দেশী গরুই চাহিদা মেটাচ্ছে

ঢাকা: এবার বাংলাদেশে ভারতীয় গরুর চাহিদা কম থাকায় ভারত থেকে গরু আনছেনা দেশী ব্যবসায়ীরা। তারপরও রাজধানীর হাজারীবাগের পশুর হাটে পর্যাপ্ত গরু পাওয়া যাচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদুল আযহা উপলক্ষে দেশে ৮০ লাখের মতো গরুর প্রয়োজন হয়। এর চার ভাগের একভাগ আসত ভারত থেকে। কিন্তু ভারতীয় গরু রূগ্ন ও অস্বাস্থ্যকর হওয়ায় দুইবছর ধরে ভারতীয় গরু আমদানি বন্ধ রয়েছে। গরু ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ কারণে দেশেই প্রচুর খামার গড়ে উঠেছে। এই খামারগুলোই গরুর চাহিদা মেটাচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার হাজারীবাগ পশুরহাট ঘুরে দেখা যায়, হাটগুলোতে প্রাধান্য পাচ্ছে বাড়িতে পালা এবং খামারে পালা দেশী গরু। তবে বিদেশী গরু কম বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা বলছেন, হাটে এখন দেশী গরুর দাম অনেক বেশি। তারা ঘুরেফিরে গরু দেখলেও, অপেক্ষা করছেন। তারা ধারণা করছেন, আর কয়েকদিনের মধ্যে গরুর দাম কমতে পারে।

কারণ হিসেবে তারা বলছেন, এবার দেশে কুরবানীর পর্যাপ্ত গরু রয়েছে। যারা গরু পালেন, তারা ঈদের আগেই গরু বিক্রি করে দেয়ার পরিকল্পনা করেছেন। ফলে ঈদ যত ঘনিয়ে আসবে, গরুর দাম তত কমবে বলে তারা ধারণা করছেন।

এরই মধ্যে ক্রেতারা অভিযোগ করেছেন, গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে অত্যন্ত বেশি। হাট ঘুরেও তাদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। আসলেও গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে গতবারের চেয়ে (গরুভেদে) ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা বেশি।

হাজারীবাগ পশুর হাটে রংপুর থেকে আসা গরু ব্যবসায়ী মোজাম্মেল জানান, হাটে ক্রেতার ভিড় না থাকলেও যারা আসছেন তাদের চোখ দেশী গরুর দিকেই বেশি। সিরাজগঞ্জের গরু ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম তার বাড়ির সাথেই ছোট একটি খামার গড়ে তোলেন পাঁচটি দেশী গরু নিয়ে। গত ঈদে খামারের গরু বিক্রি করে তিনি বেশ ভাল লাভ করেছিলেন।

এবার তিনি হাজারীবাগ হাটে এনেছেন ২৫টি গরু। তিনি আশা করছেন সবগুলো গরুই তিনি ভালো দাম পাবেন। কিন্তু শেষ সময়ে ভারতীয় গরু ঢুকে ঢুকে গেলে খামারিরা লোকসানে পড়বেন আশঙ্কা করছেন তিনি। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) মতে, দেশী গরু সরবরাহ বেড়ে গেলে আস্তে আস্তে গরুর দাম অনেক কমে যাবে।

এদিকে গত দুদিন থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ার কারণে হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অতিরিক্ত গরমের কারণে কয়েকটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই প্রয়োজন অনুযায়ী, পশুর ডাক্তার প্রস্তুত রাখার দাবি জানান গরু ব্যবসায়ীরা।