অববাহিকা:
গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি বর্তমানে স্থিতিশীল আছে এবং বিপৎসীমার নিচে অবস্থান করছে। চলতি সপ্তাহে দেশের উজানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও উত্তর প্রদেশ এবং নেপালের বিভিন্ন স্থানে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার প্রেক্ষিতে গঙ্গা নদীর পানি আগামী সাতদিনে বৃদ্ধি পেতে পারে, তবে বিপৎসীমা অতিক্রম করে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

একই সঙ্গে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা উভয়ই নদীর পানি বাড়ার সম্ভাবনার পরিপ্রেক্ষিতে আগামী সপ্তাহে দেশের মধ্যাঞ্চলের পদ্মা নদীর পানি সমতলও বৃদ্ধি পেতে পারে এবং কোথাও কোথাও বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে।

মেঘনা অববাহিকা:
মেঘনা অববাহিকার উজানের প্রধান নদীগুলোর পানি বর্তমানে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। চলতি সপ্তাহে দেশের উজানে ভারতের আসাম ও মেঘালয় প্রদেশের স্থানে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার প্রেক্ষিতে আগামী সাতদিনে সুরমা-কুশিয়ারা ও মেঘনা অববাহিকার উজানের অন্যান্য নদ-নদীর (সারিগোয়াইন, যদুকাটা, সোমেশ্বরী, ভুগাই-কংস, মনু, খোয়াই) পানি সময় বিশেষে বৃদ্ধি পেতে পারে।

দক্ষিণ-পূর্ব পার্বত্য অববাহিকা:
মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আগামী সাতদিনে দক্ষিণ-পূর্ব পার্বত্য অববাহিকা অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত পরিলক্ষিত হতে পারে। এর ফলে এই অববাহিকাভুক্ত নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে এবং কিছু স্থানে বিপৎসীমা অতিক্রম করে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।

উপকূলীয় অঞ্চল:
এদিকে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি হতে পারে। এই সময়ে কোনে ঘূর্ণিঝড় বা জলোচ্ছ্বাস পরিস্থিতির সম্ভাবনা নেই।