জাহাজভাঙা শিল্পের পিতল পাচার রোধে ব্যবস্থা নিতে রিট

জাহাজভাঙা শিল্পের পিতল পাচার রোধে ব্যবস্থা নিতে রিট

নিউজ ডেস্ক: একইসঙ্গে প্রত্যেকটি জাহাজ থেকে প্রাপ্ত পিতলের পরিমাণ নিবন্ধন, জাহাজভাঙা শিল্প-কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ বাধ্যতামূলক না পলিসি গ্রহণ, জাহাজভাঙা শিল্প কারখানায় ১৮ বছরের নিচের কোনো ব্যক্তিকে নিয়োগ প্রদান না করা এবং শিল্প-কারখানার শ্রমিকদের দুর্ঘটনা রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

ইতিপূর্বে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিবাদীদের প্রতি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। অন্যথায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানানো হয়েছিল। কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় পিটিশনটি ফাইল করা হয়েছে।

মানবাধিকার সংগঠন ল’ অ্যান্ড লাইভ ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের পক্ষে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির রিটটি ফাইল করেন।

বাংলাদেশে পিতলের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। এটি দিয়ে তৈরি হচ্ছে দামি আসবাব, বাথরুম ফিটিংস তথা দৈনন্দিন ব্যবহার্য অনেক সামগ্রী। পিতলের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে হাজার হাজার শিল্প প্রতিষ্ঠান। এসবের বড় অংশের জোগান আসে আন্তর্জাতিক দরপত্রে ক্রয়কৃত বিভিন্ন জাহাজ থেকে শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে সংগৃহীত পিতল থেকে। বাকিটা সংগৃহীত হয় স্থানীয়ভাবে।

ভারতে ব্যাপক চাহিদা থাকায় এসব পাচার হচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের পিতল নির্ভর কারখানাগুলোকে বেশি দামে পার্শ্ববর্তী দেশটি এবং অন্য দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। ফলে আমাদের দেশে পিতল সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।

একইসঙ্গে পিতলনির্ভর শিল্পপ্রতিষ্ঠান বন্ধের উপক্রম হচ্ছে। যা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেলছে। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, একটি সিন্ডিকেট নিজেরা লাভবান হয়ে পিতল পাচার করে দেশের ক্ষতি করছে, যা বেআইনি এবং কোনোভাবেই কাম্য নয়।

বাংলাদেশের জাতীয় শিল্পনীতি-২০২২ অনুযায়ী, দেশীয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশ করার কথা বলা হয়েছে। কাজেই দেশীয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশে অবশ্যই জনস্বার্থ রক্ষায় পিতল পাচার বন্ধ করতে হবে।

এছাড়া শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডগুলোতে শিশু শ্রমিক নিয়োগ করা হয়, যা আইনসঙ্গত নয়। জাহাজভাঙা শিল্প কারখানায় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার অপ্রতুলতা এবং নিরাপত্তা সামগ্রীর অভাবে প্রতিবছর বহু সংখ্যক শ্রমিক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে হতাহত হন। যার তেমন কোনো প্রতিকার নেই। আইনে সুস্পষ্টভাবে বাধ্যতামূলক শ্রমিকদের জন্য বীমা করার বিধান থাকলেও সেটা করা হচ্ছে না।

বাণিজ্য সচিব, বাংলাদেশ ট্রেড এবং ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান, এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর চেয়ারম্যান, দুর্নীতি দমন কমিশন, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ ১০ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।