গ্রামীনফোন টাকা না দিলে ব্যবস্থা নেবে বিটিআরসি

গ্রামীনফোন টাকা না দিলে ব্যবস্থা নেবে বিটিআরসি

নিজস্ব প্রতিবেদক: মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন (জিপি) তিন মাসের মধ্যে দুই হাজার কোটি টাকা জমা না দিলে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

সংস্থাটির চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেছেন, সরঞ্জাম ও প্যাকেজের অনুমোদনে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে সুপ্রিম কোর্ট গ্রামীণফোনকে দুই হাজার কোটি টাকা জমা দিতে বলেছে। তারা এটা না দিলে আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

নতুন পদক্ষেপ কি প্রশাসক বসানো হতে পারে-জানতে চাইলে চেয়ারম্যান আরও বলেন, আইনে যেসব ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে, সেগুলোই নেওয়া হবে। এর বাইরে বিটিআরসি যাবে না।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর রমনায় বিটিআরসির কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় সংস্থাটির চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। বিটিআরসির ২০১৮ সালের কার্যক্রম ও নতুন বছরের পরিকল্পনা জানাতে এই সভার আয়োজন করা হয়। এতে গ্রামীণফোনের কাছে পাওনা নিয়েও কথা বলেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, মামলা করতে আমরা যাইনি। মামলা করেছে গ্রামীণফোন।

উল্লেখ্য, মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসি ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা পাওনা দাবি করছে। আর দ্বিতীয় বড় অপারেটর রবি আজিয়াটার কাছে দাবি করা হচ্ছে ৮৬৭ কোটি টাকা। এ পাওনার উৎস প্রতিষ্ঠান দুটিতে বিটিআরসির চালানো নিরীক্ষা। গ্রামীণফোনের ওপর নিরীক্ষা করা হয় ১৯৯৭ থেকে ২০১১ পর্যন্ত। আর রবির ওপর নিরীক্ষা করা হয় ১৯৯৭ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত। বিটিআরসি বলছে, রাজস্ব ভাগাভাগি, করসহ বিভিন্ন খাতে এ টাকা ফাঁকি দিয়েছে অপারেটর দুটি।

অবশ্য শুরু থেকেই গ্রামীণফোন ও রবি নিরীক্ষার দাবির বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করে আসছে। তারা চায়, সালিসের মাধ্যমে পাওনার বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হোক। যদিও বিটিআরসি বলে আসছে, তাদের আইনে সালিসের সুযোগ নেই। পাওনা আদায়ে ব্যান্ডউইথ কমিয়ে দেওয়া, প্যাকেজ ও সরঞ্জাম আমদানির অনুমোদন বন্ধ করার পরও সাড়া না পেয়ে বিটিআরসি অপারেটর দুটিকে লাইসেন্স বাতিলের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। এ নিয়ে আদালতে যায় গ্রামীণফোন ও রবি।

গ্রামীণফোনের আবেদনের পর হাইকোর্ট বিটিআরসির পদক্ষেপের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলো। পরে গত ২৪ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বলেছে, গ্রামীণফোনকে তিন মাসের মধ্যে দুই হাজার কোটি পরিশোধ করতে হবে। নইলে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা বাতিল হবে।

এরই মধ্যে গ্রামীণফোনের বেশির ভাগ শেয়ারের মালিক টেলিনর এশিয়া বিষয়টি নিয়ে সালিস চেয়ে নোটিশ পাঠিয়েছে, যাকে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার রাষ্ট্রপতিকে উকিল নোটিশ হিসেবে উল্লেখ করেছে। অন্যদিকে টেলিনর বলেছে, তারা উকিল নোটিশ নয়, আমন্ত্রণ পাঠিয়েছে।