‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১২ হাজার কোটি টাকার হিসাবে গরমিল’

নিউজ নাইন২৪, ঢাকা: বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়, বেতন ভাতা, ইউটিলিটি বিলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আর্থিক বিধি অনুসরণ না করায় পাঁচ বছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার হিসাবে গরমিল ধরা পড়েছে।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটির বৈঠকে অডিট আপত্তির এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

কমিটি দ্রুত এইসব অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির তাগিদ দিয়েছে।

কমিটির সদস্য আব্দুর রউফ সাংবাদিকদের বলেন, “কমিটি যত দ্রুত সম্ভব অডিট আপত্তি নিষ্পত্তি করতে বলেছে। খুব শিগগিরই মহাহিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক আর আপত্তির সঙ্গে জড়িত পক্ষগুলোর মধ্যে ত্রি-পক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

“পরবর্তী বৈঠকে এ বিষয়টি কতটুকু অগ্রগতি হলো তা জানার পাশাপাশি হল-মার্ক ও বেসিক ব্যাংক কেলেংকারি নিয়েও অগ্রগতি জানতে চাওয়া হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে যথাযথ তদারকি করছে না বলে মনে করছে কমিটি।”

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব নিয়াজ রহমান স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরের অনিষ্পন্ন অডিট আপত্তির তথ্য তুলে ধরা হয়।

এতে বলা হয়, ওই সময়ে অনিষ্পন্ন মোট অডিট আপত্তি রয়েছে ১ হাজার ২৯৪টি। এতে জড়িত মোট অর্থের পরিমাণ ১১ হাজার ৯১৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।

আর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা অধিকাংশ আপত্তি বেতন ভাতা সংক্রান্ত।

অনিষ্পন্ন আপত্তির মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় যেমন- রপ্তানিকৃত পণ্যের মূল্য প্রত্যাবাসন, আমদানির বিপরীতে বিল অব অ্যান্ট্রি বকেয়া থাকা এবং ইনডেন্টিং কমিশনের অর্থ প্রত্যাবাসন ইত্যাদি সংক্রান্ত আপত্তিগুলো বাণিজ্যিক ব্যাংকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

এতে বলা হয়েছে, এইসব আপত্তির অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব বিবরণীতে প্রতিফলিত হয় না।
এদিকে বৈঠকে কমিটি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে সাম্প্রতিক সময়ে চুরি হওয়া অর্থ ফেরত নিয়ে আসা এবং ভবিষ্যতে যেন এই ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে।

এখন পর্যন্ত এঘটনায় জড়িত কোন হ্যাকার চিহ্নিত না হওয়ায় অসন্তোষও প্রকাশ করে কমিটির সদস্যরা।
বিষয়টিকে দায়িত্বে অবহেলা হিসাবে উল্লেখ করে কমিটি জানিয়েছে, তারা সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিনিধি দল, সুইফট আর ফেডারেল ব্যাংকের যৌথ বৈঠকের ফলাফল জানার অপেক্ষায় রয়েছে।

এছাড়া এখন পর্যন্ত কোন হ্যাকার চূড়ান্তভাবে চিহ্নিত না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে কমিটি।

কমিটির সভাপতি শওকত আলীর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মো. আব্দুল কুদ্দুস, মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভূঁইয়া, হাবিবর রহমান, আব্দুল ওদুদ, আব্দুর রউফ এবং নাভানা আক্তার অংশ নেন।