ঘেরের পাড়ে তরমুজ চাষ

ঘেরের পাড়ে তরমুজ চাষ

নিউজ ডেস্ক: বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম খাত হলো চিংড়ি চাষ। আর এই চিংড়ির শতকরা ৮০ ভাগ উৎপন্ন হয় খুলনাঞ্চলের হাজার হাজার মাছের ঘেরে। একই সঙ্গে মিষ্টি পানির ঘেরের পাড়ে শসা, লাউ, টমেটো, কুমড়াসহ নানা প্রকার সবজির চাষ করেন প্রান্তিক কৃষকরা। এবার তরমুজের চাষ শুরু হয়েছে। তাও আবার নোনা জমিতে। খুলনার বঁটিয়াঘাটা উপজেলার কয়েকটি এলাকার ১৫ জন কৃষক অকালে তরমুজের চাষ করে ভালো ফল পেয়েছেন।

খুলনার বঁটিয়াঘাটা উপজেলার একটি গ্রামের নাম বসুরাদ। অনিক এই গ্রামেরই বাসিন্দা। তার এক খণ্ড ঘেরের জমিতে এবার বর্ষা মৌসুমে তরমুজ চাষ করেছেন। ভালো ফল হয়েছে। লাউয়ের মতো তরমুজের ক্ষেত্রেও ঘেরের পাড়ে হাঙ্গি দেওয়া হয়েছে।

গাছে সবুজ ডগায় বাতাসে দুলছে বড় বড় রসাল তরমুজ। ওজনে যাতে ছিঁড়ে পড়তে না পারে সে জন্য নেটের ব্যাগ দিয়ে তরমুজগুলো বেঁধে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি তরমুজ ৫ থেকে ৮ কেজি। খুলনার বাজারে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা প্রতি কেজি। আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। মাছ আর তরমুজ চাষে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।

জানা গেছে, গ্রীষ্মকালীন তরমুজের পাশাপাশি বর্ষাকালীন তরমুজ চাষের প্রযুক্তি কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। গত বছর খুলনা জেলার বঁটিয়াঘাটা উপজেলায় ৩ জন কৃষক প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে তরমুজ চাষ করে সফলতা অর্জন করেন। এ বছর কৃষকের সংখ্যা আরও বেড়েছে। জুন বীজ পবন করে ভালো ফল পেয়েছে কৃষকরা। এ বছর ১৫ জন কৃষক ১৮ হেক্টর জমিতে বর্ষাকালীন তরমুজের চাষ করেছেন। হাইব্রিড নাম্বার ওয়ান ও টপসুইট নামের দুটি জাত চাষ করা হয়েছে।

তরমুজ চাষি বসুরাবাদ গ্রামের শিক্ষার্থী অনিক বলেছে, এবারই আমরা প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে তরমুজের চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। ভালো দামে বিক্রিও করেছি। খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। আর তরমুজ বিক্রি করে পাওয়া গেছে ১ লাখ টাকার মতো। বঁটিয়াঘাটা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা এ ক্ষেত্রে সার্বিক পরামর্শ দেওয়ায় কোনো ক্ষতি হয়নি।

মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের (এসআরডিআই অঙ্গ) পরিচালক বলেছে, ঘেরের পাড়ে এই তরমুজ চাষ করায় বর্ষাকালে সেচের প্রয়োজন হয় না। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পাওয়া যায়। তরমুজ চাষ হতে পারে কৃষকের ভাগ্য উন্নয়নের চাবিকাঠি। ঘেরের পাড়ে তরমুজ চাষ সম্প্রসারিত করা গেলে কৃষিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।