কোটি টাকা আত্মসাৎ: রূপালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপকসহ তিনজন দন্ডিত

নিউজ নাইন২৪ডটকম, চট্টগ্রাম: রূপালী ব্যাংকের প্রায় কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় ওই ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপকসহ তিনজনকে পাঁচ বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত। একই রায়ে আদালত তাদের প্রত্যেককে ৩০ লাখ ১২ হাজার ৪৬৬ টাকা করে অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদন্ড দিয়েছেন। এছাড়া একই রায়ে আদালত অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় তিনজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার (০১ মার্চ) চট্টগ্রামের বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মীর রহুল আমিন এ রায় দিয়েছেন।

দন্ডিত তিনজন হলেন, রূপালী ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ আমির মার্কেট শাখার ব্যবস্থাপক এ কে এম লুৎফর রহমান, খাতুনগঞ্জের মুসলিম এন্ড ব্রাদার্স নামে একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের কর্মচারি মাহবুবুল ইসলাম এবং নগরীর লালখান বাজারের মেট্রোপলিটন গৃহনির্মাণ সমবায় সমিতির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন। এদের মধ্যে জাকির হোসেন ছাড়া বাকিরা পলাতক আছেন।

খালাস পাওয়া তিনজন হল, রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা আবুল কালাম, আবু কায়সার চৌধুরী এবং এম এ হাশেম। দুর্নীতি দমন কমিশনের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, দন্ডবিধির ৪০৯ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় আদালত তিনজনকে কারাদন্ড দিয়েছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯২ সালের ৪ জুলাই থেকে ৮ সেপ্টেম্বর সময়ের মধ্যে এ কে এম লুৎফর রহমান খাতুনগঞ্জের সোনা মিয়া মার্কেটের ঠিকানা ব্যবহার করে মেসার্স রাসেল এন্ড ব্রাদার্স নামে একটি ভূয়া প্রতিষ্ঠানের নামে রূপালী ব্যাংক থেকে এক কোটি ৬৫ লাখ ১৫ হাজার ৯১৫ টাকা উত্তোলন করেন। খাতুনগঞ্জের মুসলিম এন্ড ব্রাদার্স নামে একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের কর্মচারি মাহবুবুল ইসলাম লুৎফরের সঙ্গে যোগসাজশ করে ব্যাংকের কাগজপত্রে ভূয়া স্বাক্ষর করেন।

উত্তোলনের পর লুৎফর আবার ৭৪ লাখ ৭৮ হাজার ৫১৬ টাকা ৭৯ পয়সা ব্যাংকে জমা দেন। বাকি ৯০ লাখ ৩৭ হাজার ৩৯৮ টাকা আত্মসাৎ করেন।

আত্মসাতের ঘটনা ধামাচাপা দিতে লুৎফর রহমান জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগসাজশে ২৩ লাখ ৬১ হাজার ৬৭৯ টাকা ৫০ পয়সা মূল্যের জমি এক কোটি চার লাখ ৭৯ হাজার ১০০ টাকায় কেনা হয়েছে দেখিয়ে দলিলপত্র ব্যাংকে জমা দেন।

এ ঘটনায় ১৯৯৪ সালের ২৭ আগস্ট জেলা দুর্নীতি দমন ব্যুরোর তৎকালীন সহকারি পরিচালক মুহম্মদ নূরুল ইসলাম বাদি হয়ে কোতয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ১৯৯৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ছয় আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

২০০২ সালের ২১ এপ্রিল আদালত দন্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ৪৬৮, ৪৭১, ১০৯ এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। মামলার বিচার চলাকালীন সময়ে মোট চারজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত।