চাকরি আছে, বেতন নাই

চাকরি আছে, বেতন নাই

নিজস্ব প্রতিবেদক: লকডাউন ও সরকারি নানা বিধিনিষেধের কারণে দেশে নতুন করে দরিদ্র শ্রেণির সৃষ্টি হচ্ছে। দীর্ঘসময় সাধারণ ছুটি ঘোষণা দিলে চাকরি, ব্যবসা, উদ্যোক্তাদের কার্যক্রম স্থবির হতে শুরু করে। এরই মধ্যে অনেক শ্রমিক চাকরি হারিয়েছে, বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। তিন বেলা খাওয়ার মতো টাকাও এখন তাদের কাছে নেই।

লকডাউনের শুরু থেকে বাসাবাড়িতে অস্থায়ী কাজের সহযোগী, গৃহকর্মী, গাড়িচালকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। প্রথম মাসে বেতন দিয়ে বিদায় করা হলেও বেশিরভাগের অভিযোগ পরবর্তীতে তাদের কাজে নেওয়া হচ্ছে না। আবার তার যে চাকরিটা নেই সেটাও বলা হচ্ছে না। এক কথায় চাকরি আছে, বেতন নেই। আবারও কখনও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে হয়তো চাকরিটা ফিরে পেলেও পেতে পারেন।

এক জরিপে দেখা গেছে, লকডাউনের প্রভাবে শহরাঞ্চলে কর্মহীন হয়ে পেড়েছে ৮০ শতাংশ মানুষ। গ্রামে এ সংখ্যা ৭৯ শতাংশ। আর নতুন সৃষ্ট দরিদ্র শ্রেণির ৭১ শতাংশ আয় কমে গেছে। এদিকে গত ১ জুন প্রকাশিত এক সমীক্ষায় বলা হয়, দেশের প্রায় ৭৪ শতাংশ পরিবারের উপার্জন কমে গেছে এবং ১৪ লাখেরও বেশি প্রবাসী শ্রমিক চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরে এসেছেন বা ফিরে আসছেন। এক যৌথ সমীক্ষায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।

এক গবেষণায় জানা গেছে, মধ্যবিত্তদের একটি বড় অংশ ঢাকা ছেড়েছেন। তাদের অবস্থা হচ্ছে ‘চাকরি আছে বেতন নাই অথবা ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। শহর ছেড়ে যারা গ্রামে যাচ্ছেন তারা এই ‘চাকরি আছে’ ভেবে অস্থির জীবন যাপন করছেন। শুরু থেকেই তারা গ্রামে যাওয়া আসার মধ্যে আছেন।

তিনি বলেন, ঈদের আগে যখন সবকিছু খুললো, প্রচুর মানুষ ফিরে আসলো। কিছু রয়ে গেছিল বোরো ধান কাটার সময় বলে। যারা ঢাকায় এলো তারা রাস্তার পাশের দোকান খুললো, কিন্তু বিক্রি হলো না। ফলে তারা ঈদের সময় আবারও চলে গেলো। আবার ৫০ লাখের জন্য যে স্কিম সরকার দিচ্ছে সেটা কাউন্সিলরের মাধ্যমে হচ্ছে এবং তিনি ভোটারদের কথা ভেবেই কাজটি এগিয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু ঢাকায় অনানুষ্ঠানিক সেক্টরে কাজ করে যারা তাদের বেশিরভাগই ঢাকার ভোটারই নন। ফলে এই স্কিমে তারা পড়বেন না বুঝে গ্রামে চলে যেতে চেয়েছেন। সবচেয়ে বিপদে পড়েছেন যেসব স্কুল এমপিওভুক্ত নয় এবং শিক্ষকরা বেতন না পাওয়ায় সেগুলো বন্ধ হয়ে গেছে বা হতে বসেছে। যে শ্রেণির মানুষজন সহজে হাত পেতে রাস্তায় দাঁড়াতে পারবে না, তারা গ্রামে ফিরে গেছেন এবং সঞ্চয় থেকে জমি বর্গা নিচ্ছেন। যাদের বর্গা নেওয়ার টাকা নেই, কৃষিশ্রমিক হচ্ছে। ফলে এমন যদি চলতে থাকে আগামী একবছরে আমাদের অর্থনৈতিক কাঠামো পরিবর্তন হবে।